নিউইয়র্কে জমে উঠেছে জমজমাট ঈদ বাজার
বিবিসি২৪নিউজ, মো.সুমন মিয়া (নিউইয়র্ক) যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসবের দিন ঈদুল ফিতর। বিগত দু’বছর পর ফ্যাশন শপগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় জমে উঠেছে ঈদের জমজমাট বাজার। রমজানের একমাস সিয়াম সাধনার পর সবাই অপেক্ষায় থাকেন এই দিনটির জন্য। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১মে রোববার অথবা ২ মে সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। বিগত দু’বছর করোনা মহামারির কারণে যেমন জমে উঠতে পারেনি ঈদের বাজার। তেমনি মানুষ উপভোগ করতে পারেনি ঈদের আনন্দ। বিগত দু’বছর পর এবার নূতন স্বাভাবিকতায় ঘরে ঘরে চলছে ঈদের প্রস্তুতি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের মূল্য বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত শ্রেনীতে একধরণের টানা পোড়েন চললেও থেমে নেই ঈদের কেনাকাটা। বিশেষ করে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ এলেই বাজার সয়লাব হয়ে যায় নূতন ডিজাইন ও ফ্যাশনের পোষাকে। নূতন পোষাক ছাড়া এখন ঈদের আনন্দ কোনভাবেই পুরো হয় না। তাই রমজানের শুরুতেই জমে উঠে ফ্যাশন শপগুলো। এবারো ঈদকে সামনে রেখে নিউইয়র্কের ফ্যাশন শপগুলো হাল ফ্যাশনের পোষাকে সজ্জিত হয়ে উঠেছে। ক্রমেই ফ্যাশন শপগুলোতে জমে উঠেছে ক্রেতাদের ভীড়। জ্যামইকার হিলসাইডে আল-হামরার কালেকশন ও জ্যাকসন হাইটসে কারুসুরমা ফ্যাশন শপে ঈদের প্রচুর কেনাকাটা হচ্ছে ।
নিউইয়র্কের সর্বত্র মুসলিম কমিউনিটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করছে সিয়াম সাধনা। মুসলিম পরিবারের সদস্য বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের জন্য হাল ফ্যাশনের ঈদের পোষাক কেনা আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির একটি অংশ। মহিলাদের শাড়ী, সালোয়ার কামিজ, কুর্তার পাশাপাশি পুরুষরাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে থাকে না। ঈদে নুতন পাঞ্জাবী-পাজামা সহ আধুনিক নূতন পোষাকের দিকে ঝোঁক রয়েছে তাদের। তারপরও কমবেশী সকলেই চান সাধ্যমতো ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। এবারো নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটি এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ফ্যাশন হাউজগুলো এই চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে তাদের পশরা সাজিয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বড় ধরণের ব্যবসা করার জন্য তারা রমজানের শুরুতেই প্রস্তুতি নিতে থাকেন। হাল ফ্যাশনের ঈদের পোশাক তারা আমদানি করেন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান থেকে। ক্রেতারাও অপেক্ষা করে পোশাকের নতুন কালেকশনের জন্য। অনেকে আবার নিজ দেশ থেকেও আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে পোষাক-পরিচ্ছদ আনিয়ে রেখেছেন। ঈদের বাজার সম্পর্কে বিবিসি নিউজ ২৪ কথা বলে কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ এবং ফ্যাশন শপগুলোর মালিকদের সাথে। ক্রেতা ও বিক্রয়ের প্রতিষ্ঠান শপগুলো জানিয়েছেন জ্যাকসন হাইটসে উপমহাদেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোষাকের স্টোরগুলোর মতো সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা, জ্যামাইকা, এস্টোরিয়া, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কসেও গড়ে উঠেছে অনেকগুলো নূতন ফ্যাশন শপ। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ফ্যাশন শপগুলো সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে হাল ফ্যাশানের নূতন পোষাক আমদানী করেছে। ফ্যাশন শপগুলোকে সাজানো হয়েছে এবং ক্রেতারা ভীড় করছেন। ঈদে প্রতিটি ফ্যাশন শপেই আকর্ষনীয় মূল্য ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফ্যাশন শপগুলো পোষাকের সাথে রেখেছে রকমারী জুয়েলারী। জ্যামাইকার ১৬৭-১৩ হিলসাইড এভিনিউয়ের ‘আল-হামরা কালেকশন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৫ শতাংশ বিশেষ ছাড় দিয়েছে। পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠান আল-হামরায় পাঞ্জাবি, হরেক রকমের শাড়ি. গালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ছাড়াও রয়েছে জামদানি, মসলিন শাড়ির বিশাল সমাহার। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের প্রতিটি আইটেমেই আধুনিকতার ছোঁয়া রযেছে, যা ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে। উল্লেখ্য, আল-হামরা নিউইয়র্কের অন্যতম বাংলাদেশি মালিকানাধীন ফ্রাতেমা ব্রাদার্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। জ্যাকসন হাইটসের কারুসুরমা. জ্যাকসন হাইটসের ৭২-১০ ৩৭ এভিনিউয়ে অবস্থিত কারুসুরমার শ্লোগানই হচ্ছে: ‘মনছোঁয়া কালেকশন নিয়ে আপনার পাশে।” ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আল-হামরা তাদের কালেকশনের ওপর ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আল-হামরায় সকলের সাধ্যের মধ্যে মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে অপরূপ শাড়ি, বিয়ের লেহেঙ্গা, চুড়িদার সেট, আকর্ষণীয় ফতুয়া, মেয়েদের চুড়িদার, পাঞ্জাবি, কাশ্মিরী শাল, পার্টি পার্স, পার্টি স্যাণ্ডেল, মানানসই জুয়েলারি, চুড়িসহ অন্যান্য পোশাক সামগ্রীর বিপুল সমাহার।