বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » আইন-আদালত | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » সরকারি চাকুরিজীবিদের গ্রেপ্তারে অনুমতি লাগবে না : হাইকোর্ট
সরকারি চাকুরিজীবিদের গ্রেপ্তারে অনুমতি লাগবে না : হাইকোর্ট
বিবিসি২৪নিউজ,আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়া সংক্রান্ত সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪১(১) ধারা বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়, সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে অনুমতি লাগবে না, জানান আইনজীবী। এর আগে গতকাল এ বিষয়ে শুনানি হয়। সেখানে ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতির বিধান রেখে তিন বছর আগে কার্যকর হওয়া সরকারি কর্মচারী আইন নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। এমন বিধানের মানে হচ্ছে, বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে দায়মুক্তি দেওয়া। শুধু তা-ই নয়, এমন বিধান দুর্নীতিতে আরো উৎসাহ জোগাবে বলেও মন্তব্য করেন আদলত। ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধানের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানির সময় উচ্চ আদালত এ মন্তব্য করেন। শুনানি শেষে শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন রাখেন।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক গেজেটে বলা হয় ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হবে। আইনের ৪১(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে। ’
পরে আইনের এ ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট আবেদনে করা হয়। পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে এই রিট আবেদনটি করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল করা হবে না এবং এ ধারা সংবিধানের ২৬(১) (২),২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারায় এমন বিধান রাখা হয়েছি। পরে তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করলে আদালত ওই ধারাটি বাতিল করেছিলেন। যদিও সরকার এখনো তা আইন থেকে বাদ দেয়নি। তখন আদলত একে ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন। শুনানিতে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খানও দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা বাতিলের রায়টি আদালতের কাছে তুলে ধরেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় আপিল বিভাগের একটি রায় তুলে ধরে বলেন, আইনটি সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য করা হয়েছে। আইনটিতে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করেনি। সব সরকারি কর্মচারী বেলায় এ বিধান প্রযোজ্য।
তখন আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আইন করার ক্ষেত্রে সরকার কিভাবে বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে দায়মুক্তি দেয়! এতে তো দুর্নীতিতে আরো উৎসাহ জোগাবে। ’সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ এর এসংক্রান্ত ধারা ৪১(১) ও ৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করা রিটে জারি করা আরেকটি রুল হাইকোর্টে বিচারাধীন। কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের রিট আবেদনে গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর এ রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।