বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » সততা-নিষ্ঠা ও একাগ্রতা নিয়ে দেশ-মানুষকে ভালোবেসে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
সততা-নিষ্ঠা ও একাগ্রতা নিয়ে দেশ-মানুষকে ভালোবেসে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা: সততা-নিষ্ঠা ও একাগ্রতা নিয়ে দেশ ও মানুষকে ভালোবেসে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ৭৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অনুষ্ঠিত প্যারেডের সালাম গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সব সময় এ কথা মনে রাখতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের জন্য কর্তব্য পালন করতে হবে।
তোমরা যে শপথ গ্রহণ করেছে, এ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বিরাট দায়িত্ব কাঁধে পড়লো, সে কথা সব সময় মনে রাখতে হবে।
একটা কথা মনে রাখতে হবে, তোমরা এদেশের সন্তান, এদেশের গ্রামে গঞ্জে শহরে, তোমাদের মা-বাবা সবাই ছড়িয়ে আছেন।
দেশের উন্নতি হলে সবার উন্নতি হবে। দেশ শান্তিতে থাকলে সবাই শান্তিতে থাকবে।
সে কথা সব সময় মনে রেখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য যথাযথভাবে অবদান রেখে যাবে, এটাই আমরা চাই, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রাকৃতিক দুযোর্গসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের জন্য সব কিছু করা, আমাদের সেনাবাহিনী মানুষের জন্যই, জনগণের সেনাবাহিনী, জনগণের পাশেই দাঁড়াবে। এজন্য যে কোনো দুযোর্গ মোকাবিলায় আমাদের সেনাবাহিনীর মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য সহযোগিতা করে।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে পার্সিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সে ভাষণ উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসাবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবাইসো। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা, গুরুজনকে মেনো, সৎ পথে থেকো, শৃঙ্খলা রেখো, তা হলে জীবনে মানুষ হতে পারবা’।
জীবন চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বলেন, জীবনে সবচেয়ে বড় কথা সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং দেশ মাতৃকাকে ভালোবাসা। জাতির পিতার এ নির্দেশনা, এ উপদেশ চলার পথে সব সময় মনে রাখবে।
সেনা সদস্যদের সফলতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তোমাদের পরিবারেরই একজন। তোমাদের প্রতি আমার সব সময় দোয়া ও আর্শিবাদ থাকবে। তোমরা দেশকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসবে। মানুষের জন্য কর্তব্য পালন করবে। যেন এদেশ এগিয়ে যেতে পারে, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হতে পারে।
তিনি বলেন, তোমরা নেতৃত্বে আরও সফল হও, দক্ষ হও, সুশিক্ষিত হও, দেশ-জাতি তোমাদের জন্য সব সময় গর্ববোধ করবে, সেটাই আমরা চাই।
আত্মবিশ্বাস নিয়ে পথ চলার উপদেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী একটি দেশ। এ কথা সব সময় মনে রাখতে হবে। এ কথা মাথায় রেখে আমরা বিশ্ব দরবারে যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি, সেভাবে নিজেদের তৈরি করতে হবে এবং দেশের মান মযার্দা সমুন্নত রাখতে হবে।
আধুনিক ও দক্ষ সেনাবাহিনী গড়তে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্বপালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত থাকবে। আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হবে। সারা বিশ্বের যেখানেই যাবে, সেখানেই যেন বাংলাদেশের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখে, সেদিকে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।
যথাযথভাবে দায়িত্বপালন করার তাগিদ দিয়ে নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ আরও উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে। তখন আরও উঁচুমানের অফিসার হিসেবে তোমরাই দায়িত্বপালন করবে। আজকে যারা নবীন, তাদের ওপরই দায়িত্ব আসবে। আমার ২০৪১ এর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হিসেবে তোমরাই কাজ করবে, তোমরাই দায়িত্ব পালন করবে। সুতরাং সে কথা মাথায় রেখে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ভাটিয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিএমএ ৭৯তম দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে ১১৬ জন বাংলাদেশি, তিনজন ফিলিস্তিনি এবং একজন শ্রীলংকান ক্যাডেটসহ সর্বমোট ১২০ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেছেন।
চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেটদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।