শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » ইসরায়েলে করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ শুরু
ইসরায়েলে করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ শুরু
বিবিসি২৪নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে নাগরিকদের করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়া শুরু করেছে ইসরায়েল৷ শুক্রবার ষাটোর্ধ্বদের জন্য এই কার্যক্রম চালু করেছে তারা৷
শুক্রবার নিজে বয়োনটেক-ফাইজারের টিকার তৃতীয় ডোজ নেওয়ার মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্তস্যোগ৷ এর ফলে যত দ্রুত সম্ভব ইসরায়েল স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে বলে আশা করেন তিনি৷
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ৪৯ বছর বয়সি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট৷ তিনি বলেন, ষাট বছর ও তার উপরের বয়সের মানুষদের তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েল পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে৷ এর আগে গত বৃহস্পতিবার তিনি এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন৷ বয়সের কারণে প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় ডোজ নিতে না পারলেও পেয়েছেন তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোগী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু৷
গত জুলাইতেই অবশ্য গুরুতরভাবে রোগ প্রতিরোধহীন মানুষদের তৃতীয় ডোজ টিকার অনুমোদন দেয় ইসরায়েল৷
তৃতীয় ডোজ: গবেষণা যা বলছে
ইসরায়েল সবার আগে তৃতীয় ডোজ টিকার অনুমোদন দিলেও এই বিষয়ে এখনও পূর্ণাঙ্গ কোন গবেষণা প্রকাশিত হয়নি৷ এক্ষেত্রে তারা মূলত নির্ভর করছে বায়োনটেক-ফাইজারের তথ্যের উপরে৷ তাদের দাবি তৃতীয় ডোজ টিকা নিলে তা কোভিডের ডেলটা ধরনের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে৷
তবে ইসরায়েল সাধারণত যাদের অনুসরণ করে সেই যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এখনও বয়স্কদের তৃতীয় ডোজ করোনা টিকার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি৷
যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুমোদন না দেওয়া সত্ত্বেও তৃতীয় ডোজ চালুর বিষয়ে জেরুসালেম এর হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিশেষজ্ঞ হাগাই লেভিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘সিদ্ধান্তটি বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে৷ এটা যুক্তিনির্ভর, মৌলিক বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নির্ভর নয়৷ কিন্ত তারপরও এই সিদ্ধান্ত ঠিক আছে৷”
জনগণের একটি বড় অংশকে টিকা দেওয়ার পর জুনে জনসমাগম সহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ তুলে নেয় ইসরায়েল৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণ বাড়ায় মাস্ক পরা আবারও বাধ্যতামূলক করেছে সরকার৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলছে
করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ প্রদানের অনুমোদন এখনও দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও-ডাব্লিউএইচও৷ তাদের এখন মূল লক্ষ্য বিশ্বের সব দেশের জন্য পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিত করা৷ বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে দরিদ্র্য দেশগুলোতে টিকা সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি৷ এমন অবস্থায় ইসরায়েলের তৃতীয় ডোজ টিকা চালুর খবরে শুক্রবার ডাব্লিউএইচও এর মুখপাত্র ব্রুস আইওয়ার্ড সাংবাদিকদের বলেন, টিকা সরবরাহকারী, উৎপাদনকারী দেশ বা যেসব দেশ টিকা দিয়ে ফেলেছে তাদের এখন উচিত সব দেশের জনসংখ্যার অন্তত দশ শতাংশকে টিকাদানে সহায়তা করা৷ ‘‘এই মহামারি থেকে বের হওয়ার জন্য এটাই সবচেয়ে জরুরি,’’ বলেন তিনি৷
উল্লেখ্য, শুরুর দিকেই পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিত করায় এবং উন্নত ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার কারণে দ্রুত গতিতে নাগরিকদের করেনার টিকা দিতে পেরেছে ইসরায়েল৷ দেশটির ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে ৫৫ শতাংশই এরিমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, যার বেশিরভাগই বায়োনটেক-ফাইজার কোম্পানির৷ তবে বয়সের বিচারে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও দশ লাখ মানুষ টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন৷
গত মাসে দেশটির সরকার ১২ বছরের উপরে সবাইকে টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয়৷ চলতি সপ্তাহে আরেক ঘোষণায় বলা হয়েছে, যারা পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সি এবং গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ১ আগস্ট থেকে তাদেরকেও টিকা দেওয়া যাবে৷