শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » ওয়াশিংটনের আকাশে বিমান এবং সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে নিহত ৬৭ জন
ওয়াশিংটনের আকাশে বিমান এবং সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে নিহত ৬৭ জন
বিবিসি২৪নিউজ,ফরিদা ইয়াসমিন (ওয়াশিংটন) যুক্তরাষ্ট্র থেকে: ওয়াশিংটনের রিগান ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কাছে একটি বিমান ও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পরে উদ্ধারকারী নৌকাগুলো পোটোম্যাক নদীতে অনুসন্ধান করছে।
ওয়াশিংটনের রিগান ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কাছে একটি বিমান ও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পরে উদ্ধারকারী নৌকাগুলো পোটোম্যাক নদীতে অনুসন্ধান করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ফেডেরাল এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বলেন, অ্যামেরিকান এয়ারলাইন্স-এর একটি যাত্রীবাহী জেট এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারের মধ্যে বুধবার রাতের সংঘর্ষে কেউ বেঁচে নেই। বিমান এবং হেলিকপ্টার ওয়াশিংটনের পটম্যাক নদীতে বিধ্বস্ত হয় এবং উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বুধবার রাত ৯টার দিকে ঐ দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দর সংলগ্ন পোটোম্যাক নদীর ঘোলা, হিমশীতল পানিতে নৌকা ও ডুবুরিসহ জরুরি পরিষেবা কর্মীরা রাতভর কাজ করেন।
কর্মকর্তারা জানান, প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনাকারী হেলিকপ্টারটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর তিনজন সেনা ছিলেন। কানসাসের উইচিটা থেকে ওয়াশিংটনগামী ফ্লাইটটি পরিচালনাকারী আমেরিকান এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানায়, বিমানটিতে ৬০ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন।
প্রায় ৩০০ উদ্ধারকর্মী কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করছেন। যেখানে ধ্বংসাবশেষটি পাওয়া গেছে সেখানে প্রায় আড়াই মিটার গভীর হিমশীতল পানি।
ইউএস ফিগার স্কেটিং জানায়, বিমানে যাত্রীদের মধ্যে অ্যাথলেট, কোচ ও পরিবারের সদস্যসহ তাদের কমিউনিটির বেশ কয়েকজন সদস্য ছিলেন।
ক্রেমলিন ও রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওই বিমানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দম্পতি ইভজেনিয়া শিশকোভা ও ভাদিম নাউমোভুসহ রাশিয়ান ফিগার স্কেটাররা ছিলেন।
নিকটবর্তী কেনেডি সেন্টারের একটি ক্যামেরায় ধারণ করা দুর্ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনের গোলা বিস্ফোরিত হওয়ার আগে দুই সেট আলো দেখা যায়। বিমানটি থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, সংঘর্ষের সময় বিমানটি প্রায় ১২০ মিটার উচ্চতায় ছিল।কানসাসের ইউএস সেনেটর রজার মার্শাল ব্রিফিং-এ বলেন, “যেসকল পরিবার তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের জন্য আমরা শোকাহত।”
মার্শাল বলেন, “তাদের সকলের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান ছিল। আমরা তাদের হারিয়েছি এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
সারা রাত উদ্ধারকাজ
বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়াশিংটন, ডিসি দমকল বাহিনীর প্রধান জন ডনালি বলেন, রাত ৮.৪৮-এ জরুরী সেবা কর্মীরা বিমানবন্দরে একটি বিপদ সঙ্কেতের জবাব দেন। বিপদ সঙ্কেত থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে বিমানবন্দরে বা তার কাছে বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে।
ডনালি বলেন স্থানীয়, রাজ্য এবং ফেডেরাল সংস্থার প্রায় ৩০০জন জরুরী কর্মী পানিতে কাজ করছিলেন। তিনি বলেন আবহাওয়া ছিল হিমশীতল, সাথে প্রবল বাতাস। পানিতে প্রচুর বরফ জমে ছিল।
ডনেলি বলেন কর্মীরা সাড়া রাত উদ্ধার কাজ চালান এবং বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত যাত্রীবাহী বিমান থেকে ২৭টি মৃতদেহ এবং হেলিকপ্টার থেকে একজন ক্রুর মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি বলেন, নদীর স্রোত এবং বাতাস ধ্বংসাবশেষ অন্তত এক থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে গেছে, যার ফলে উদ্ধার কাজ জটিল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি (পরিবহন মন্ত্রী) শন ডাফি সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে রাতে আকাশ পরিষ্কার ছিল এবং দুটো বিমানই “সাধারণ” ফ্লাইট পদ্ধতিতে ছিল। তিনি বলেন ওয়াশিংটনের আকাশে বাণিজ্যিক এবং সামরিক, দুই ধরনের বিমান ট্রাফিক থাকা সাধারণ ব্যাপার, যেহেতু আশেপাশে সামরিক ঘাঁটি আছে।
ডাফি বলেন যে, যদিও সংঘর্ষের আগে পর্যন্ত বিমানের ফ্লাইট প্যাটার্ন “সাধারণ” ছিল, “দৃশ্যত কিছু একটা ঘটেছে।”
“দুই বিমানের সংঘর্ষ সাধারণ ঘটনা নয়,” ডাফি বলেন। তিনি আরও বলেন এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। তবে তিনি বলেন যে ন্যাশনাল ট্রাফিক সেফটি বোর্ড দুর্ঘটনা তদন্ত করছে এবং তারাই এর কারণ বের করবে।