রবিবার, ৫ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে কাজ করছে সেনাবাহিনী
সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে কাজ করছে সেনাবাহিনী
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি একটি কনটেইনার ডিপোতে ছড়িয়ে পড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ডিপোর রাসায়নিক যাতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহনাজ সুলতানা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাসায়নিক যাতে সবদিকে ছড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্য কাজ করছেন।
আশপাশে কোনো নালা আছে কি না, তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে। এসব রাসায়নিক যাতে সমুদ্রে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ৫০০ মিটারের একটি টিন শেডের ভেতর মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিক। এ ছাড়া আমদানি-রফতানি করা বিভিন্ন পণ্যও এ ডিপোতে রাখা হতো।
শনিবার রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। তখন হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বাইরে ছড়িয়ে যায়।
আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জন হয়েছে। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন কর্মী রয়েছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত যাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, তারা হলেন কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট থানার সাতবাড়িয়া এলাকার শামসুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩২), বাঁশাখালীর চনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের ফরিদুল আলমের ছেলে মমিনুল হক, (২৪), একই উপজেলার পূর্ব চারিয়ার নাপুরা এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২৪), হাসান আলীর ছেলে জোবায়ের আহমেদ (২২), চনপাড়ার এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে রবিউল আলম (১৯), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬)। তোফায়েল আহমেদ (২২), তার বাড়ির ঠিকানা জানা যায়নি।
এর মধ্যে মনিরুজ্জামান কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যান্টেনডেন্টস, আর মো. আলাউদ্দীন ফায়ার সার্ভিসের কম্পিউটার অপারেটর।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক।
তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও আছেন।
এদিকে এই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ রবিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সূত্র।
এই ভয়াবহ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার এক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। সেইসঙ্গে তিনি আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৩ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। আজ রবিবার সংবাদমাদ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, দগ্ধ ৩ জনকে আজ সকালে আনা হয়েছে। তাদের শরীরের ১৪-১৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ৩ জনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এ কারণে জরুরিভিত্তিতে তাদের আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। এখন তাদের আইসিইউতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ’ তারা হলেন শিল্প পুলিশের উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান, স্থানীয় বাসিন্দা খালেদুর রহমান এবং ডিপোর সিকিউরিটি ইনচার্জ মাকফারুল ইসলাম।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতে আগুন লাগার পর রাত পৌনে ১১টার দিকে বিস্ফোরণে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৪ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।