মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » উত্তর কোরিযার প্রেসিডেন্ট কিম জং–উন গুরুতর অসুস্থ
উত্তর কোরিযার প্রেসিডেন্ট কিম জং–উন গুরুতর অসুস্থ
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর কোরিযার নেতা কিম জং–উন হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর গুরুতর অসুস্থ ,মস্তিষ্কে কোন সাড়া নেই’,—এমন প্রতিবেদন সঠিক নয় বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। অস্ত্রোপচারের পর ‘গুরুতর অসুস্থ কিম জং উন, মস্তিষ্কে সাড়া নেই’, এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তা যাচাই করা অসম্ভব। তবে সিউলে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলছে, ৩৬ বছর বয়সী উত্তর কোরিয়ার নেতা ‘গুরুতর অসুস্থ’, এমন কিছু বলার বিশেষ কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
কিম জং–উনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে গুঞ্জন এটাই প্রথম নয়। এর আগেও তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। পরে অবশ্য তা স্রেফ গুজব বলে প্রমাণিত হয়।
কেন এই গুঞ্জন?
১৫ এপ্রিল ছিল কিমের দাদার জন্মদিন। এ উপলক্ষে ওই দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন কিম। এটি অনেক বড় বিষয়। কারণ কিমের দাদা উত্তর কোরিয়ার জাতির জনকের জন্মদিন দেশটির জন্য খুব বড় অনুষ্ঠান। কিম জং-উন কখনো এ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেননি। সবার ধারণা, তিনি এ অনুষ্ঠানে থাকবেন না, তা হতেই পারে না। তার এই অনুপস্থিতিই এই গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। তবে ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বিমানবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন কিম, এমন খবর সম্প্রচার হয়েছে। বরাবরের মতো শান্ত ও সোম্য রূপেই দেখানো হয় তাঁকে। অবশ্য এর আগের দিন ১১ এপ্রিল সরকারি এক সভায় যোগ দেন কিম। এরপর তাঁকে আর দেখা যায়নি।
উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে প্রতিবেদন করা বেশ কঠিন। তাই বেশির ভাগ বিষয় জল্পনা থেকে উঠে আসে। এর মধ্যে গত জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের কারণে সীমান্ত লকডাউন করেছে উত্তর কোরিয়া। এরপর দেশটিতে কী হচ্ছে, তা জানা আরও বেশি দুরূহ হয়ে উঠেছে।
অসুস্থতার খবর প্রথম জানাল যারা
গত মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ায় কিমবিরোধী পক্ষ দ্বারা পরিচালিত একটি ওয়েবসাইটে প্রথম কিমের অসুস্থতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র ‘ডেইলি এনকেকে’ জানায়, তারা বুঝতে পেরেছে গত আগস্ট মাস থেকে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন কিম। এর মধ্যে বারবার মাউন্ট পেকটুতে সফর করায় তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। এই সূত্রের বরাত দিয়েই আন্তর্জাতিক মিডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সংবাদ সংস্থাগুলো প্রথমে কেবল এই দাবিটুকু নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরের প্রতিবেদনে কেবল যোগ করা হয়, মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এরপর মার্কিন গণমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর শিরোনাম হয়, ‘উত্তর কোরিয়ার নেতা হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পরে গুরুতর অসুুস্থ’। তবে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয় যে এই তথ্য সঠিক নয়। এ ছাড়া চীনা গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে বার্তা সংস্থা রয়টার্সও এটি মিথ্যা বলে জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, কোনো প্রতিবেদনে এটা অস্বীকার করা হয়নি যে কিম জং–উনের হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন থেকে পাওয়া বিবৃতিগুলো কেবল এটা অস্বীকার করেছে যে উত্তর কোরিয়ার নেতা গুরুতর অসুস্থ। উত্তর কোরিয়ার জনগণকে সাধারণত তাদের নেতার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা হয় না।
‘নিখোঁজ’ বলে খবর
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে ৪০ দিন দেখা পাওয়া যায়নি কিমের। গুজব ওঠে, অন্য রাজনৈতিক দলের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আবার দেখা পাওয়া যায়। বেত হাতে চমৎকার একটি ছবির মাধ্যমে ফিরে আসেন তিনি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সে সময় স্বীকার করে যে তিনি কিছুটা শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তবে তিনি বাতজনিত রোগ গাউটের সমস্যায় ভুগছেন, এমনটা স্বীকার করেনি।
কিমের উত্তরাধিকারী কে?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কিমের যদি কিছু হয়েই যায়, তবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন কে? কিমের পরে কে আসবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বাবার পর দায়িত্ব নেন কিম। বলা হয়ে থাকে, কিম রাজবংশ নিরাপদ। কিমের বোন কিম ও–জং কে পরবর্তী উত্তরাধিকারী ভাবা হয়। তিনি কেবল রাজবংশের রক্তই বহন করছেন না, রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়ও তিনি। গত মাসে প্রথম এক প্রকাশ্য বিবৃতিতে কিমের বোন জানান, ভাইয়ের সঙ্গে মূল সম্মেলনগুলোতে এখন থেকে যোগ দেবেন তিনি।
তবে যা–ই হোক না কেন, এখন জানার বিষয় কিম জং–উন কেমন আছেন? তিনি কি সত্যিই অসুস্থ, না আবারও বেত হাতে ফিরে আসবেন সগর্বে।