শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ব্র্রিটেন জুড়ে প্রিন্স ফিলিপের স্মরণে তোপধ্বনি
ব্র্রিটেন জুড়ে প্রিন্স ফিলিপের স্মরণে তোপধ্বনি
বিবিসি২৪নিউজ, রুপা শামীমা, লন্ডন থেকেঃ ব্রিটেনের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রিন্স ফিলিপের সম্মানে আজ শনিবার জিব্রলটারে এবং সমুদ্রে রণতরী থেকে সমন্বিত ও বর্ণাঢ্য তোপধ্বনি করা হয়েছে। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৭৩ বছরের স্বামী ডিউক অফ এডিনবারা ৯৯ বছর বয়সে শুক্রবার উইন্ডসর প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ইতিহাসে কোন রাজা বা রানির এত দীর্ঘসময়ের জীবনসঙ্গী আর কেউ ছিলেন না। ব্রিটিশ সময় দুপুর বারোটা থেকে লন্ডন, স্কটল্যান্ডের এডিনবারা, ওয়েলসের কার্ডিফ এবং আয়ার্ল্যান্ডের বেলফাস্ট থেকে প্রতি মিনিটে এক রাউন্ড করে ৪১বার তোপধ্বনি করা হবে বলে জানিয়েছিল ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সমুদ্রে রয়াল নেভির জাহাজগুলো থেকেও ডিউকের স্মরণে তোপধ্বনি করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রিন্স নেভাল অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে তিনি লর্ড হাই অ্যাডমিরাল পদে আসীন ছিলেন। এই তোপধ্বনির অনুষ্ঠান টিভি ও অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে মানুষজনকে ঘরে থেকে এই অনুষ্ঠান দেখতে অনুরোধ করা হয়েছিল। এধরনের সম্মানসূচক তোপধ্বনি এর আগে করা হয়েছিল ১৯০১ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার সম্মানে এবং ১৯৬৫ সালে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের মৃত্যুর পর তাঁর স্মরণে। প্রিন্স ফিলিপ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী ৯৯ বছরে মৃত্যুর খবর শুক্রবার ঘোষণা করা হয় বাকিংহাম প্রাসাদের বিবৃতিতে। প্রিন্স ফিলিপ ১৯৪৭ সালে প্রিন্সেস এলিজাবেথকে বিয়ে করেন। এর পাঁচ বছর পর প্রিন্সেস এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি হন। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়: “মহামান্য রানি খুবই দুঃখের সাথে তাঁর প্রিয় স্বামী প্রিন্স ফিলিপ, ডিউক অফ এডিনবারার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেছেন”। “ডিউক, উইন্ডসর কাসেলে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।” বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে দুপুর বারোটার কিছু পরই দেয়া এই বিবৃতিতে জানানো হয় ”রানি গভীরভাবে শোকাহত”।প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য হবে উইন্ডসরের সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে, কিন্তু কবে সেটা হবে সেই তারিখ এখনও জানানো হয়নি। তবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর অন্ত্যেষ্টি হবে না এবং সাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ শায়িত রাখা হবে না। খবরে বলা হয়েছে প্রিন্স ফিলিপ অনুরোধ করে গেছেন যে তাঁর শেষকৃত্য যেন আড়ম্বর সহকারে না করা হয় এবং জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা না হয়। তার পরিবর্তে রাজ পরিবারের রীতি অনুযায়ী এবং প্রিন্স ফিলিপের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী শেষকৃত্য না হওয়া পর্যন্ত তাঁর মরদেহ উইন্ডসর কাসেলের সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে শায়িত রাখা হবে। বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ডিউকের শেষকৃত্য হওয়ার পরদিন সকাল আটটা পর্যন্ত সব সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওয়েস্টমিনস্টার গির্জায় বিশাল ঘণ্টায় প্রতি ৬০ সেকেন্ড পর পর ৯৯ বার ঘণ্টাধ্বনি করা হয়েছে গতকাল শুক্রবার- ডিউকের জীবনের প্রতিটি বছরের স্মরণে।উইন্ডসর কাসেলের বাইরেও মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বহু মানুষ বাকিংহাম প্রাসাদের ফটকে এবং উইন্ডসর প্রাসাদের বাইরে ফুল রেখে প্রিন্স ফিলিপের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। তবে সরকার মহামারির কারণে মানুষজনকে কোথাও জড়ো হতে বা পুষ্পস্তবক না দিতে অনুরোধ করেছে। রাজপরিবারের পক্ষ থেকেও জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ফুল দেবার বদলে ডিউকের স্মরণে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সেই অর্থ দান করার জন্য। প্রিন্স ফিলিপ শারীরিক অসুস্থতার কারণে লন্ডনের কিং এডওয়ার্ড হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবছরের ১৬ই ফেব্রুয়ারি। পরে লন্ডনে হৃদরোগের জন্য বিশেষ হাসপাতাল সেন্ট বার্থলোমিউ হাসপাতালে তার পুরনো হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে তার সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। এক মাস চিকিৎসার পর ১৬ই মার্চ তিনি উইন্ডসর কাসেলে ফিরে যান। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শুক্রবার সকালে।