বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » মুশতাকের মৃত্যু: কারা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি পায়নি তদন্ত কমিটি
মুশতাকের মৃত্যু: কারা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি পায়নি তদন্ত কমিটি
বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকাঃ লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোন গাফিলতি পায়নি কারাগারের গঠিত তদন্ত কমিটি৷ বুধবার তিন সদস্যের এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটিও রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷
কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদার রিপোর্টের বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি৷ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন৷ এছাড়া গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছেন৷ সেই কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে৷
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘‘একজন উপ-কারা মহাপরিদর্শককে প্রধান করে আমরা যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলাম সেই কমিটি বুধবারই রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ রিপোর্টটি আজই আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি৷’’
রিপোর্টে কী আছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আরও একাধিক তদন্ত কমিটি কাজ করছে, তাই এখনই রিপোর্টের বিষয়ে কিছু বলা যাবে না৷ তবে যে কোন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি কারা কর্মকর্তাদের গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’’ তদন্তে কোন কর্মকর্তার গাফিলতি পেয়েছেন কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোন গাফিলতি পাইনি৷ আসলে ওই মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলছি, এই কারণে যে কোন না কোন রোগের কারণে তিনি মারা গেছেন৷ কী রোগে তার মৃত্যু হয়েছে, সেটা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে৷ আমাদের এখানে তার মৃত্যুটা স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে৷’’
লেখক মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় গত শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়৷ কমিটিকে চার দিবসে রিপোর্ট দিতে বলা হয়৷ মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদারকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম, কারা উপ-মহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির, গাজীপুর জেলা কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. কামরুন নাহার৷ এছাড়া সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ-সচিব আরিফ আহমদ কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন৷ মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার গাফিলতি ছিল কি-না, যদি থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল।
যেসব অভিযোগে ডিজিটাল আইনে মামলা
মুশতাক আহমেদ
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ২০২০ এর ৫ মে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব-৩৷ তাদের একজন মুশতাক আহমেদ৷ এজাহারে বলা হয়েছে, ‘‘তিনি ‘আই এম বাংলাদেশি’ পেজের এডিটর৷ তিনিও গুজব ছড়িয়েছেন৷ এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷’’ ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে তার মৃত্যু হয়৷
ব়্যাবের মামলার ১১ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের একজন কিশোর৷ তার ফেসবুক পাতায় রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, করোনা ভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এজাহারে বলা হয়৷ এছাড়া তার ব্যবহৃত ফোনে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়েছে৷
ব়্যাবের মামলায় গ্রেপ্তার আরেকজন দিদার ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য৷ ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা ‘আর্টিকেল ১৯’ বলছে, দিদার করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে বাংলাদেশ সরকার যে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে, তা মনিটর করার জন্য গঠিত একটি কমিটির সদস্য৷ নিজের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেস দিদার অভিযোগ করেন, সবচেয়ে গরিব মানুষেরাই সরকারি ত্রাণের সবচেয়ে কম অংশ পেয়েছেন৷ সম্প্রতি তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান৷