মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় | শিরোনাম | সাবলিড » পদ্মাসেতুতে বসল ২৪তম স্প্যান, দৃশ্যমান হলো ৩৬০০ মিটার
পদ্মাসেতুতে বসল ২৪তম স্প্যান, দৃশ্যমান হলো ৩৬০০ মিটার
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক:শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর ২৪তম স্প্যান ‘৫-এফ’ সেতুর ৩০ ও ৩১ নম্বর পিলারের উপর বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো ৩ হাজার ৬০০ মিটার (৩.৬ কিলোমিটার)। একের পর এক স্প্যান বসিয়ে এভাবেই স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণ হচ্ছে।২৩তম স্প্যান বসানোর ৯ দিনের মাথায় ২৪তম স্প্যানটি বসানো সম্ভব হলো। গাড়ি কিংবা ট্রেনে চড়ে পদ্মাপাড়ি বাস্তবে রূপ নেবে আর ১৭টি স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে।
আজ দুপুর ১টা ২০ মিনিটে স্প্যান বসানো শেষ হয়। মূল সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, সকাল ৯টায় ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে অস্থায়ীভাবে রাখা ১২ ও ১৩ নম্বর পিলার থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন নিয়ে রওনা করে। সেতুর ৩০ ও ৩১ নম্বর পিলারের কাছে পৌঁছায় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে।
প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, ভাসমান ক্রেনটি নোঙর করে পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। তবে স্প্যানবহনকারী ক্রেনটিকে নির্দিষ্ট স্থানে নোঙর করতে বেশি সময় লেগেছে। কাদা মাটির স্তরে ক্যাবলের মাধ্যমে অ্যাংকরিং করতে সমস্যা পোহাতে হয় প্রকৌশলীদের। জটিলতা শেষে দুই পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর রাখা হয় স্প্যানটিকে। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আগে থেকেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
জানা যায়, পদ্মাসেতুতে প্রথম স্প্যান ‘৭-এ’ ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৭-বি’ সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৭-সি’ সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান ‘৭-ই’ সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান ‘৭-এফ’ সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘১-এফ’ সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান ‘৬-এফ’ সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ই’ সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ডি’ সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান ‘৩-এ’ সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান ‘৬-সি’ সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান ‘৩-বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান ‘৩-সি’ সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘৪-এফ’ সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৪-ই’ সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান ‘৩-ডি’ সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর। ২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৪-ডি’। ১১ ডিসেম্বর ‘৩-ই’ স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিলারে উপর বসে স্প্যান ‘৪-সি’। ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান ‘৩-এফ’। ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘৬-বি’ স্প্যান বসে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের উপর। ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তে ৫ ও ৬ নম্বর পিলারে বসে ‘ওয়ান-ই’ স্প্যান। ২ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারে বসে ‘৬-এ’ স্প্যান।
পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। পদ্মাসেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।