সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানাজায়,সাড়া বাংলাদেশকে ঝুকিঁতে ফেলেছে -মোকতাদির চৌধুরী এম পি-
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জানাজায়,সাড়া বাংলাদেশকে ঝুকিঁতে ফেলেছে -মোকতাদির চৌধুরী এম পি-
বিবিসি২৪নিউজ,এম ডি জালাল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফিরে : বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার যেখানে সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছেন। এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে মসজিদগুলোয় নামাজ পড়া এবং কবরস্থানে যেতেই বারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার বেড়তলা জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ১৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। মানুষের ভিড় মাদ্রাসার সীমানা ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গিয়ে ঠেকে।
মাওলানা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম নিয়ে “বিবিসি২৪নিউজের” সঙ্গে কথা বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩ নিবার্চনী এলাকার সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী-
তিনি জানান, বেড়তলা জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে সেটা তার নির্বাচনী এলাকা নয়, সেটি বিএনপি নিবার্চনী এলাকা এবং সেখানে বিএনপির একজন সাংসদ আছেন। ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমি নিন্দা জানায়, এটা কোন ভাবে গ্রহন যোগ্য নয়।
যারা বিভিন্ন লগডাউন এলাকার থেকে- লকডাউন ঘোষণা উপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও ঢাকা, নরসিংদী, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা থেকে অসংখ্য মানুষ জানাজায় এসেছেন তারা কি ভাবে আসল জানার বিষয়। এরা শুধু ব্রাক্ষণবাড়িয়াকে ঝুকিঁতে ফেলে দেয় না সাড়া বাংলাদেশকে ঝুকিঁতে ফেলেছে।
তিনি বলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মোল্লা মাওলানা সাহেবরা একটা ফ্যাক্টর। জানাযায় যারা অংশ গ্রহন করেছেন ৯৫% মাদ্রসার ছাত্রও হুজুর, জানাযার নামাজ ফরজে কেফায়া প্রত্যেক এই নামাজে অংশগ্রহন করার দরকার নেই। তারা বিষয়টি পরিকল্পনা করে মাকিং করে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ার প্রসংঙ্গে তিনি বলেন,আনসারীর জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঠেকাতে প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার (অপরাধ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন (প্রশাসন)।তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। কমিটিকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি তার পর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
ঐ দিন সকাল আটটা থেকে লোকজন বেড়তলা মাদ্রাসার মাঠে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ লোকসমাগম ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা হয়। সবাই এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করেন।
আনসারী গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজের বাসায় মারা যান। তিনি ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে হেরে যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
গতকাল যে স্থানে যোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজা হয়েছে, তার আশপাশের সরাইল ও সদর উপজেলার আটটি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দাকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে সরাইল উপজেলার বেড়তলা, শান্তিনগর, শীতাহরণ ও বড়ইবাড়ি, আশুগঞ্জ উপজেলার বগইর ও খড়িয়ালা এবং সদর উপজেলার মলীহাতা ও বুধল গ্রাম।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, জেলা শহরের মোটরসাইকেলে করে একজনের বেশি চড়লে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জরিমানা করেন। কিন্তু গত শনিবার সকালে বিভিন্ন জেলার মানুষ ট্রাক,বাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক্টর, রিকশায় করে এখানে এসে জানাজায় অংশ নিয়েছে। সরাইল বিশ্বরোড হাইওয়ে থানার পুলিশ, আশুগঞ্জ টোল প্লাজা অতিক্রম করে সেখানে মোবাইল কোর্ট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ছিল নিরব।