শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » রোহিঙ্গা সংকট পঞ্চম বছরে পড়লেও একজন ফেরত পাঠানো যায়নি: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকট পঞ্চম বছরে পড়লেও একজন ফেরত পাঠানো যায়নি: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ, এম ডি জালাল, নিউইয়র্ক থেকেঃ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা ও অব্যাহত সহযোগিতা প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট পঞ্চম বছরে পড়ল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মিয়ানমারের একজন নাগরিককেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক সময় দুপুর ২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এবার পঞ্চম বছরে পড়ল।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের একজনকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা ও অব্যাহত সহযোগিতা আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগেও বলেছি, আবারও বলছি, রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই কেবল এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই তার নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করতে সদা প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্ন দেখি।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আকসিয়ান নেতাদের সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আশা করি, আসিয়ানের নেতৃবৃন্দ বাস্তুচ্যূত মিয়ানমার নাগরিক ইস্যুতে গৃহীত প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করবেন। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাদদিহি নিশ্চিতকরণে গৃহীত সব কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে হবে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অব্যাহত মানবিক সহায়তা দেওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে তাদের সাময়িক অবস্থানকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের কিছু সংখ্যক নাগরিককে আমরা ‘ভাসানচরে’ স্থানান্তর করেছি। আশ্রয় শিবিরে কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তাররোধে টিকালাভের যোগ্য সবাইকে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এবার নিয়ে এটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৮তম ভাষণ। নির্বাচিত রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের (ইউইনজিএ) উদ্বোধনী সেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এবারের ইউএনজিএ সমাপ্ত হবে।
শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান জাতিসংঘের নীতি নির্ধারণী উচ্চ পর্যায়ের এ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে সশরীরে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২১ তারিখ উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ আলোচনা শুরুর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ’র ৭৬তম অধিবেশন শুরু হয়। ওই দিন সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মালদ্বীপের আব্দুল্লাহ শহিদ শপথ গ্রহণ করেন এবং তিনি বর্তমান অধিবেশন উদ্বোধন করেন।