মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকা: বিষাদ ও বেদনার স্মৃতি নিয়ে ফিরে এল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে জাতির চিরগৌরবের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বর্বর সেনাবাহিনী। এই হত্যাযজ্ঞে সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের পদলেহী এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার। রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে যারা ঘৃণিত, ধিক্কৃত।
দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বিক্রমের সামনে টিকতে না পেরে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার সেনারা যখন মাথানত করে আত্মসমর্পণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন তার অব্যবহিত আগে তারা এক জঘন্য নীলনকশা করেছিল।
স্বাধীন বাঙালি জাতিকে মেধা-মননহীন করে তুলতে তারা বেছে বেছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান—শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সমাজে সৃজনশীলতায় অগ্রণী মানুষদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে।
বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবীদের চোখ ও হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক পাকিস্তানি বাহিনীর এই সুপরিকল্পিত হত্যার পরিকল্পনাটি প্রকাশ পায়। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত হয় বিশ্ববিবেক। পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি কেবল রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। পাকিস্তানি ঘাতক সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস চক্র সারা দেশে গণহত্যার শুরু থেকেই শিক্ষক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সমাজসেবকসহ অগ্রণী চিন্তার মানুষদের ধরে ধরে হত্যা করেছে। জাতি আজ ১৪ ডিসেম্বর বিনয় ও পরম শ্রদ্ধায় এই শহীদ বুদ্ধজীবীদের স্মরণ করবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাবা সিরাজুদ্দীন হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে এসেছেন ছেলে তৌহীদ রেজা নূর। স্ত্রী সোনিয়া আশরাফিকে সঙ্গে নিয়ে ছেলে সৃজন সমৃদ্ধ রেজাকে দাদার গল্প শোনাচ্ছেন তিনি। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুদ্দীন হোসেনকে রাজধানীর চামেলীবাগের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। এরপর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। রায়েরবাজার,
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাবা সিরাজুদ্দীন হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে এসেছেন ছেলে তৌহীদ রেজা নূর। স্ত্রী সোনিয়া আশরাফিকে সঙ্গে নিয়ে ছেলে সৃজন সমৃদ্ধ রেজাকে দাদার গল্প শোনাচ্ছেন তিনি। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুদ্দীন হোসেনকে রাজধানীর চামেলীবাগের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। এরপর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। রায়েরবাজার,
বিষাদ ও বেদনার স্মৃতি নিয়ে ফিরে এল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে জাতির চিরগৌরবের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বর্বর সেনাবাহিনী। এই হত্যাযজ্ঞে সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের পদলেহী এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার। রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে যারা ঘৃণিত, ধিক্কৃত।
দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বিক্রমের সামনে টিকতে না পেরে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার সেনারা যখন মাথানত করে আত্মসমর্পণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন তার অব্যবহিত আগে তারা এক জঘন্য নীলনকশা করেছিল।
স্বাধীন বাঙালি জাতিকে মেধা-মননহীন করে তুলতে তারা বেছে বেছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান—শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সমাজে সৃজনশীলতায় অগ্রণী মানুষদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে।
বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবীদের চোখ ও হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক পাকিস্তানি বাহিনীর এই সুপরিকল্পিত হত্যার পরিকল্পনাটি প্রকাশ পায়। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত হয় বিশ্ববিবেক। পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি কেবল রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। পাকিস্তানি ঘাতক সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস চক্র সারা দেশে গণহত্যার শুরু থেকেই শিক্ষক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সমাজসেবকসহ অগ্রণী চিন্তার মানুষদের ধরে ধরে হত্যা করেছে। জাতি আজ ১৪ ডিসেম্বর বিনয় ও পরম শ্রদ্ধায় এই শহীদ বুদ্ধজীবীদের স্মরণ করবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাত্তরের ঘাতক, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-মৌলবাদী চক্রের রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রবিরোধী সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানান। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সব শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ৭টা ৫ মিনিটে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭টা ২২ মিনিটে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।
স্মৃতিসৌধে প্রস্তুতি
সোমবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং প্রবেশপথ ধুয়েমুছে সাফ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নানান ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিকেলে স্ত্রী সোনিয়া আশরাফি ও সন্তান সৃজন সমৃদ্ধ রেজাকে সঙ্গে নিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে যান গবেষক তৌহীদ রেজা নূর, যিনি শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেনের সন্তান। সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন ইত্তেফাক-এর বার্তা ও কার্যনির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে রাজধানীর চামেলীবাগের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়।
তৌহীদ রেজা বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে মানুষ এখন রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসে। দিবসটিও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়। বিষয়টি একজন শহীদের সন্তান হিসেবে আমার ভালো লাগে।’
রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে কথা হয় বিচ্ছু বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড জহির উদ্দিন
জালালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে যখন আমরা ঢাকা শহরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছিলাম, সেই মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদাররা এ দেশের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও লেখক-লেখিকাদের তালিকা করে বাসা থেকে যেভাবে পেরেছে, ধরে এনে তাঁদের হত্যা করে।’