শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১
BBC24 News
মঙ্গলবার, ২ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে কি ধরনের সেবা পাচ্ছে ?
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে কি ধরনের সেবা পাচ্ছে ?
১৩২২ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ২ জুন ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে কি ধরনের সেবা পাচ্ছে ?

---বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক,ঢাকা:বাংলাদেমে গত ২৪শে মে সব ধরণের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার নির্দেশ দেয় সরকার।

বেশ কয়েক দিনের জ্বরে ভোগার পর এক পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা দেখা দেয় সুমাইয়ার (ছদ্মনাম)। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে সুমাইয়ার মা তাকে বাংলাদেশ মেডিকেলে নিয়ে যান ভর্তি করতে।

তবে তার সমস্যার সাথে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মিল থাকার কারণে সেখানে তিনি ভর্তি হতে পারেননি।

পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শরীরে জ্বর থাকার কারণে সেখানেও ভর্তি না নিয়ে পাঠানো হয় বার্ন ইউনিটে। সেখানে জায়গা না পেয়ে এর পর সুমাইয়া যান মুগদা জেনারেল হাসপাতালে। তবে শয্যা সংকটের কারণে সেখানেও ঠাই হয়নি তার।

শেষমেশ সুমাইয়া ভর্তি হন কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে।

সুমাইয়া বলছিলেন, হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার মা তাকে রেখে বাড়িতে চলে যান। তবে ভর্তি হওয়ার ৪-৫ ঘণ্টা পরও কোন সেবা পাননি সুমাইয়া।

“ভর্তি হইছি, কিন্তু আমার বুকে জ্বালাপোড়া কমছিল না। ৪-৫ ঘণ্টা কোন ডাক্তার-নার্স কেউ আসে নাই আমাকে দেখতে। একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়া হইছে, কিন্তু সেইটাও আমি পড়তে পারি না,” বলেন তিনি।

“ডাক্তাররা এমন ভাব করে যেন করোনা হওয়ার কারণে কোন অপরাধ করে ফেলছি আমি।”

এদিকে হাসপাতালে মেয়ের এমন কষ্ট মেনে নিতে না পেরে নিজে অসুস্থ না হলেও একই হাসপাতালে ভর্তি হন সুমাইয়ার মা। দেখাশোনা করেন মেয়ের। দিন সাতেক পরে তার অবস্থার উন্নতি হলে সুমাইয়ার মা বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে তার করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ আসলে তিনি চলে যান।

এই সময়ে মধ্যে অনেকটাই সুস্থ হয়ে যান সুমাইয়া নিজেও। তবে তিনি অভিযোগ করছেন যে, তিনি সুস্থ হলেও হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না।

পর পর দুটি পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসার পর ছাড়পত্র দেয়ার নিয়ম থাকায় তিনি বাড়ি ফিরতে পারছেন না।

“২৩ তারিখে একবার পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়েছে। সেই পরীক্ষার ফল এখনো পাই নাই।”

এর পরে আরেক দফায় নমুনা নেয়া হয়েছে সুমাইয়ার। তবে সেটিরও এখনো ফল পাননি তিনি।

“হাসপাতালে জিজ্ঞাসা করলে বলে যে আইইডিসিআর দেয়নি। আর আইইডিসিআর এর যারা নমুনা নিতে আসে তাদের জিজ্ঞাসা করলে বলে যে রিপোর্ট দিয়ে দিছে। আমরা আসলে কার কাছে যাবো?” বলেন সুমাইয়া।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কারণে ছাড়পত্র আর পরীক্ষার ফল ছাড়া বাড়িতে ফিরতে পারবেন না তিনি। এছাড়া তার কর্মস্থলেও এই ফল দেখাতে হবে তাকে।

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে এটিই একমাত্র ঘটনা নয়। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন এবং এখনো ভর্তি রয়েছেন এমন বেশ কয়েক জন রোগী ও তার আত্মীয়ের সাথে কথা হয়। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি।

তারা জানান, হাসপাতালটির চিকিৎসক এবং নার্সদের পাওয়া যায় না। সকাল এবং সন্ধ্যা ছাড়া তারা রোগীদের দেখতে আসেন না। এ সময়ের মধ্যে যদি কোন রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়েও পড়ে তাহলেও কোন চিকিৎসককে পাওয়া যায় না।

“অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে অন্তত এক ঘণ্টা আগে থেকে ওয়ার্ড বয়দের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। তারা আসি আসি করে আসেনা। আপনি যদি না জানেন যে এরকম করতে হয়, তাহলে দেখা যাবে যে আপনার রোগীর অক্সিজেন শেষ কিন্তু আপনি সিলিন্ডার পান নাই,” একথা বলছিলেন নিজের আত্মীয়ের চিকিৎসা করাতে আসা একজন।

