রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » দেশে ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না
দেশে ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ দেশে এক মাসে ডায়রিয়া পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। গত মাসের শুরুতে রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এক মাস পরে জানা যাচ্ছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে।
মার্চের শুরু থেকে মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৬ মার্চ এক হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়। গত শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছিল ১ হাজার ২৭৪ জন রোগী। গতকাল শনিবার প্রথম ১৬ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছিল ৮৬১ জন। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভর্তি রোগীদের ২৩ শতাংশ তীব্র ডায়রিয়া বা কলেরার রোগী।
আইসিডিডিআরবি জানিয়েছেন,দেশে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। হাসপাতালের বারান্দা, ওয়ার্ডের মেঝেতেও বিছানা পেতে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে গত মাসে মোট রোগী ভর্তি ছিল ৪ হাজার ১১৬ জন। গত বছরের মার্চে যা ছিল ২ হাজার ৫৩৯ জন। গতকাল সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের প্রবেশপথের বারান্দায় ছয়টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে গত শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায় সব রোগীই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। রাজশাহী মহানগর ও জেলায় গত মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩ হাজার ৪৭৭ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ১ হাজার ৯৬৭।
ভোলা সদর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে গতকাল গিয়ে দেখা যায়, ১১টি শয্যার বিপরীতে ২৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে।
ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন ও মনপুরা উপজেলার ৫ জন পল্লিচিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁদের কাছে প্রতিদিন ৮-১০ জন রোগী খাওয়ার স্যালাইন ও ওষুধ কিনতে আসছেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১৯৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা আছে ৩০টি। শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৯৯ জন ও গত মার্চে ১ হাজার ৮৫৪ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে হাসপাতালে।
চাঁদপুর ও আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে গত ১২ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ৯৮১ জন আইসিডিডিআরবির চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। দিনে গড়ে ভর্তি হয়েছে ২৪৮ জনের বেশি।
নরসিংদীতে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত জেলার সব কটি সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে তিন হাজারের বেশি মানুষ। এই সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক শিশুসহ তিনজন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা লোপা চৌধুরী জানান, মার্চ মাসের প্রথম দিকে প্রতিদিন চার-পাঁচজন করে রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ১২ তারিখ থেকে ৮০-৮৫ জন করে রোগী আসতে শুরু করে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের তিন মাসে বিভাগের ছয় জেলায় ১২ হাজার ২৭৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে ২ জন।এই সময় পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিডিডিআরবি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ডায়রিয়া হলে এক প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে।
এই সময় শিশুরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর যত কেজি ওজন, তত চা-চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে, আনুমানিক সেই পরিমাণ খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি দুই বছরের কম বয়সী শিশু অবশ্যই মায়ের দুধ খাবে।