রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২
প্রথম পাতা » এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | খেলাধুলা | শিরোনাম | সাবলিড » টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ পাকিস্তানকে পরাস্ত করল ভারত
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ পাকিস্তানকে পরাস্ত করল ভারত
বিবিসি২৪নিউজ, স্পোর্টস ডেস্কঃ ভারত পাকিস্তানকে ‘টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় ম্যাচে’ হারিয়ে দিল।ভিরাট কোহলির অসাধারণ এক ইনিংসে শেষ ওভারে টানটান উত্তেজনার মধ্যে মোহাম্মদ নাওয়াজ বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই হার্দিক পান্ডিয়াকে প্যাভিলিয়নে পাঠান।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুটি ওয়াইড বল দেন নাওয়াজ, শেষ বলে সহজেই চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন রাভিচান্দ্রান আশ্বিন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত এই ম্যাচটিতে ৯০,২৯৩ দর্শকের সামনে জমজমাট এই ম্যাচ জিতে নিলো ভারত।
পাকিস্তানের করা ১৫৯ রান, একদম শেষ বলে গিয়ে অতিক্রম করে ভারত। চার উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত।
ভারতের সাংবাদিক জয় ভট্টাচার্য লিখেছেন, “যাই হোক না কেন, ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ম্যাচ এটি।”
ভারতের জন্য দিওয়ালির আনন্দ বাড়িয়ে দিলেন যেন ভিরাট কোহলি।ভিরাট কোহলি একাই পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছেন
পাকিস্তানের ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদ ম্যাচ শেষে টুইট করেছেন ভিরাট কোহলি পুরো খেলা মেপে মেপে খেলে রান তাড়া করেছেন।
৫৩ বলে অপরাজিত এই ৮২ রানের ইনিংসটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে মানুষ বহুদিন মনে রাখবে।
একটা সময় ৮ বলে ২৮ রান প্রয়োজন ছিল, কোহলি ঠিক তখন হারিস রওফের দুই বলে দুটি ছক্কা মেরে ১৬ রানে নামিয়ে আনেন প্রয়োজনীয় রান।
এখানেই মূলত পাকিস্তানের হাত থেকে ম্যাচটা বেরিয়ে যায়।
কোহলি ম্যাচশেষে নিজেই বলেছেন এটা তার জীবনে খেলা সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস।
“যে কয় মাস আমি ভুগেছি, আপনারা- সমর্থকরা পাশে ছিলেন, আমাকে চালিয়ে নিয়ে গেছেন। ধন্যবাদ সবাইকে।”
আজ ভিরাট কোহলি কেঁদে ফেলেন ম্যাচ শেষে।
ক্রিকেট উপস্থাপক হারশা ভোগলে টুইটারে লিখেছেন, “কোহলিকে কত বছর ধরে দেখছি। এই প্রথম ওর চোখে অশ্রু দেখলাম। এটা ভোলার নয়।”খেলার মোড় ঘুরলো যে ওভারে
মাজহার আরশাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে পাকিস্তানের স্পিনে আট ওভার কেমন করে এটা দেখার বিষয় হবে। ভারত নিশ্চিতভাবেই এই আট ওভার কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।
সেটাই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। নাওয়াজের এক ওভারে তিনটি ছক্কায় রান এসেছিল ২০।
১৩তম ওভারেই মূলত খেলার গতিপথ বদলে যায় মেলবোর্নে।
ভিরাট কোহলির সাথে হার্দিক পান্ডিয়া ওই সময় থেকেই ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন কোনও ঝুঁকি না নিয়ে।
পাকিস্তানের ক্রিকেট সাংবাদিক সাজ সাদিক একটি টুইটে লিখেছেন, “বাবর আজমের বড় ভুল হয়ে গেছে শেষ ওভারটি নাওয়াজের জন্য রাখা।”
ক্রিকেট লেখক বোরিয়া মজুমদার লিখেছেন, “এটা পাকিস্তানের একটা ধ্রুপদী (চোক) ভেঙ্গে পড়া।”
তবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ব্র্যাড হগ, ২০তম ওভারে একটি নো-বল নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন।
“কেন নো বলটি পুনরায় বিবেচনা করা হলো না? কেন কোহলি বোল্ড হওয়ার পর বলটি ডেড হয়নি?” এই প্রশ্ন করেছেন তিনি টুইটারে।নিয়ন্ত্রণে থেকেও পাকিস্তানের ফাস্ট বোলাররা খেই হারিয়েছেন
পাকিস্তানের বিপক্ষে চার ইনিংসে লোকেশ রাহুলের গড় ৮.৭৫। এতেই বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের ফাস্ট বোলারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
আজও দৃষ্টিকটু এক শট খেলে তিনি আউট হয়েছেন নাসিম শাহ’র বলে।
নাসিম শাহ এর আগেও লোকেশ রাহুলকে বোল্ড করে দিয়েছিলেন।
দারুণ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের টপ ফাস্ট বোলাররা ৩০ এর বেশি রান দিয়েছেন।
একমাত্র নাসিম ২৩ রানে চার ওভার শেষ করেছেন।
শাহীন শাহ দিয়েছেন ৩৪ রান। শাহীন পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি চার হজম করেছেন।
হারিস রওফ দিয়েছেন ৩৬ রান।
এই ফাস্ট বোলাররাই প্রথম দশ ওভারে মাঠে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল কিন্তু শেষ দশ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া ও ভিরাট কোহলি ম্যাচ বের করে নেন।পাকিস্তান ও ভারতের টপ অর্ডার ব্যর্থতা
হারশা ভোগলে টুইটারে লিখেছেন, “১৪ রানে পাকিস্তানের এক উইকেট পড়ে যাওয়া সৌভাগ্যের, এটা আপনি খুব কমই বলতে পারবেন।”
বাবর আজম কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন আরশদীপ সিংয়ের বলে।
এরপর ১২ বল খেলে মাত্র চার রান করে ক্যাচ তুলে আউট হয়ে গেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
ভারতেরও টপ অর্ডারও খুব ভালো করতে পারেনি।
লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মা দুজনই চার রান করে আউট হয়ে যান।
সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ করেন ১০ বলে ১৫ রান।
ভারত ৩১ রানের মাথায় চার উইকেট হারিয়ে ফেলে।
সেখান থেকে ফিরে ভারতের এমন জয় সত্যিই মনে রাখার মতো।
ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদ এটাই বলছেন, “দুই মাসের মাথায় ভারত ও পাকিস্তানের তিনটা ধামাকাময় ম্যাচ। ক্রিকেট সত্যিই অসম্ভব সুন্দর।”