মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | রাজনীতি | সর্বশেষ সংবাদ » সাংসদ শহীদ-মোকাব্বির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
সাংসদ শহীদ-মোকাব্বির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা: আরও দুজন সংসদ সদস্য কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সংসদ সচিবালয়ের মোট ৬৭ কর্মীর দেহেও সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংসদ সদস্যদের মধ্যে নতুন আক্রান্ত দুজন হলেন সাবেক প্রধান হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এবং গণফোরামের নেতা মোকাব্বির খান। এর মধ্যে মোকাব্বির চলতি বাজেট অধিবেশনেও যোগ দিয়েছিলেন।এই দুজনকে নিয়ে মোট ১১ জন আইনপ্রণেতা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন।
এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং রয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে নওগাঁর সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের সুস্থ হয়েছেন।
সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি শহীদ বর্তমানে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
তার একান্ত সচিব আহাদ মো. সাঈদ হায়দার বলেন, “স্যারের করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট পজেটিভ এসেছে। তার শ্বাসকষ্ট নেই। তবে জ্বর আছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শহীদ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর আগে তার ব্যক্তিগত সহকারীও আক্রান্ত হয়েছিলেন, তবে তিনি এখন সুস্থ। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন শহীদ।
এবার অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে সিলেট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মোকাব্বির সোমবার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি হন।
তার ব্যক্তিগত সহকারী জুবের খান বলেন, “আজ (মঙ্গলবার) স্যারের করোনা পজেটিভ এসেছে। তিনি মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। জ্বর কমেছে। কিছুটা শ্বাসকষ্ট আছে।”
গণফোরামের মোকাব্বির বাজেট অধিবেশন শুরুর দিন ১০ জুন সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত অন্য সংসদ সদস্যরা হলেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের মোছলেম উদ্দিন আহমদ, যশোরের অভয়নগর-বাঘারপাড়া আসনের রণজিৎ কুমার রায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এবাদুল করিম বুলবুল, জামালপুরের ফরিদুল হক খান, চট্টগ্রামের মোস্তফিজুর রহমান চৌধুরী। আক্রান্তদের মধ্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সম্প্রতি মারা গেছেন।
সংসদ সচিবালয়ের মোট ৬৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেহে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে শুরু হওয়া কোভিড-১৯ পরীক্ষার পর সোমবার পর্যন্ত ৬৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়।
সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. নুরুজ্জামান “আক্রান্তদের সবাই অবশ্য সরাসরি সংসদ সচিবালয়ের নয়। এখানে সংসদ ভবন সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।”
বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে সংসদে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা ২ জুন থেকে শুরু হয়েছিল। ৮ জুন ওই পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে এসএসএফের সুপারিশে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ওই সময় সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাফর আহমেদ খান বলেছিলেন, “যাদের পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ এসেছে, তাদের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সংসদের মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকরা তাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছেন।”
যাদের নমুনা পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ এসেছে, তাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সংসদের নিরাপত্তা দপ্তর থেকে তাদের সংসদে না যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাস সঙ্কটকালে চলমান বাজেট অধিবেশনে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। এক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং বয়স্ক সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
অধিবেশন চলাকালে কক্ষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায়ও বড় ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সাময়িকভাবে আসন বিন্যাসেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে।