শুক্রবার, ৫ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | রাজনীতি | শিরোনাম | সাবলিড » শেখ কামাল বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন-প্রধানমন্ত্রী
শেখ কামাল বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন-প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ দেশের যুবসমাজকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চাসহ সমাজসেবায় আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যখনই সরকারে এসেছি চেষ্টা করেছি দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক জগৎকে উন্নত করতে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চার জগতে সম্পৃক্ত থাকেন তাদের কারও কারও জীবন একটা সময় খুব দুর্বিষহ হয়ে যায়। শেখ কামালই প্রথম ক্রীড়া জগতে সম্পৃক্তদের সহযোগিতার জন্য ফান্ড গঠন করেছিল। আমি সরকারে আসার পর তাদের জন্য বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে দিয়েছি, সিড মানি দিয়েছি এবং আরও ফান্ড জোগাড় করে দেবো যেনও তাদেরকে আর কষ্ট করতে না হয়।
‘একটা বয়স আসলে তাদের আর অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকে না, সেটা যেন না হয় আমরা ব্যবস্থা নেব। খেলোয়াড়দের জন্য যেমন কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়েছে, সাংস্কৃতিক জগতের জন্যও আমরা করে দিয়েছি। শিল্প-সংস্কৃতির জগতের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের জন্য ট্রাস্ট ফান্ড করে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। কাজেই যেকোনও আপদকালীন সময়ে তারা যেন চিকিৎসা বা অন্যকোনও সহযোগিতা পায় এই চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল যে নীতি, আদর্শ, কর্মপন্থা, দিক-নির্দেশনা রেখে গেছেন, আমি মনে করি তা অনুসরণ করে আমাদের শিশু ও যুব সমাজ নিজেদেরকে গড়ে তুলবে। শুধু নিজের দেশের জন্য না, মেধা-মনন বিকশিত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যেনও আমরা বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারি সেভাবে আমাদের ছেলেমেয়েরা কাজ করবে- সেটাই আমি চাই।
তিনি বলেন, আজকে কামাল আমাদের মাঝে নেই, আধুনিক ফুটবল খেলা এবং আবাহনী ক্রীড়া চক্র গড়ে তোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলাধুলায় শিশু থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে কামাল। পাশাপাশি সংগীত চর্চায় স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করে বিভিন্ন দেশীয় গানকে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রে তুলে তাকে জনপ্রিয় করার কাজটিও সে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে গেছে। কেননা বহুমুখী প্রতিভা নিয়েই জন্মেছিলেন শেখ কামাল।প্রধানমন্ত্রী স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, বাসার ছাদে তাঁর সঙ্গীত দলের এই অনুশীলন চলতো যেখানে ফিরোজ সাঁই, ফেরদৌস ওয়াহিদ, নাসিরউদ্দিনসহ অনেকেই আসতো।
জাতির পিতা হত্যার ৬ বছর পর দেশের ফিরতে সক্ষম হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের জাতির পিতার বাড়িটিকে তিনি মিউজিয়াম করলে সেখানে ফিরোজ সাঁই কামালের অর্গান, যেটি দিয়ে তিনি গান তুলতেন সেটি দিয়ে যায়। তাঁর সেই অর্গান এবং কামালের ‘সেতার’টি তিনি সেখানেই রেখে দিয়েছেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ কামাল সেনাবাহিনীতে কমিশন পেলেও যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান শ্রেণীর লেখাপড়া তখনও শেষ হয়নি তাই মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণের জন্য সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু মাস্টার্সের রেজাল্ট প্রকাশিত হবার আগেই না ফেরার দেশে চলে যায়।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ এবং স্পন্দন শিল্প গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাজী হাবলু স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত ‘এক আলোর পথের যাত্রী’ শীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী পরে শেখ কামালকে নিয়ে রচিত ’বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল আলোকিত তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক সচিত্র স্মারক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজয়ীদের দেখে আমাদের আরও বেশি সংখ্যক ছেলেমেয়ে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় ঝুকবে বলে আশা করি।