রবিবার, ২১ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » আন্তর্জাতিক রোডে বিমান ভ্রমণে করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক না- ডব্লিউএইচও
আন্তর্জাতিক রোডে বিমান ভ্রমণে করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক না- ডব্লিউএইচও
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বের অধিকাংশ বিমান কোম্পানির বহরের সিংহভাগই এক বছর ধরে বেকার পড়ে আছে। ভ্যাকসিন এখন তাদের বড় ভরসা।আন্তর্জাতিক বিমান ভ্রমণে যাত্রীদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক করতে সরকারগুলোর কাছ থেকে চাপ আসছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিমান সংস্থা কোয়ান্টাসের প্রধান।
কোয়ান্টাসের প্রধান নির্বাহী অ্যালান জয়েস বলেছেন একে একে অনেক দেশের সরকার এখন বলতে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়া না থাকলে অন্যদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ঢোকার অনুমতি মিলবে না।
মি জয়েস বলেন, সরকারী নির্দেশ না এলেও বিমান সংস্থাগুলোর উচিৎ স্ব-উদ্যোগে এই শর্ত আরোপ করা। “যাত্রী এবং ক্রুদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। বিমানের ভেতর সবাইকে নিরাপত্তা দিতে হবে।“
তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে টিকেট বুক করার শর্ত বদলাতে হবে।সমীক্ষায় দেখা গেছে ৯০ শতাংশ যাত্রীই মনে করে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান যাত্রীদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। অর্থাৎ টিকা নেওয়া না থাকলে বিমানে ভ্রমণ করা যাবেনা।
ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বিরোধী ডব্লিউএইচও
একে একে অনেক দেশের সরকার এখন বলতে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়া না থাকলে অন্যদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ঢোকার অনুমতি মিলবে না- কোয়ান্টাসের প্রধান নির্বাহী অ্যালান জয়েস
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ অনেকেই বিমান যাত্রায় কোভিড টিকা বাধ্যতামূলক করার বিপক্ষে।
ডব্লিউএইচও‘র একজন পরিচালক বার্নার্ডো মারিনো বলেন, “বিমান যাত্রায় ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বাধ্যবাধকতা আমরা অনুমোদন করছি না।“ তিনি বলেন বেসরকারি খাত চাইলেও এমন সিদ্ধান্ত কার্যকরী করতে সবগুলো দেশের সরকারকে অভিন্ন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিমান পরিবহণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সমিতির (আইএটিএ) হিসাব মতে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিমান পরিবহন খাতের অবদান ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার।
কিন্তু করোনাভাইরাস সামলাতে বিশ্বজুড়ে নানা বিধিনিষেধের কারণে গত বছর যাত্রীসংখ্যা নজিরবিহীনভাবে কমে যায়। ২০১৯ সালে বিমানযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৫০ কোটি যে সংখ্যা গত ৭৬ শতাংশ কমে যায়।
তবে মি জয়েস মনে করেন টিকা কর্মসূচি চললেও যাতায়াত বাড়লে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়বে। “মানুষকেও সে কারণে বুঝতে হবে যে এই ভাইরাস থেকে একশ ভাগ নিরাপদ থাকা সম্ভব নয়।“
অক্সিজেন টেন্টে কোয়ান্টাস
যাত্রী কমে যাওয়ায় গত বছরের শেষ ছয় মাসে কোয়ান্টাস ৮০ কোটি ডলার লোকসান করেছে। অথচ ২০১৯ সালের একই সময়ে এই কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল প্রায় ৬০ কোটি ডলার।
লোকসানের কারণে কারণে কোম্পানির ৮,৫০০ জনকে চাকুরিচ্যুত করতে হয়েছে। সেই সাথে কয়েক হাজার কর্মীকে এখন বেতন দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার।
বিশ্বের প্রতিটি যাত্রী বিমান সংস্থার দুর্দশা কম-বেশি একইরকম। অনেক কোম্পানি তাদের সিংহভাগ বিমান বসিয়ে রেখেছে। সার্ভিস অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কোয়ান্টাসও তাদের বহরের ৩১৪টি বিমানের দুই-তৃতীয়াংশই বসিয়ে রেখেছে। এসব বসিয়ে রাখা বিমানের ভেতর কিছু দোতলা এয়ারবাস এ-৩৮০ও রয়েছে।
টিকেটের দাম কি বাড়বে?২০২০ সালে বিমানযাত্রীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৭৬ শতাংশ ফ্লাইটের সংখ্যা কমে গেলেও বিধিনিষেধ শিথিলের পর যাত্রী সংখ্যা বাড়া শুরু হলে টিকেটের দাম কি বাড়বে?
মি জয়েস তা মনে করেন না। “বরঞ্চ কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোভিড পূর্ব সময়ের তুলনায় টিকেটের দাম অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। যাত্রী বাড়াতে তা করতে হতে পারে।“
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক রুটে বিমান যাত্রীর সংখ্যা ২০১৯ পর্যায়ে নিতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।“সুতরাং আমরা নিশ্চিত যে বিমান ভাড়া বাড়বে না।“
লং-হল ফ্লাইটের বিমানের চাহিদা বাড়বে
কোয়ান্টাস তাদের আন্তর্জাতিক রুট পুনরায় শুরুর দিনক্ষণ জুলাই থেকে পিছিয়ে অক্টোবরের নিয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার মনে করছে ঐ সময়ের মধ্যে দেশের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের টিকা দেওয়া শেষ করা যাবে।
মি জয়েস বলেন মহামারীর পর লং-হল ফ্লাইটের অর্থাৎ দূর পাল্লার বিরতিহীন ফ্লাইটের চাহিদা বাড়বে, কারণ যাত্রীরা এখন মাঝপথে অন্য কোনো বিমানবন্দরের ভিড় এড়াতে চাইবে।
তিনি বলেন, এ ধরনের ফ্লাইট ব্যবসার জন্যও ভালো। এজন্য, কোয়ান্টাস পার্থ ছাড়াও সিডনি এবং এবং মেলবোর্ন থেকে লন্ডন এবং ইউরোপে বিরতিহীন ফ্লাইটের পরিকল্পনা করছে যেটা পরে ক্রমে ক্রমে নিউইয়র্ক পর্যন্ত নেওয়া হবে।