শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালু করতে সম্মত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালু করতে সম্মত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
বিবিসি২৪নিউজ,মো.সুমন মিয়া :যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ ঢাকা ও নিউইয়র্কের মধ্যে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপে গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরে আয়োজিত দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এ আহ্বান জানানো হয়। পুনরায় ফ্লাইট চালুর জন্য একযোগে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ আলোচনায় পারস্পরিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি এবং যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি এবং পরিবেশবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ আলোচনায় কো-চেয়ার ছিলেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমপি, বেগম শামসুন নাহার এমপি, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. সহিদুল ইসলামসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংলাপে অংশ নেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও অ্যাম্বাসেডর কেলি কেইডারলিং, অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টোফার উইলসন, শ্রম বিভাগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি এবং সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস উইং জানিয়েছে, আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের অগ্রাধিকার প্রবেশ, পণ্য উৎপাদন এবং টেকনোলজি ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে অধিকতর বিনিয়োগ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (ডিএফসি) অর্থায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য একক অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশের বিপুল ফ্রি-ল্যান্সারদের সুবিধা গ্রহণ করে হাইটেক পার্কে বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতির ধারাবাহিকতাকে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির মূল কারণ হিসেবে বলে চিহ্নিত করেন। আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কোভিড-১৯ টিকাদানে চমকপ্রদ সাফল্যের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের শ্রমখাতে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শ্রম বিষয়ে দুই দেশের যুক্ত থাকার জন্য একটি নিয়মিত আলোচনার (কনসাল্টেশন মেকানিজম) প্রস্তাব করেন। শ্রম বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পাউটিআইনেন শ্রম খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেন।
এএফএল-সিআইও গ্লোবাল ওয়ার্কার্স রাইটস কো-অর্ডিনেটর লরা গুতিরেজ, সলিডারিটি সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক শনা বাদের-ব্লাউ এবং বাংলাদেশের শ্রমিক প্রতিনিধি কাজী রহিমা আক্তার আলোচনার এই পর্বে উপস্থিত ছিলেন। উভয়পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য শক্তি, সমুদ্র এবং সুনীল অর্থনীতি, কোভিড-১৯, পর্যটন ও হসপিটালিটি এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের বিষয়ে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে একমত পোষণ করেন নেতৃবৃন্দ। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়া ২০২৩ সালে ঢাকায় সুবিধাজনক সময়ে তৃতীয় অর্থনৈতিক সংলাপ আয়োজন করতে সম্মত হয় দুই দেশ। বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়।