
সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | শিরোনাম » ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খাল ভরাট করে সড়ক উন্নয়ন,পানিসংকটে হাজারো কৃষক
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খাল ভরাট করে সড়ক উন্নয়ন,পানিসংকটে হাজারো কৃষক
বিবিসি২৪নিউজ, মোঃ রাকিবুর রহমান রকিব, সরাইল প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন সড়কে উন্নীতকরণের চলমান কাজের ফলে ওই এলাকার আশুগঞ্জ পলাশ-অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের (সবুজ প্রকল্প) খালের তিন–চতুর্থাংশ ভরাট হয়ে গেছে। এর ফলে সরাইলে সেচ প্রকল্পের পানিসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সরাইল উপজেলার ১০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান চাষ হুমকিতে পড়েছে। আগে মহাসড়কের পাশের এই খাল দিয়ে পানি প্রথমে জাফর খালে প্রবাহিত হতো। এরপর জাফর খালের সঙ্গে যুক্ত বোয়ালিয়া, নাইজুর, লাহুর, বুড্ডা ও উত্তরের খাল হয়ে সরাইল উপজেলার সদর, পানিশ্বর, কালীকচ্ছ, নোয়াগাঁও, চুন্টা ও শাহবাজপুর ইউনিয়নের ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হতো। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় ২০ হাজার কৃষক। গত ৪০ বছর ধরে আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্পের পানি দিয়ে কৃষকেরা জমি চাষ করে আসছেন।
সরেজমিন চিত্র
৬, ৭ ও ৮ মার্চ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পানিশ্বর ইউনিয়নের পানিশ্বর, বিটঘর, বেড়তলা, নাইলা, সদর উপজেলার কুট্টাপাড়া, সৈয়দটুলা, চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর, চুন্টা বড়বল্লা এলাকায় পানিপ্রবাহ কমে গেছে। সবুজ প্রকল্পের প্রধান খাল কুট্টাপাড়া অংশের পর নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ইসলামাবাদ থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত খালটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেছে। ওই খালের প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশে কোনো পানি নেই।
এখন বৃষ্টিই ভরসা’
প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শুরুতে ওই প্রকল্পের পানিপ্রবাহ শুরু হয়। খাল ভরাট হওয়াতে যথাসময়ে পানিপ্রবাহ শুরু না হওয়ায় এ অংশে অন্তত ২৫টি সেচ পাম্প সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পানিস্বল্পতার কারণে বহু সেচপাম্প বিকল হয়ে গেছে। এতে বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা খরচ করে স্থানে স্থানে অনেক অগভীর সেচপাম্প (শ্যালো মেশিন) বসিয়েছেন। এ বছর খাল ভরাটের কারণে কৃষকেরা সঠিক সময়ে ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি। অন্যদিকে সঠিক মাত্রায় পানিও পাচ্ছেন না। এতে কৃষকেরা ধানের সঠিক উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ কারনে কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। এ সব জমিতে ধান রোপণ করার জন্য বীজতলা (অথাৎ ধানের চারা মরে যাচ্ছে) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
গতকাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক এলাকায় চারা রোপণের ১৫,২০ দিন পেরিয়ে গেলেও সেচ দিতে না পারায় চারা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। এলাকার কৃষক জমি প্রস্তত করে বসে থাকলেও এসব এলাকায় এখনও পানি যায়নি। এসব জমিতে বোরো আবাদ করতে পারবেন কিনা এ নিয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন হাজার হাজার কৃষক।
সরাইলের শান্তিনগরের কৃষক নায়েব আলী বিবিসি নিউজকে জানান, জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজে জন্য আমরা পানি পাচ্ছি না । আমাদের হাজার হাজার একর জমি অনাবাদি রয়েছে। ইউ এন ও আমাদের লামচাম বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সাবেক এমপি আমাদের যথা সময়ে পানি দিয়েছে। আমরা সঠিকভাবে ফসল করেছি।
সরাইলের কৃষক আলী আকবর বিবিসিনিউজকে জানান, সবুজ প্রকল্পের পানি মহাসড়কে উন্নীতকরণ কারনে আমরা পানি পাচ্ছি না। দ্রুত পানি ব্যাবস্থার আহবান জানান।
সরাইলের বেড়তলার কৃষক আলা উদ্দিন জানান গত বছর ঠিকমত পানি পাইছিলাম এবছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন এর লাভবান হবে না আশানুগ ফসল পাবে না । এ পানি কৃষকের কোন লাভ হবে না । আউশ পনোধনা দিয়ে কৃষকদের পুষিয়ে দেয়ার চিন্তা করছি আমরা।
সরাইল উপজেলা বিএডিসি’র উপসহকারি প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বিবিসি নিউজকে বলেন, কৃষকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজের বালু ও পাশের চাতালের ছাঁই ময়লায় সরূ খালটিও ভরাট হয়ে গেছে। ২টি বেকু দৈনিক ১৬ ঘন্টা মাটি কাটছে। সওজ কোন সহযোগিতা করছেন না। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বিবিসি নিউজকে বলেন, এখনো কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। ৩-৪ দিনের মধ্যে পানি আসতে পারে।