বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » জাহাজ আটক নিয়ে ইরান ও দ. কোরিয়া উত্তপ্ত
জাহাজ আটক নিয়ে ইরান ও দ. কোরিয়া উত্তপ্ত
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড হরমুজ প্রণালীতে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি তেলবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
জাহাজটিকে অবিলম্বে মুক্তি দেবার দাবি জানিয়েছে দ. কোরিয়া কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এ নিয়ে কথা বলতে হরমুজ প্রণালীতে মোতায়েন দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল ইরানে গেছে।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বলছে তারা বিশজন ক্রুসহ হানকুক চেমি নামের জাহাজটিকে, পরিবেশ আইন লংঘন করার অভিযোগে সোমবার ওমান উপকূলের কাছ থেকে আটক করে। তারা বলছে, জাহাজটির “রাসায়নিক পারস্য উপসাগরের পানি দূষিত করছিল”।
তবে দক্ষিণ কোরিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।লল
জাহাজটি ইরানের বন্দর শহর বান্দার আব্বাসে আটক রাখা হয়েছে। হানকুক চেমি জাহাজের আটক বিশজন ক্রু দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনামের নাগরিক।
ইতোমধ্যে, দক্ষিণ কোরিয়ার জল-দস্যু মোকাবেলা ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে চই ইয়ং নামে একটি ডেস্ট্রয়ার রণতরী হরমুজ প্রণালীর কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে। হরমুজ প্রণালীর এই এলাকা সামরিক কৌশলগত দিক দিয়ে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি এলাকা।
দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে তারা কোন সামরিক তৎপরতায় যেতে চায় না। তারা বিষয়টি দ্বিপাক্ষিকভাবে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানে আগ্রহী বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চোই ইয়াং-সাম।
কোরিয়ায় জব্দ ইরানের সম্পদ
ইরানের ওপর আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংকে ইরানের ৭০০ কোটি ডলার আটকে থাকার বিষয়টি নিয়ে ইরানে যখন একটা উত্তেজনা বিরাজ করছে, তার মধ্যেই এই জাহাজ আটকের ঘটনা ঘটল।
দক্ষিণ কোরিয়ার উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী চোই জং-কুন আগে থেকেই নির্ধারিত এক সফরে আগামী সপ্তাহে ইরানে যাচ্ছেন বলেও ওই মুখপাত্র জানান।
ইরান তাদের জব্দ করা অর্থসম্পদ ছাড়ানোর ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ দিতে এই জাহাজ আটক করেছে এমন আঁচ অনুমান নাকচ করে দিয়েছেন দ. কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী কাং কিউং-হোয়া।
“আমাদের আগে সব তথ্য যাচাই করে দেখতে হবে এবং আমাদের জাহাজের নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে,” তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন। “জাহাজটির দ্রুত মুক্তির জন্য আমরা কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছি।”
দক্ষিণ কোরিয়ার রণতরী কাছাকাছি
মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল জলদস্যু মোকাবেলা ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে তাদের যে ডেস্ট্রয়ার জাহাজটি হরমুজ প্রণালীর কাছে পৌঁছেছে, তার লক্ষ্য দক্ষিণ কোরীয় নাগরিকদের “নিরাপত্তা নিশ্চিত করা”।
ডেস্ট্রয়ারটি যে সরু সমুদ্র পথে রয়েছে তার খুবই কাছে তেলবাহী জাহাজটি আটক করা হয়েছে। এটি উপসাগরীয় এলাকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের সমুদ্র পথ।
ইয়নহ্যাপ সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী গাল্ফ অফ এডেন এবং হরমুজ প্রণালীতে জলদস্যুদের হামলা প্রতিহত করতে গত বছর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার এই ডেস্ট্রয়ার রণতরীটি সোমালিয়া উপকূলের কাছে অবস্থান করছিল।
এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিই ইরানের প্রথম একটি বড় জাহাজ আটক করার ঘটনা।