রবিবার, ১৪ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | শিরোনাম | সাবলিড » মিশরে গির্জায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪১
মিশরে গির্জায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪১
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিশরের একটি গির্জায় আগুন লেগে কমপক্ষে ৪১ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে সেদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে আরো ৪০ জনের মতো আহত হয়েছে।কয়েক হাজার লোকের অংশগ্রহণে এক প্রার্থনার সময় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে গির্জার প্রায় পুরোটাই পুড়ে গেছে।নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে বলেও কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
তারা বলছেন রাজধানী কায়রোর উত্তর-পশ্চিমে গিজা শহরের ইমবাবা এলাকায়, যেখানে মূলত শ্রমজীবী মানুষেরা বাস করেন, সেখানে আবু সেইফেন নামের একটি কপটিক গির্জায় রোববারের প্রার্থনার সময় সেখানে আগুন লেগে যায়।
কর্মকর্তারা বলছেন এই প্রার্থনায় পাঁচ হাজারের মতো লোক যোগ দিয়েছিলেন।
আগুন কেন লেগেছে তার কারণ এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
ওই এলাকায় কাছেরই আরেকটি গির্জার ফাদার ফরিদ ফাহমি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ওখানে বিদ্যুৎ ছিল না, ফলে জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছিল এবং যখন বিদ্যুৎ ফিরে আসে তখনই আগুন ধরে যায়।
একজন উপাসনাকারী ইয়াসির মুনির বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন যে লোকজন যখন গির্জার তৃতীয় এবং চতুর্থ তলায় জড়ো হচ্ছিল তখন তারা দ্বিতীয় তলা থেকে আগুন বের হতে দেখেন। এর পর লোকজন সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নিচে নামতে শুরু করে এবং একজন আরেকজনের ওপর পড়ে যেতে শুরু করে।
তিনি নিজে এবং তার এক মেয়েও গির্জার নিচতলায় ছিলেন এবং তারা সেখান থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে যে অগ্নিকাণ্ডের কারণে গির্জায় প্রবেশের যে পথ ছিল সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন লোকজন হুড়োহুড়ি করতে শুরু করলে সেখানে পদদলিত হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সময় সকাল ন’টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়েই দমকল বাহিনীর ১৫টি ইঞ্জিন সেখানে ছুটে যায় আগুন নেভানোর জন্য। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন উদ্ধারকাজ চালাতে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীকে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। মি. আল-সিসি নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, “নিরীহ এসব লোকজন, যারা তাদেরই উপাসনালয়ে এভাবে মারা গেছেন, তাদের ও তাদের পরিবারের প্রতি আমি আন্তরিক শোক প্রকাশ করছি।”
মিশরের প্রসিকিউটরদের অফিস থেকে বলা হয়েছে যে দুর্ঘটনাস্থলে একটি টিম পাঠানো হয়েছে। তারা তদন্ত করে দেখছেন কী কারণে আগুন লেগেছে।মিশরে প্রায় এক কোটি কপটিক খ্রিস্টান বসবাস করেন যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় দশভাগের একভাগ।
এই সম্প্রদায়ের লোকেরা এর আগে বেশ কয়েকবার ইসলামপন্থীদের হামলার শিকার হয়েছেন এবং তাদের বহু গির্জা ও বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।