শনিবার, ২১ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | শিরোনাম | সাবলিড » আফগান নতুন সরকার গঠনে মরিয়া তালেবানরা
আফগান নতুন সরকার গঠনে মরিয়া তালেবানরা
বিবিসি২৪নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে লোকজন যখন মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে তখন তালেবানের একজন প্রতিষ্ঠাতা দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের লক্ষ্যে আলাপ আলোচনার জন্য রাজধানী কাবুলে গিয়ে পৌঁছেছেন।
তালেবানের উপ-প্রধান মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার গত মঙ্গলবার দোহা থেকে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারে ফিরে যান। আজ শনিবার তিনি রাজধানী কাবুলে গেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তালেবানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন যে আব্দুল গনি বারাদার এখন “সকলের অংশগ্রহণে একটি সরকার গঠনের উদ্দেশ্যে জিহাদি নেতা ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।”
বারাদার কাতারের দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক অফিসের প্রধান। আন্তর্জাতিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য এতদিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন।
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবানের যেসব শীর্ষস্থানীয় নেতা এখন দেশটির ভেতরে অবস্থান করছেন মোল্লাহ বারাদার তাদের একজন। ধারণা করা হচ্ছে নতুন আফগান সরকারে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
যে চার ব্যক্তি ১৯৯৪ সালে তালেবান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মি. বারাদার তাদের মধ্যে একজন। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানে ২০০১ সালে তালেবান সরকার উৎখাত হওয়ার পর তিনি এই গ্রুপটির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন।বিবিসির সাংবাদিক লিজ ডুসেট বলছেন, আফগানিস্তানে এখন সরকার গঠনের কঠিন কাজটি শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগে কঠোর নিয়মকানুন অনুসারে দেশ পরিচালনার জন্য এই গ্রুপটির ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছিল। সেসময় মাত্র তিনটি দেশ তাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু তালেবান এখন জানে যে তাদেরকে এবার আগের চেয়ে ভিন্ন রকমের হতে হবে।
লিজ ডুসেট বলছেন, কান্দাহারে আলাপ আলোচনা শেষ করে মোল্লাহ বারাদারের কাবুলে আসার পর সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় এখন গতি আসবে।
সবার কৌতূহল এই তালেবানের নেতৃত্বে এবার কী ধরনের সরকার গঠিত হয় তা দেখার জন্য। তালেবান ইতোমধ্যে সকলের অংশগ্রহণে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রাজনৈতিক নেতা হামিদ কারজাই এবং আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ এখনও কাবুলে অবস্থান করছেন। আলোচনা করছেন তালেবানের নেতাদের সঙ্গে।
তালেবানের আরো একজন নেতা যাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছিল, সেই খলিল হাক্কানিকেও রাজধানী কাবুলে দেখা গেছে। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের অর্থ পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল।
শুক্রবার তাকে দেখা গেছে সশস্ত্র ব্যক্তি পরিবেষ্টিত অবস্থায়। তাকে একটি মসজিদে নামাজিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতেও দেখা গেছে।এদিকে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য এখনও বহু মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন যে তারা এখনও পর্যন্ত ১৩,০০০ লোককে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
লোকজনের এই পালানোর চেষ্টায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তালেবানের বিরুদ্ধে। বলা হচ্ছে শহরের যে এয়ারপোর্ট রোড ধরে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হয় সেই সড়কে তালেবান কিছু তল্লাশি চৌকি স্থাপন করেছে। সশস্ত্র তালেবান নেতারা বিমানবন্দরের চারপাশে টহল দিচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু তালেবানের একজন নেতা লোকজনকে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি জানান, যাদের ভ্রমণের জন্য বৈধ কাগজপত্র নেই শুধু তাদেরকেই তারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন।