মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ, দেশজুড়ে বিদ্যুতের ঘাটতি
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ, দেশজুড়ে বিদ্যুতের ঘাটতি
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিন ইউনিটই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সারাদেশে ২৮০ থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেবে বলে জানা গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ নাম্বার ইউনিটের ওয়েলপাম্প নষ্ট হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের ১ নাম্বার ইউনিটটি বন্ধ করা হয়। আর ওভারহোলিংয়ের কারণে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ কেন্দ্রের ২ নাম্বার ইউনিটটি।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নাম্বার ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট, ২ নাম্বার ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ও ৩ নাম্বার ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে এই কেন্দ্র থেকে ২৮০ থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলো। এর মধ্যে ১ নাম্বার ইউনিট থেকে ৬০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ও ৩ নাম্বার ইউনিট থেকে ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল।
তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ইউনিটগুলো সচল রাখতে প্রতিটি ইউনিটে ২টি করে ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক ওয়েলপাম্প জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। তবে একটি ওয়েলপাম্প দিয়েও জ্বালানি তেল সরবরাহ করে ইউনিট চালু রাখা যায়। সবশেষ ৩ নাম্বার ইউনিটটি একটি ওয়েলপাম্পের মাধ্যমে চালু রাখা হয়েছিল। তবে সেই পাম্পেও ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য হারবিন ইন্টারন্যাশনাল ও সিএমসি-এক্সএমসি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারি এসব কোম্পানি ত্রুটি মেরামত করে কেন্দ্র সচল রাখার কথা থাকলেও করোনার পর থেকে চুক্তির চেয়ে যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে সঠিকভাবে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করা হচ্ছে না। তবে ত্রুটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হয়েছে।
কথা হলে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমাদের ইক্যুইপমেন্ট ফেইল করায় ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নাম্বার ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। তেল সাপ্লাই দেওয়ার জন্য ইউনিটে ২টি ওয়েলপাম্প প্রয়োজন হয়, তার মধ্যে ২০২২ সালে একটি নষ্ট হয়ে যায়। একটি ওয়েলপাম্প দিয়েই ওই ইউনিটটি চালু ছিল, সেটি গতকাল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ৩ নাম্বার ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই ইউনিটটি চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, ১ নাম্বার ইউনিটটি অনেক পুরনো, ভাইব্রেশনের কারণে ৭ সেপ্টেম্বর বন্ধ করা হয়। আমরা চেষ্টা করছি, এটি এক সপ্তাহের মধ্যে চালু করতে। তবে এক সপ্তাহ লাগবে না, ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই চালু হবে। আমরা একটু বেশি করেই এক সপ্তাহ সময় নিয়েছি। আর ২ নাম্বার ইউনিটটি ২০২০ সাল থেকেই ওভারহোলিং কার্যক্রমের জন্য বন্ধ রয়েছে। চীনারা এখনও কাজ শুরু করেনি। এই ইফনিটটির ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিএমসি-এক্সএমসি কোম্পানির সঙ্গে ওভারহোলিংয়ের কাজটির চুক্তি হয়েছে। কিন্তু তারা কাজটি করতে পারেনি। করোনার পর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, এজন্য তারা দাম বাড়ানোর দাবি করেছে। কিন্তু আমরা বলেছি যে আগের চুক্তিতেই থাকতে হবে। এভাবেই কথাগুলো হচ্ছে। এখনও এ ব্যাপারে আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি।