শনিবার, ৭ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » শিরোনাম | সাবলিড » সর্বনাশা পদ্মা গিলল কনেসহ ৬ প্রাণ, এখনো নিখোঁজ ৩
সর্বনাশা পদ্মা গিলল কনেসহ ৬ প্রাণ, এখনো নিখোঁজ ৩
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীতে পদ্মানদীতে ইঞ্জিনচালিত দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত ছয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও নববধূসহ নিখোঁজ রয়েছেন তিন জন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বরপক্ষের বাড়ি থেকে ফেরার পথে নগরীর শ্রীরামপুরের বিপরীতে নৌকাডুবে এ ঘটনা ঘটে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল।হতাহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) পদ্মার ওপারে পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের রুমন আলীর (২৬) সঙ্গে এপারের ডাঙেরহাট গ্রামের সুইটি খাতুনের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুইটি শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন। পরেরদিন শুক্রবার কনেপক্ষ বরের বাড়ি থেকে নবদম্পতিকে আনতে যায়। অনুষ্ঠান শেষে নবদম্পতিকে সঙ্গে নিয়ে কনেপক্ষ সন্ধ্যার কিছু সময় আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুটি নৌকা করে রওনা দেন। পথিমধ্যে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় পৌঁছলে একটি নৌকা ডুবে যায়। এ সময় অন্য নৌকায় থাকা যাত্রীরা হুলস্থুল করে পানিতে লাফ দিতে শুরু করে। এতে করে ভারসাম্য হারিয়ে সেই নৌকাটি ডুবে যায়।
শনিবার (৭ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে শ্রীরামপুরের বিপরীতে নৌকাডুবির ঘটনাস্থলের খুব কাছাকাছি স্থান থেকে রতন আলী (৩২) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নিখোঁজ নববধূ সুইটি খাতুন পূর্ণির দুলাভাই। দুপুর দেড়টার দিকে একই স্থান থেকে এখলাস হোসেন (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় জেলেরা। সে উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আসলাম আলীর ছেলে। বিকেলের দিকে সুইটির চাচা মো. শামীম (৩১) ও তার মেয়ে রশনিকে (৮) উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শনিবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে জেলার চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর সীমান্ত থেকে সুইটির ফুপু মনি বেগম (৪২) এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই মরিয়ম খাতুন (৮) নামে এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও হাসপাতালে ভর্তি করার পর শিশুটিও মারা যায়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, এ পর্যন্ত ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। তবে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। সবাইকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, নৌকাডুবির ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিটিতে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলামকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন- পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিআইডব্লিউটি, পুলিশ, নৌ-পুলিশের একজন করে প্রতিনিধি।
শনিবার (৭ মার্চ) সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তারপর কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে।