শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১
BBC24 News
শুক্রবার, ১৪ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » যশোরে কর্তৃপক্ষের মারধরে নিহত হয়েছে ৩ কিশোর
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » যশোরে কর্তৃপক্ষের মারধরে নিহত হয়েছে ৩ কিশোর
১১৮৫ বার পঠিত
শুক্রবার, ১৪ আগস্ট ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

যশোরে কর্তৃপক্ষের মারধরে নিহত হয়েছে ৩ কিশোর

---বিবিসি২৪নিউজ,যশোর,প্রতিনিধি : যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সংঘর্ষ নয়, বরং কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারধরে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দিদের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর বন্দিরা এমনই দাবি করেছে।

পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও প্রাথমিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ঘটনার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিষয়টি জানা গেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরের এ ঘটনায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দি নিহত ও ১৪ জন আহত হয়।

নিহতরা হলো- বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্ব পাড়ার নান্নু পরমাণিকের ছেলে নাঈম হোসেন, একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন ও খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি। নিহত নাঈম ধর্ষণ ও রাব্বি হত্যা মামলার আসামি ছিল।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে আসলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। আজকের ঘটনাটি একপক্ষীয়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটির প্রায় ছয় ঘণ্টা পর জানা গেছে। স্থানীয় সংবাদকর্মীরাও ঘটনা জেনেছেন সন্ধ্যার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। তিনি নিজেও রাত ১০টার পর ঘটনা জেনে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে এসেছেন। এখানে কী হয়েছে এবং কেন হয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদন্ত হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরদের স্বজনরা মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে। তদন্তাধীন ঘটনা হওয়ায় এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

.

রাতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, কীভাবে এ কিশোররা হতাহত হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পরই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এদিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি বন্দি কিশোররা তুলে ধরেন তাদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা।

তারা জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ আগস্ট। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের আনসার সদস্য নূর ইসলাম কয়েকজন কিশোরের চুল কেটে দিতে চান। কিন্তু কিশোররা চুল কাটতে রাজি না হওয়ায় তিনি কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন ওই কিশোররা নেশা করে। এর প্রতিবাদে ওইদিন কয়েকজন কিশোর তাকে মারধর করেন।

আহত কিশোরদের দাবি, ওই ঘটনার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ১৮ জন বন্দিকে রুম থেকে বাইরে বের করে আনা হয়। এরপর বিকেল ৩টা পর্যন্ত পালাক্রমে তাদের লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এভাবে মারধরের পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ফেলে রাখা হয়। পরে কয়েকজন মারা গেলে সন্ধ্যার দিকে তাদের মরদেহ যশোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সূত্র জানায়, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আনসার সদস্য ও তাদের নির্দেশে কয়েকজন কিশোর ওই ১৮ জনকে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের ফেলে রাখা হয়। কয়েকজন অচেতন থাকায় তারা অজ্ঞান হয়ে গেছে মনে করলেও পরে তারা বুঝতে পারে এরা নিহত হয়েছে। এরপর সন্ধ্যায় এক এক করে তাদের মরদেহ হাসপাতালে এনে রাখা হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ দীর্ঘসময় পর সন্ধ্যা ৭টায় রাব্বি, সুজন ও নাঈমকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাস বলেন, দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মরদেহ আসে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে। সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে নাইম হাসান, সাড়ে ৭টায় পারভেজ হাসান ও রাত ৮টায় আসে রাসেলের মরদেহ।

এ চিকিৎসক বলেন, একজনের মাথায় ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। অন্যদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন এখনও শনাক্ত হয়নি।

তিন কিশোরের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে খবর পেয়ে সেখানে সংবাদকর্মীরা ভিড় করেন। তখন হাসপাতালে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কাউকে পাওয়া যায়নি। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে বক্তব্য নেওয়ার জন্য স্বশরীরে উন্নয়ন কেন্দ্রে যাওয়া হলেও কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা জানান, ভেতরে পুলিশ ছাড়া অন্য কারো প্রবেশ নিষেধ।

এক পর্যায়ে কেন্দ্রের প্রশিক্ষক মুশফিক দাবি করেন, কয়েকদিন আগে সংশোধনাগারে শিশুদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর আবার সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নাইম, রাব্বি ও রাসেল হোসেন গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ দাবি করেন, সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

এসময় তারা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি পাভেল ও রবিউলের নেতৃত্বাধীন দু’টি গ্রুপ রয়েছে। এ দুই গ্রুপ দুপুর ২টার দিকে লাঠি ও রড নিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হয়। এতে হাতহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত তিনজন হলো- রাব্বি, রাসেল ও নাঈম। এরমধ্যে পাভেল গ্রুপের সদস্য রাব্বি ও রাসেল আর রবিউল গ্রুপের সদস্য নাঈম।

যশোর পুলিশের ডিএসবি ডিআই-১ পুলিশ পরিদর্শক এম মশিউর রহমান জানান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে এ ঘটনা দুপুরে ঘটলেও মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে সন্ধ্যার পর।

ঘটনা জানাজানির পর রাতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে যান যশোরের জেলা প্রশাসন তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা। মধ্যরাতে খুলনা থেকে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম।

বালকদের জন্য দেশে দু’টি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র আছে। যার একটি গাজীপুরের টঙ্গীতে, অন্যটি যশোর শহরতলীর পুলেরহাটে। কিশোর অপরাধীদের জেলখানায় না পাঠিয়ে সংশোধনের জন্য এ উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তর এ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রক। যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রায়ই অঘটন ঘটে। মরদেহ উদ্ধার, মারধরের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা, দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে অনিয়ম জেকে বসেছে। এর আগে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি এ তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য একগুচ্ছ সুপারিশ করেছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি বরং অবনতি হয়েছে। তিন মরদেহ উদ্ধারের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর