মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করলেন সুনাক
ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করলেন সুনাক
বিবিসি২৪নিউজ,রুপা শামীমা লন্ডন থেকেঃ ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেছেন ঋষি সুনাক।এই প্রথম কোনো অশ্বেতাঙ্গ এবং অভিবাসী পরিবারের সন্তান ব্রিটেনের প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী হলেন।
সোমবার ঋষি সুনাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হবার পর আজ বাকিংহ্যাম প্রাসাদে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস । এর আগে গত সপ্তাহে এমপিদের অনাস্থার মুখে পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
আজ লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম ভাষণে মি. সুনাক আস্থা ও স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন।
তিনি সতর্ক করে দেন যে ব্রিটেন এখন এক “গভীর অর্থনৈতিক সংকটের” সম্মুখীন এবং তার পূর্বসুরীর কিছু ভুল তার সরকারকে সংশোধন করতে হবে এবং এ জন্য “কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত” নিতে হবে।তবে ব্রিটেনের বিরোধীদলগুলো ইতোমধ্যে নতুন সাধারণ নির্বাচন দেবার যে দাবি জানিয়েছে তা ঋষি সুনাক প্রত্যাখ্যান করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা পৃথক পৃথক বার্তায় ঋষি সুনাককে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ব্রিটেনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের আশা নেই”, বলছে রাশিয়া
ইউক্রেনের জন্য সাহায্য অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সুনাক। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিনের কারণে সারা বিশ্বের জ্বালানির বাজার এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ক্রেমলিন বলছে, মি. সুনাকের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ব্রিটেনের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের কোন সম্ভাবনা নেই।
তবে চীন বলেছে ব্রিটেনের সাথে সম্পর্ক ভালো হওয়া সম্ভব বলে তারা আশা করে - যদিও এর আগে চীনকে মি. সুনাক ব্রিটেনের নিরাপত্তার জন্য এক নম্বর হুমকি বলে বর্ণনা করেছিলেন।
মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন
মি. সুনাকের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম এখন প্রকাশ করা হচ্ছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভার সদস্যরাই বহাল আছেন।
অর্থমন্ত্রী পদে জেরেমি হান্টই থাকছেন, তা ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে জেমস ক্লেভারলি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে সুয়েলা ব্রাভারম্যান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসও বহাল আছেন।
তবে লিজ ট্রাসের মন্ত্রীসভার অন্য অনেক সদস্যই ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন এবং তাদের জায়গায় নতুন মন্ত্রী নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে।ঋষি সুনাক এমন এসময় প্রধানমন্ত্রী হলেন যখন ব্রিটেন কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যায় আক্রান্ত। স্থবির প্রবৃদ্ধি, ১০ শতাংশের বেশি মৃদ্রাস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড মহামারি ও ব্রেক্সিটের কারণে ব্রিটেনের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সরকারের অস্থিতিশীলতা।
এ কারণে লেবার পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিসহ ব্রিটেনের বিরোধীদলগুলো বলছে, ব্রিটেনের সমস্যার সমাধান প্রধানমন্ত্রী বদল করে হবে না, তারা দাবি করছেন নতুন সাধারণ নির্বাচন ।
তবে অনেকেই বলছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একজন অশ্বেতাঙ্গ এবং অভিবাসী পরিবারের সন্তান মি. সুনাকের নির্বাচন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ব্রিটেনের সমাজ এবং রাজনীতিতে এক মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।