শিরোনাম:
●   পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ●   ট্রলারসহ ৫৬ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি ●   বাংলাদেশে চলাফেরা নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে নারী ●   আমেরিকার স্বর্ণ যুগ সবে শুরু হয়েছে: কংগ্রেসে ভাষণে ট্রাম্প ●   বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ●   ৪ হাজার ৬১৫ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ ●   দ.আফ্রিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ড ●   জাতিসংঘে তুলে ধরল বাংলাদেশে বর্বরতার চিত্র ●   প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ ●   মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার হবে: ড. ইউনূস
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১
BBC24 News
বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » জাতীয় | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে চলাফেরা নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে নারী
প্রথম পাতা » জাতীয় | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে চলাফেরা নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে নারী
৬০ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশে চলাফেরা নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে নারী

---বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷ নারীদের নিরাপত্তার উপর এর প্রভাব পড়েছে বলে ডিডাব্লিউকে জানান কয়েকজন নারী৷ তবে পুলিশের দাবি, নারীর নিরাপত্তাহীনতার কোনো কারণ ঘটেনি৷

নারীরা বলছেন, তারা এমনসব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন যা তাদের কাছে নতুন৷ তারা তাদের পোশাক, পেশা, চলাফেরা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন বলে জানান৷

‘অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এক নারী গত তিন বছর ধরে মিরপুরে সন্ধ্যায় একটি চা ও স্ন্যাকসের দোকান চালান৷ আগে সমস্যা না হলেও এখন মেয়েরা কেন চায়ের দোকান চালাবে, এমন কথা উঠছে বলে জানান সুমাইয়া আক্তার (ছদ্ম নাম) নামের ওই নারী৷ তিনি বলেন, ‘‘দোকান চলতে দিলেও বলা হচ্ছে ছেলেরা চা খেতে আসতে পারবে না৷ দোকানে আড্ডা দিতে পারবে না৷ এখন কথা বলছেন স্থানীয় কিছু লোক৷ তারা কোন দিন আবার সালিশ বসান কে জানে!”

ওই নারী বলেন, ‘‘সারাদিন অফিস করার পর বাড়তি আয়ের জন্য বাসার কাছেই আমি দোকানটি দিয়েছি৷ এখানে নানা ধরনের চা ও স্ন্যাকস বিক্রি করি৷ দোকানটি বেশ জমেও উঠছে৷ কিন্তু আমি ভয়ে আছি কোন দিন না আবার আমার দোকানটি বন্ধ করে দেয়৷”

এমন কেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখন তো একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতি৷ সবাই মনে করছে তাদের মতোই চলতে হবে৷ তারা যা বলবেন তাই হবে৷ যে যেমন চিন্তা করেন সেইভাবেই সব কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন৷ বিএনপি মনে করে তারা ক্ষমতায়, জামায়াত মনে করে তারা ক্ষমতায়৷ ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে৷ কার কাছে প্রতিকার চাইব জানি না৷ পুলিশকে বললে কোনো কাজ হয় না৷ এক অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি৷”

ঢাবি শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘‘আগে কখনো এমন হয়নি৷ এখন রাত ৮টার দিকে কলাভবনের সামনে গেলে ছেলেরা প্রশ্ন করে রাতের বেলা এখানে কী করেন? আমি গত কয়েকদিনে কয়েকবার এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তারা বলে সবাই যেভাবে বলছে সেভাবে চলো৷ আসলে তারাও এসবের বিরুদ্ধে যেতে চায় না৷”

‘‘আবার টি শার্ট, জিন্স পরলে নানা ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে৷ আগে ছিলো যে, এরকম ঘটলে আমরা জানতাম প্রতিকার পাওয়া যাবে৷ এখন তাও পাওয়া যায় না৷ এরফলে আমি মানসিকভাবে নাজুক হয়ে পড়েছি,” বলেন তিনি৷

তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘‘একটি নতুন পরিস্থিতির কারণেই হয়তো এরকম হচ্ছে৷ আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি৷”

আর একজন গৃহিণী বলেন, ‘‘এখন রাস্তায় চলতে ভয় পাই৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কারণে মনে হচ্ছে রিকশায় চললে কেউ এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার ব্যাগটি নিয়ে যাবে৷”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ অনেক নারী প্রশ্ন করছেন, দুইজন উপদেষ্টা নারী৷ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় তারা এখন আর আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন না৷

এক নারী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘ধরলাম আপনারা বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন, তো ভাই আপনাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে নারীর নিরাপত্তা কোথায়? এখন একদল বলবেন, পর্দা করে চললে মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু হবে না৷ পর্দা করে চলার পরেও অনেক মেয়ের সাথে খারাপ ঘটনা ঘটেছে এমন উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক রয়েছে৷ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী পর্যন্ত বাদ পড়েনি৷ বড়দের কথা বাদই দিলাম, ছোট ফুলের মত শিশুরা পর্যন্ত এইসব অমানুষদের হাত থেকে রক্ষা পায় না৷ হাজারো ফুলের মতো শিশুর জীবন এদের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে৷ এখন কি এই ফুলের মতো শিশুদেরকে বলবেন যে তোমরা পর্দা করে চল না বলেই তোমাদের সাথে এমন হয়? দিতে পারবেন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর?”

‘একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে’

দায়িত্বশীলদের ‘স্কেপিস্ট’ বক্তব্য: নূর খান

নারী অধিকার কর্মী জিনাত আরা বলেন, ‘‘যে-কোনো পরিবর্তনে, দুর্যোগে, যুদ্ধে যে মানুষ প্রান্তিক তাদেরই হেনস্তা হতে হয়৷ বাংলাদেশে নারীরা প্রান্তিক, তাই তারা এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷”

‘‘একটা রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে৷ এই পরিবর্তনে নারীদের অনেক ভূমিকা থাকার পরও তারা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ এর কারণ আমরা আগে থেকেই দেখেছি একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে এবং তারা মানুষের আবেগ নিয়ে সফলভাবে কাজ করতে পেরেছে৷ বিশেষ করে নারীবিদ্বেষী ধারণা তারা ধর্মের মোড়কে ফোকাস করতে পেরেছে৷ সেটা আরো তীব্র হচ্ছে,” বলেন তিনি৷

সম্প্রতি ঢাকার লালমাটিয়ায় একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণীর ধূমপান করায় কথা কাটাকাটির পর মব হেনস্তার মুখে পড়তে হয়৷ পরে পুলিশ ওই দুই তরুণীকে থানার হেফাজতে নিয়ে যায়৷ তারপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ৷ কেউ যেন ওপেন প্লেসে ধূমপান না করেন৷”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই কথার প্রতিবাদে নারীরা রাস্তায় নেমেছেন৷ তাদের কথা, দুই তরুণীকে যারা হেনস্তা করলো তাদের আটক করা হলো না৷ কিন্তু দুই তরুণীকে থানায় নেয়া হলো৷

আর ওই প্রতিবাদে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের কয়েকজনকে নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক ট্রল হচ্ছে৷ একজনের ছবি দিয়ে তাকে রীতিমতো হুমকি দেয়া হচ্ছে৷

‘রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে’

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওই বক্তব্য নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সহায়ক৷ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যখন এই ধরনের স্কেপিস্ট বক্তব্য দেয়া হয় তখন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়৷”

‘‘শুধু নারী নয় এখন সমাজের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷ রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে৷ একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে,” বলেন তিনি৷

‘নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘‘এখন যে নারীর জন্য নিরাত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে এটা একটা নতুন পরিস্থিতি৷ তারা প্যানিকড৷ তাদের চলাফেরা, পোশাক সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ এটা সববয়সি নারীর জন্য৷ একটা অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ পত্রিকা থেকে নারী নির্যাতনের যে তথ্য পাই তার বাইরে এখন প্রচুর ঘটনা ঘটছে৷ আবার ধরনও পরিবর্তন হচ্ছে৷”

তার কথা, ‘‘একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন নারীরা৷ নারীরা যেহেতু প্রান্তিক, তাই তারা শিকার হচ্ছেন৷ কারুর ওপর নিয়ন্ত্রণ নাই৷ মনে হচ্ছে একটা নতুন দেশ৷ যে যেভাবে পারছে তার ইচ্ছা পূরণ করছে৷”

‘‘নারীবিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ তারা নারীদের ওপর নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছে৷ তারা চলাফেরায়ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায়৷ ফলে নারী নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে৷ কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই৷”

‘সরকার তেমন কিছু করছে না’

আর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘‘দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই ভালো না৷ নারী যেহেতু ভালনারেবল তাই তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ছে৷ সরকারও তেমন কিছু করছে না৷”

পুলিশের বক্তব্য

তবে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘‘নারীর নিরাপত্তাহীনতার কোনো কারণ ঘটেনি৷ পুলিশ নারী-পুরুষ সবার নিরাপত্তার জন্যই কাজ করছে৷ তারপরও তারা অনিরাপদ বোধ করলে পুলিশকে জানালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে৷”



আর্কাইভ

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ট্রলারসহ ৫৬ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
বাংলাদেশে চলাফেরা নিরাপত্তার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে নারী
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক জোরদারে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
৪ হাজার ৬১৫ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ
দ.আফ্রিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ড
প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ
উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন ড. সি আর আবরার
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা ফারাক্কায়
মার্কিন সহায়তা স্থগিতে বিপদে ইউক্রেন?