রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ
বিবিসি২৪নিউজ,শহীদ শিকদার,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ দেশে আগস্ট মাসের শুরু থেকে সবজি বিক্রি হয়েছে চড়া মূল্যে। এমনকি ২০ থেকে ৭০ শতাংশের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে বিভিন্ন সবজি। নতুন সবজি বাজারে আসার পর দাম কমবে— এমন আভাসও দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। শীতের মৌসুম শুরু হতে আর মাসখানেক বাকি। এর মধ্যেই ভারতীয় নতুন আলু বাজারে এসে গেছে। তবে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি নতুন আলুর জন্য ১৬০ টাকা গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
শনিবার সরেজমিনে রাজধানীর হাতিরপুল, কলাবাগানসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিম, পেঁপে, মূলা, পটল আগের চেয়ে কিছুটা দাম কমলেও এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় নতুন আলু।
এক সপ্তাহ ব্যবধানে সবজি ১০ থেকে ৩০ শতাংশ দাম কমেছে। শিমের কেজি ১১০ থেকে ৫০ টাকা কমে ৬০ টাকা, টমেটো প্রতিকেজি ১৪০ থেকে ৪০ টাকা কমে ১০০ টাকা, শসার কেজি ৮০ থেকে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা, মূলা কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ২০ টাকা কমে ৩০ টাকা, পটল প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৩০ টাকা কমে ৩০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৩০ টাকা কমে ৪০ টাকা, গোল বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৬০ থেকে ২০ টাকা কমে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি ৬০ থেকে ২০ টাকা কমে ৪০ টাকা, কাঁচকলা হালি প্রতি ৩০ থেকে ১০ টাকা কমে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, গাজর প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, বগুড়ার লাল আলুর কেজি ৪০ টাকা, দেশি আলুর প্রতিকেজি ৩০ টাকা, লতা প্রতিকেজি ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, ঝিঙা কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা কেজি প্রতি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁঢ়স ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারের ক্রেতা রোকসানা আক্তার বলেন, গরীবের নতুন আলু কেন ১৬০ টাকা! এর ব্যাখ্যা দেবে কে? সবজির মধ্যে নতুন আলু অতিরিক্ত দাম কেন? ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চাই- আলু এতো দাম কেন? তারা বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখায়।
রোকসানা আক্তার বলেন, শীতের সময় সবজি অনেক কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর তা আর হচ্ছে না। শীতের সবজি কেজিপ্রতি মাত্র ৫/১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. হৃদয় বলেন, খুব বেশি কমেনি সবজির দাম। শীত পড়তে শুরু করলেও এখনও বেশিরভাগ সবজির দাম আগের মতোই রয়ে গেছে।
মগবাজারের দিলু রোড এলাকার ক্রেতা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, বাজারে নতুন আলু ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু এতো টাকা হওয়ার কারণ কী?
দিলু রোড এলাকার সবজি বিক্রেতা মোতালেব মিয়া বলেন, কয়েকমাস ধরে যেমন চড়া দামে সবজি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। তবে আলু ১৫ দিন আগেও ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ১৬০ টাকায় বিক্রি করছি।
মোতালেব মিয়া বলেন, ইন্ডিয়ান নতুন আলুর দাম অতিরিক্ত তা আমরা ব্যবসায়ীরা জানি। কিন্তু কিছু করার নেই। এক হাত হয়ে আসে না। বিভিন্ন হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
মোতালেব বলেন, ইন্ডিয়ার একজন কৃষক যদি ২০ টাকা প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি করে। সেই ২০ টাকার আলু রাজধানী আসতে আসতে ১০ গুণ বেড়ে যায়।
নাহিদ মিয়া নামে একজন ক্রেতা বলেন, গরিবের ভরসা আলু। শীতে নতুন আলুর মজাই আলাদা। কিন্তু আমাদের মতো মানুষের কল্পনার বাইরে চলে গেছে নতুন আলু। এক কেজি আলু ১৬০ টাকা! ভাবতেও কষ্ট লাগে। শীতে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও বেশি দেমেই বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা যা মন চায় তাই করছে। ওরা শক্তিশালী সিন্ডিকেট, ওরা যা করতে চায় তাই করে। আমার মনে হচ্ছে বাজারে যে পণ্যের দাম বেড়ে যায় সেই পণ্য না কিনলে ব্যবসায়ীরা লোকসানের অনেক বড় ধাক্কা খাবে।