বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » আমেরিকায় নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্প-বাইডেনের বিতর্কে বিশৃঙ্খলা
আমেরিকায় নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্প-বাইডেনের বিতর্কে বিশৃঙ্খলা
বিবিসি২৪নিউজ, ফরিদা ইয়াসমিন, যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রথমবার বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছিলেন ও রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী এই ‘বিতর্ক’ ঠিক কীরকম হতে যাচ্ছে তা আগে থেকেই অনেকটা পরিষ্কার ছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল বাইডেনকে বিব্রত করা, যা নিশ্চিত করতে তিনি ক্রমাগত বাইডেনের কথার মধ্যে তাকে বাধা দিয়েছেন। এর ফলে ৯০ মিনিটের বিতর্কের মধ্যে বেশ কয়েকবার দু’জনের মধ্যে বচসা হয়েছে। ট্রাম্প যেমন প্রশ্ন তুলেছেন বাইডেনের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে, তেমনি বাইডেনও ট্রাম্পকে ‘ক্লাউন’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বাইডেন প্রশ্ন করেন যে: “তুমি কি চুপ করবে?”
বিতর্কের মধ্যে বাইডেনের কথা থামিয়ে দিয়ে বারবার তাকে বাধা দিয়েছেন ট্রাম্প, জবাবে একপর্যায়ে ডেমোক্র্যাট বাইডেনের স্মিত হাসির সাথে মাথা ঝাঁকিয়েই হতাশা প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।
এমনকি এক পর্যায়ে বিতর্কের সঞ্চালক ক্রিস ওয়ালেস যখন দুই পক্ষকে করোনাভাইরাস নিয়ে আড়াই মিনিট করে বাধাহীনভাবে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেন, তখন বাইডেন ট্রাম্পের ক্রমাগত কথার মাঝখানে বিরক্ত করার প্রবণতাকে কটাক্ষ করে ফোঁড়ন কেটে বলেন: “তার জন্য শুভকামনা।
এই বিতর্কে করোনাভাইরাস প্রসঙ্গটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল এবং বিতর্কের শুরুর দিকেই এবিষয়ে আলোচনা হয়। করোনাভাইরাসে দুই লাখ মানুষ মারা যাওয়ায় ট্রাম্পের কাছ থেকে ব্যাখ্যা আশা করছিল মানুষ।
তিনি অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই বলে যে তিনি পদক্ষেপ না নিলে আরো বহু মৃত্যু হতে পারতো এবং জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতো।
এর জবাবে বাইডেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে সরাসরি প্রশ্ন করেন যে তারা ট্রাম্পকে বিশ্বাস করেন কি না।
দীর্ঘ সময় সরকারি দায়িত্বে থাকা জো বাইডেনকে বিতর্কের এক পর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, “৪৭ মাসে (ক্ষমতায় থেকে) আমি যা করতে পেরেছি, আপনি ৪৭ বছরে তা পারেননি।”
বাইডেনের জবাব ছিল: “এই প্রেসিডেন্টের অধীনে আমরা আরো দুর্বল, অসুস্থ, দরিদ্র ও বিভাজিত হয়েছি।”
REUTERS
নির্বাচনের ফলাফল মেনে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেননি ট্রাম্প
নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ
বিতর্কের চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা ছিল নির্বাচনের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে। ঐ অংশে বামপন্থী ও দক্ষিণপন্থী দুই পক্ষই আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।
ট্রাম্পের আশঙ্কা ডাকের মাধ্যমে ভোট দেয়া হলে দুর্নীতির সুযোগ থেকে যায়।
বাইডেন দাবি জানান, সবগুলো ব্যালট যেন গণনা করা হয় এবং নির্বাচনের ফলাফল সব পক্ষ যেনে মেনে নেন। শেষদিকে তিনি আরো কিছু বলতে চাইলেও ট্রাম্প তাকে আবারো বাধা দিলে সঞ্চালক ওয়ালেস বিতর্কের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
‘বিশৃঙ্খলাপূর্ণ’ বিতর্ক সন্ধ্যার শেষটা অনেকটা হঠাৎ করেই হয়। আর এদিনের বিতর্কটা প্রথাগত কোন বিতর্কের মতও ছিল না।
এই ধরণের অনুষ্ঠান সাধারণত নির্বাচনের ফলাফলে কোন ভূমিকা রাখে না। আর ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রথম বিতর্কটা যতটা গণ্ডগোল ও পাল্টা দোষারোপের মধ্যে শেষ হয়েছে, এর ফলে খুব বেশি মানুষের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনাও নেই।