বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | রাজনীতি | শিরোনাম » যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তারা কীভাবে জনগণের পাশে থাকবে-প্রধানমন্ত্রী
যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তারা কীভাবে জনগণের পাশে থাকবে-প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধঃ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের জনসভায় বলেছেন, ‘যারা দেশের উন্নয়ন না করে সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, লুট করেছে এবং জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তারা কীভাবে জনগণের পাশে থাকবে। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে এদেশের মানুষকে কিছু দেয়নি বরং জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে এদেশে অগ্নিকাণ্ড, মানি লন্ডারিং, চাঁদাবাজি, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য এ দেশের প্রতিটি অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন এবং মানুষের মঙ্গল করা।’
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমের টাকা মেরে খাওয়া ও বিদেশে সম্পদ পাচারই ছিল খালেদা-তারেকের কাজ। তারা দেশের শান্তি চায় না। অস্ত্র মামলায় এখনো তাদের একজন সাজা ভোগ করছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড বোমা হামলা ঘটিয়েছে ওরা। তারা জ্বালাও-পোড়াও ছাড়া কিছুই পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এই কক্সবাজার বঙ্গবন্ধুর খুবই প্রিয় একটি জায়গা। প্রতিবছর তিনি আমাদের এখানে বেড়াতে নিয়ে আসতেন। জাতির জনকের সঙ্গে এখানকার অনেক স্মৃতি জড়িত। বিএনপি-জামায়াত কখনো কক্সবাজারের উন্নয়ন চায়নি। তারা এখানে কিছুই করেনি। ৭৫-এ মা বাবাকে হারিয়ে এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমার সংগ্রাম শুরু হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কক্সবাজারে একে একে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ বয়েই চলছে। আমি আজ ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। চলমান রয়েছে আরো অনেক প্রকল্প।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যারা আমাদের প্রতি আস্থা রেখে নৌকায় ভোট দিয়েছেন তাদের বিশ্বাস আমরা বৃথা যেতে দেয়নি। কক্সবাজারের প্রতিটি অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি। কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ার ব্যবস্থা চলছে। এখানকার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সমুদ্রের পানি ছুঁয়ে নামতে পারবে। এছাড়া জলবায়ু উদ্বাস্তুসহ দুস্থ মানুষের আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু তা নয়, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার জন্য কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে এখানে।’২৮ মিনিটের ভাষণে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে ঘুমধুম রেললাইনের ব্যবস্থা করেছি আমরা। এখানে আগে প্রচুর চিংড়ি উৎপাদন হতো কিন্তু কালের বিবর্তনে তা কমে যাওয়ায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চিংড়ি উৎপাদন প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোলো না। তারা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে পায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। তাই বলবো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিন। সেবা করার সুযোগ দিন। যতদিন বেঁচে আছি, দেশের জন্য কাজ করে যাব।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা আছে বলে আমরা ভালো আছি। করোনা পরিস্থিতির সময় ভেকসিনসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পেরেছি। শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মুদ্রাস্ফীতি কমে যাচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের দামও কমতে শুরু করবে দ্রুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংকট কোথাও নেই। গভীর রাতেও ঘরে বসে অনায়সে কাতার বিশ্বকাপের খেলা দেখতে পারছেন এ দেশের মানুষ। কাতারের মাঠে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ড, পর্তুগাল-মরক্কো এবং ব্রাজিল যেমন ফুটবল খেলছে, ঠিক তেমনি আমরাও বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিকাণ্ডের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলবো।’
পদ্মা সেতু, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলসহ বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অন্তরে জ্বালা শুরু হয়েছে বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমানসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।