সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা,চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা,চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক,ঢাকা: বর্ষা বা বৃষ্টি মানেই রাজধানীবাসীর কাছে একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার নাম। আর এর কারণ হলো জলাবদ্ধতা।বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে, মূল সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গতরাত থেকে সকাল পর্যন্ত এতে করে সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েছেন কাজে বের হওয়া মানুষরা। অনেক স্থানে রাস্তা ও ফুটপাত তলিয়ে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জলাবদ্ধ রাস্তা, ঝড়ছে বৃষ্টি, সেই সঙ্গে নেই পর্যাপ্ত গণপরিবহন। সোমবার (২০ জুলাই) সকালে যারা কাজে বেরিয়েছিন তাদের পড়তে হয়েছে এমন সীমাহীন বিড়ম্বনায়। সকাল থেকে রাজধানীতে বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সড়ক। পানিতে ডুবে থাকা সড়কের মধ্যদিয়ে যখন যানবাহন চলছে তখনই সড়কে উঠছে ঢেউ।
আজকের বৃষ্টিতেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, পুরান ঢাকা, খিলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি উঠে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন কাজে বেড় হওয়া কর্মজীবী মানুষ।
মতিঝিল এলাকায় অফিসে করতে আসা হুমায়ন কবীর বলেন, ‘সকালে অফিসে আসার সময় আমার মতো অনেককে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। প্রায় সব রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক রাস্তায় হাঁটু পানি, কোথাও তারচেয়েও বেশি। রিকশায় চলাচল করায় সময়ও পুরো রিকশার চাকা পানিতে ঢুবে যাচ্ছিল।’ তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই রাজধানীবাসীর এমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এটার কি কোনো প্রতিকার নেই?
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। মিরপুরে মনে হয়ে আরও একটু বেশি হয়। আজও তেমনটাই হয়েছে। এতে করে সকালে আমরা যারা কাজে বেরিয়েছি, জলাবদ্ধতার কারণে পড়েছি মহাবিপদে।’ তিনি বলেন, প্রতিবছর মিরপুুরে এমন জলাবদ্ধতা হয় কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কেউ স্থায়ী সমাধান করেন না।
এদিকে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় দুইদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। দেশের সব সমুদ্রবন্দরে রয়েছে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা। এ অবস্থায় আজও দেশের ১৬টি অঞ্চলে দিনের প্রথমভাগে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সেসব অঞ্চলের নদীবন্দরকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২০ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকতে পারে। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।আর কত দিন এমন সিনারি (দৃশ্য) দেখতে অইবো। প্রতিবছরই রাস্তা কাইট্যা বড় বড় পাইপ বহায়। শুনি সামনের বছর আর পানি জমবো না। কিন্তু কই, উন্নয়নের জোয়ারে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলাইয়া গেছে।’ সোমবার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের দক্ষিণ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এমন করোনায় এমনিতেই জীবন চালানো দায়। কামরাঙ্গীরচর থাইক্যা প্রত্যেকদিন হাঁইট্যা গার্মেন্টসে যাই। মাসের শেষ হাতে টাকা নাই। দশ টাকা দিয়া ভ্যানগাড়িতে পার হওয়ার ক্ষেমতা নাই। অহন ভিজা শাড়ি লইয়া পানি ভাইঙ্গা গার্মেন্টসে গিয়া কেমনে রাত পর্যন্ত ডিউটি করুম।’
এ সময় এ পথে আশপাশের ছোটবড় মার্কেট, শপিংমল, গার্মেন্টস, হাসপাতাল এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গন্তব্যে ছুটে যেতে দেখা যায়। কবরস্থানের সামনে থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত থৈ থৈ পানি।