বুধবার, ১৯ মে ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৫২ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৫২ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
বিবিসি২৪নিউজ, খান শওকত, নিউইয়র্ক থেকেঃ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ক্ষয়ক্ষতির একটি চিত্র উঠে এসেছে জাতিসংঘের হিসাবে। সংস্থাটি গতকাল মঙ্গলবার বলেছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ৫২ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজা উপত্যকায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে চার শ ভবন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
ইসরায়েলের বিমান হামলা নিয়ে গতকাল একটি বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে, তা যুদ্ধাপরাধের সমান। যদিও ইসরায়েল তা অস্বীকার করেছে। দেশটির সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যাতে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়ার ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কো–অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) মুখপাত্র ইয়েন্স লেয়ার্কে বলেন, গাজায় জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুল রয়েছে ৫৮টি। এতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি।
ইয়েন্স লেয়ার্কে বলেন, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১৩২টি ভবন ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া ৩১৬টি ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি হাসপাতাল ও নয়টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র রয়েছে। এই হামলার কারণে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছেন প্রায় আড়াই লাখ গাজাবাসী।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, এবারের সংঘাতে এ পর্যন্ত ২১৫ জন ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। এর মধ্যে শিশু কমপক্ষে ৬১টি আর নারী ৩৬ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের পক্ষে প্রাণহানি ১২ জনের। এর মধ্যে শিশু দুটি। গত আট দিনে সবচেয়ে প্রাণহানি হয়েছে রোববার। ওই দিন অন্তত ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবারের এই সংঘাতকে বলা হচ্ছে ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত।
এদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজার রকেট ছুড়েছে। এ হামলার জবাবে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৩০ জন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নিহত হয়েছেন ৩০ জন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাস ও পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণকারী ফাতাহের আহ্বানে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে গতকাল ধর্মঘট পালিত হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, দখল করা পশ্চিম তীরে ধর্মঘট চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই সংঘর্ষে প্রায় ১০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদিকে জেরুজালেমের দামেস্ক গেট থেকে তিন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানৎজ বলেছেন, ‘পরিস্থিতি পুরোপুরি ও দীর্ঘ মেয়াদে শান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই থামাব না।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের পুরো সীমান্তজুড়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) প্রস্তুত রয়েছে। ইসরায়েলি নাগরিক বা সার্বভৌমত্বের জন্য যেকোনো বিদেশি হুমকি প্রতিহত করা হবে। ইসরায়েলভিত্তিক ইংরেজি ভাষার অনলাইন সংবাদপত্র টাইমস অব ইসরায়েলের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।