তিনি বলেন, চিকিৎসক আর নার্সদের পাওয়া যায় না বলেই আত্মীয়ের দেখাশুনা করতে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি। তিনি জানান তার মতো আরো অনেকেই কোভিড রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতালে রয়েছেন।

“রোগীর কোন সমস্যা হলে ফোন নম্বরে ফোন দিতে হয়। সেখান থেকে বলে দেয় যে কি করতে হবে। আপনি করতে পারলে ভাল। আর না পারলে তো কিছু করার নাই।”

তবে তার নিজের কোন নমুনা এখনো পরীক্ষা করানো হয়নি বলে জানান ওই ব্যক্তি।

প্রায় ১০ দিনের মতো কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়েছেন তৈরি পোশাক শিল্পের এক কর্মী। দুদিন হলো ছাড়া পেয়েছেন তিনি।

ওই ব্যক্তি বলেন, দুই দফায় নমুনা দেয়ার পরও মাত্র এক দফা নমুনা পরীক্ষার ফল পেয়েছেন তিনি। সেটিতে নেগেটিভ আসার পর পরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, চিকিৎসকদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি।

“আগে পড়েছি, `ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী মারা গেলো`, এই হাসপাতালে সেটাই হচ্ছে। রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও কেউ আসে না। ডাক্তার আসার আগেই রোগী মারা যায়। আমি চোখের সামনে এমন দুজন রোগীকে মারা যেতে দেখেছি,” বলেন তিনি।

এদিকে অনেক রোগী এবং তার স্বজনরা জানিয়েছেন যে, অনেক কোভিড হাসপাতালেই সরাসরি গিয়ে ভর্তি হতে পারছেন না অনেক রোগী।

এক আত্মীয়ের করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি।

তবে একাজটি সরাসরি করাতে পারেননি মি সৈকত। বরং পরিচিত একজনের সুপারিশের পরই ভর্তি করাতে পেরেছিলেন তারা।

“আমার এক কাজিন বাংলাদেশ ব্যাংকে কাজ করেন। তার সহকর্মীর স্ত্রী ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক। তার সুপারিশেই আমার বোনকে ভর্তি করাই,” বলেন মি সৈকত।

এদিকে ভর্তি করলেও রোগীর কাছে তেমন যায়নি চিকিৎসা কর্মীরা। রোগীর বাবা তার সাথে থেকে দেখাশুনা করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের পরিচালক ডা. একেএম সারওয়ার-উল আলম বলেন, এ বিষয়ে তার জানা নেই। তবে এসব অভিযোগ বাস্তবিক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাসপাতালটির সুপারিটেনডেন্ট ডা. মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন বলেন, রোগী বেড়ে যাওয়ায় তারা চাপের মুখে রয়েছেন। আর রোগীর সাথে তাদেরকেই থাকতে দেয়া হচ্ছে যারা আগে থেকেই ছিলেন।

“বিষয়টি এমন নয় যে আমরা সমন্বয় করতে পারছি না। আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু রোগী বেড়ে গেছে বলে সবাই চাপের মুখে রয়েছে।”

“দুই এক জন রোগীর সাথে হয়তো স্বজনরা রয়েছেন। কিন্তু কোভিড রোগীদের সাথে তাদেরকেই থাকতে দেয়া হচ্ছে যারা আগে থেকে বাড়িতে তাদের সেবা করেছেন। এমনকি তাদের নমুনাও পরীক্ষা করা হচ্ছে,” বলেন মি. উদ্দিন।

“আমাদের পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। সেটা করে আইইডিসিআর। তারা গত তিন দিন না আসায় সংকট তৈরি হয়েছে। কিন্তু এটা ঠিক হয়ে যাবে।”

করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত তিন মাসে গড়িয়েছে বাংলাদেশ।

কোভিড-১৯ ভুক্ত হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চিকিৎসায় বরাবরই অভিযোগ থাকলেও এতো দিনেও কেন কোন সমন্বয় আনা সম্ভব হচ্ছে না এমন প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন বিভাগের সাথে সমন্বয়হীনতাই এর কারণ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রধান করে স্বাস্থ্য বিষয়ক যে জাতীয় সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে সেটিও আমলা নির্ভর। যার কারণে পুরো ব্যবস্থাপনা সমন্বয়হীন।

“এমন একটি কমিটিতে মহামারি নিয়ে কাজ করেন বা জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন এমন কেউ নেই। যার কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার চোখে পড়ছে।”

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্রমতে, বাংলাদেশে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিতে মোট ১১০টি হাসপাতালে ২০ হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা মাত্র চারটি।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর