রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত চীনের
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত চীনের
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী ও মাদকের প্রবাহ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীনা পণ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) মামলা দায়ের করবে চীন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াশিংটনের একতরফা শুল্ক বৃদ্ধিকে ডব্লিউটিওর নিয়ম ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ হিসেবে দেখছে বেইজিং।
ট্রাম্প গতকাল শনিবার চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। শুল্ক বাড়ানোর জন্য ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) প্রয়োগ করে একটি জাতীয় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই আইনের অধীনে মেক্সিকো থেকে সব ধরনের পণ্য এবং কানাডা থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট শিট অনুসারে, এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সংকট প্রশমিত না হওয়া পর্যন্ত’ কোনো ছাড় ছাড়া এসব শুল্ক কার্যকর থাকবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ওয়াশিংটনের পদক্ষেপে বেইজিং ‘দৃঢ়ভাবে অসন্তুষ্ট’ এবং ‘দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা’ করছে।
নিজস্ব সমস্যা সমাধানে (অভিবাসী ও মাদকের প্রবাহ ঠেকানো) যুক্তরাষ্ট্র ‘অসহায়’ বলে উল্লেখ করা হয় চীনের বিবৃতিতে। বলা হয়, এটি চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতাকে ক্ষুণ্ণ করে।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বেইজিং তার নিজস্ব অধিকার এবং স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষার জন্য অনুরূপ পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অন্যান্য দেশকে শুল্ক দিয়ে হুমকি দেওয়ার পরিবর্তে অবৈধ মাদক আমদানির মতো বস্তুনিষ্ঠ ও যৌক্তিকভাবে নিজস্ব সমস্যাগুলো দেখা ও মোকাবেলা করা।
মন্ত্রণালয় বলেছে, বেইজিং ডব্লিউটিওর কাছে নতুন শুল্কের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করবে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য, তাই বিরোধের সময় সংস্থার সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হয়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের শুল্ককে ‘গঠনমূলক নয়’ বলে অভিহিত করে সতর্ক করে বলেছে, এর ফলে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হতে পারে। চীনের অবস্থান দৃঢ় ও অবিচল। বাণিজ্য ও শুল্ক যুদ্ধে কেউ বিজয়ী হয় না।
শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। আরও গুরুত্বপূর্ণ হিষয় হলো, এতে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না, বিশ্ব তো দূরের কথা। নতুন শুল্ক ভবিষ্যতে দুই পক্ষের মাদকবিরোধী সহযোগিতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এদিকে, কানাডা ও মেক্সিকো এরই মধ্যে ট্রাম্পের অভিযোগ ও শুল্ক আরোপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর কানাডা মার্কিন পণ্যগুলোতে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম শনিবার দেশটির অর্থনীতি মন্ত্রণালয়কে ‘প্ল্যান বি’ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। প্ল্যানের মধ্যে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে শুল্ক ও প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত আছে। বিস্তারিত প্রকাশ করা না হলেও সূত্রের দাবি, মেক্সিকো কৃষির মতো মার্কিন শিল্পের ওপর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা আরোপ করতে চায়।