মঙ্গলবার, ২২ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » রাশিয়া সাইবার ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে— বাইডেন
রাশিয়া সাইবার ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে— বাইডেন
বিবিসি২৪নিউজ,ফরিদা ইয়াসমিন (ওয়াশিংটন) যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক মাস পূর্ণ হতে চলেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়া আমেরিকার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালাতে পারে বা ইউক্রেনে জৈবিক বা রাসায়নিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারে।
বাইডেন সোমবার (২১ মার্চ) দিনের শেষার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতাদের একটি দলকে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বিশ্ববাসীর ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতার কথা কল্পনাও করেননি এবং তার “দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে”।
“এখন তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। তিনি দাবি করছেন যে, ইওরোপে আমাদের জৈবিক এবং রাসায়নিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে—যা ডাহা মিথ্যা”, বাইডেন বলেন। “তারা এও বলছে যে ইউক্রেনে জৈবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় তিনি এই দুই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন”।
বাইডেন সোমবার আরও বলেন, “গোয়েন্দা তথ্য” রয়েছে যে রাশিয়ান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে “সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণের বিষয়ে ভাবছে” এবং তিনি বেসরকারি খাতকে “অবিলম্বে” “সাইবার প্রতিরক্ষা” কঠোর করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ হিসেবে রাশিয়া এ ধরনের হামলা চালাতে পারে।
“এটি রাশিয়ার নীল নকশার অংশ”, তিনি বলেছিলেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও ব্রিটেনের নেতারা সোমবার টেলিফোনে এক আলোচনায় ইউক্রেনে রাশিয়ার নৃশংস কৌশল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতি তাদের অব্যাহত সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতির জন্য ইউক্রেনের অব্যাহত প্রচেষ্টার পক্ষে কূটনৈতিক সমাধানের বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন।
আলোচনা
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি সোমবার স্থানীয় টেলিভিশনকে বলেছেন যে, তিনি পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের নেটোতে যোগদান না করার প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
তিনি এর আগে বলেছিলেন যে, যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো সমঝোতার বিষয়ে ইউক্রেনের জনগণকে গণভোটে ভোট দিতে হবে।
যুদ্ধাপরাধ
সোমবার পেন্টাগন রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছে।
পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কারবি ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা অবশ্যই রুশ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের স্পষ্ট প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা এর প্রমাণ সংগ্রহে সহায়তা করছি”।
কারবি রুশ বাহিনীকে “বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে হামলা” চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেন। যা অনেক ক্ষেত্রে “ইচ্ছাকৃত” ছিল বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, রুশ বাহিনী এখনো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে।
মানবিক সংকট
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা মঙ্গলবার বলেছে যে, রুশ আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৩ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।
এর মধ্যে ২ দশমিক ১ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থী পোল্যান্ডে, ৫ লাখ ৪৩ হাজার রোমানিয়ায়, ৩ লাখ ৬৮ হাজার মলদোভায় এবং ৩ লাখ ১৮ হাজার হাঙ্গেরিতে গেছে।
এই সপ্তাহে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন, বিশেষ করে বেসামরিক ব্যক্তি এবং অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে ফ্রান্স ও মেক্সিকোর তৈরি করা একটি খসড়া প্রস্তাবে ভোট দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি “জরুরি বিশেষ অধিবেশন” আবার শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।