শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১
BBC24 News
বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » কর দিয়ে অবৈধ টাকা বৈধ করার সুযোগ থাকছে বাজেটে
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » কর দিয়ে অবৈধ টাকা বৈধ করার সুযোগ থাকছে বাজেটে
৩২৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কর দিয়ে অবৈধ টাকা বৈধ করার সুযোগ থাকছে বাজেটে

---বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: দেশে বৈধ বা অবৈধ, উৎস যা-ই হোক না কোনো, ইতিপূর্বে উপার্জিত অর্থ আয়কর রিটার্নে উল্লেখপূর্বক কর না দিয়ে থাকলে, তার ওপর মাত্র ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে তা হালাল করে নেওয়া যাবে। এই হারে কর দিলে আয়কর বা অন্য কোনো সংস্থাই এই আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করতে পারবে না। এবারের আয়কর আইনে এমন বিধান যুক্ত করতে জাতীয় সংসদ এমন প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন তিনি। তার প্রস্তাব অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন উল্লেখপূর্বক কর না দেওয়া অর্থ শেয়ারে বিনিয়োগ করলে বা ব্যাংকে বা অন্য কোনো ডিপোজিট বা সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগ করলে, সেক্ষেত্রেও ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে তা বৈধ করে নেওয়া যাবে।

আবার অতীতে কর দেওয়া হয়নি, এমন উপার্জন থেকে জমি, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনে থাকলে এলাকাভেদে প্রতি বর্গমিটারে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা কর দিলে দেশের অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেনো, সরকারের কোনো সংস্থাই করদাতার ওই সম্পদের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।

সংসদে এই আইন পাশ হলে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের অর্জিত অর্থ বা তা থেকে ক্রয়কৃত সম্পদ বৈধ করে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। অবশ্য যারা বৈধ উৎস থেকে উপার্জিত আয় বা তা থেকে অর্জিত সম্পদ ইতিপূর্বে আয়কর রিটার্নে উল্লেখপূর্বক কর দেননি, তারাও একই সুযোগ নিতে পারবেন।

অর্থ বিল ২০২৪ এর অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শনে বিশেষ সুবিধা শিরোনামে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩ বা অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেনো, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যক্তির কোনো পরিসম্পদ অর্জনের উৎসের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না, যদি ওই ব্যক্তি ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে ২০২৪-২৫ কর বর্ষের রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের সময় ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে রিটার্নে ওই পরিমাণ সম্পদ প্রদর্শন করেন।

এ প্রক্রিয়ায় যে অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে অর্জিত আয় যে সাদা করার সুযোগ দিতে যাচ্ছেন, কৌশলে তা এড়িয়ে গেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডাটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) চালু হওয়ার ফলে বিভিন্ন কোম্পানির অপ্রদর্শিত আয় ও পরিসম্পদ প্রদর্শনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া, রিটার্ন দাখিলে করদাতার অজ্ঞতাসহ অনিবার্য কিছু কারণে অর্জিত সম্পদ প্রদর্শনে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। এই অবস্থায় করদাতাদের আয়কর রিটার্নে এই ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ প্রদান এবং অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর আইনে কর প্রণোদনা সংক্রান্ত একটি অনুচ্ছেদ সংযোজনের প্রস্তাব করছি।

তবে কর বিশেষজ্ঞরা অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, এটা ঠিক যে, বৈধ উৎস থেকে আয়ের ওপর কর ফাঁকি দিতে আয়কর রিটার্নে কেউ কেউ তার প্রকৃত উপার্জন গোপন করেন। আবার এটাও ঠিক দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ও অবৈধ ব্যবসায়ীরা বিপুল অঙ্কের মালিক এবং তারা কর দেন না। অর্থমন্ত্রী কৌশলে এদেরকেও কালো টাকাকে সাদা করে নেওয়ার সুযোগ দিতে যাচ্ছেন। আবার এমন নয় যে, দুনীর্তিবাজরা তাদের টাকার সবটাই নগদে বাক্স বন্দি করে রেখেছেন। এ অর্থের বড় অংশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেই ব্যবহার হচ্ছে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা হলো, ওই টাকা সাদা করার সুযোগ আগেও দেওয়া হয়েছিল। তবে খুবই কম সংখ্যকই এ সুযোগ নিয়েছেন। তার পরও সরকার প্রতি বছরই এ সুযোগ উন্মুক্ত করে রাখছে।

এমন অবাধ সুযোগ দেওয়ার কারণ সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি বলে খোলাখুলিভাবে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তার বাজেট বক্তৃতা অনুযায়ী, অর্থনীতিতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি এবং তা বজায় রাখতে সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য একদিকে আমাদের অধিক পরিমাণ রাজস্ব জোগান দিতে এ খাত থেকে কিছু অর্থ পেতে চাইছেন তিনি।

অপ্রদর্শিত অর্থ কর দিয়ে বৈধ করে নেওয়ার সুবিধাকে সংবিধান, রাষ্ট্রের মূল চেতনা এবং জনগণের প্রতি বর্তমান সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকারের সুস্পষ্ট বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্যে সমকালকে তিনি বলেন, এ সুযোগ বাংলাদেশের সংবিধানের ২০(২) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানকে লঙ্ঘন করে কোনো আইন হতে পারে না। তবু সরকার তা করছে। এটা সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, চাইলে এখন এই আইনের সুযোগ নিয়ে মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাবেক আইজি বেনজির আহমেদ বা তার মত অন্যরা বেচে যেতে পারবেন। দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করলেও তার কার্যকারিতা হারাবে। কারণ আইনেই বলে দিচ্ছে, প্রযোজ্য হারে কর দিলে কোনো সংস্থাই আয়ের উৎস দিয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না। সরকারই বেনজিরদের পার পাইয়ে দিতে এ সুযোগ তৈরি করলো কি-না, সে প্রশ্ন করা যেতেই পারে।

টিআইবি প্রধান বলেন, যেখানে বৈধ আয়ের বিপরীতে দেশের মানুষ সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে কর দেবে, সেখানে দুর্নীতিবাজদের মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে তা বৈধতা দেওয়া চরম বৈষম্যমূলক। এর মাধ্যমে সরকার জনগণের প্রতি এই বার্তা দিচ্ছে যে, তোমরা অবৈধ আয়কর বা বৈধ আয়ে সময়মতো কর দিও না। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এ সরকার দুর্নীতির বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছিল। সরকার এমন সুযোগ দিয়ে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে।

রাজস্ব আদায় বাড়াতে এমন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে- অর্থমন্ত্রী এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে টিআইবি প্রধান বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে অতীতে কোনো সরকারই উল্লেখযোগ্য কর আদায় করতে পারেনি। তারপরও যদি কিছু আদায় হয়েও থাকে, ওই সামান্য অর্থের বিনিময়ে রাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতাকে বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে।

কালো টাকা সাদাতে কর হার: অপ্রদর্শিত বা কালো টাকায় জমি বা ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের মত স্থাবর সম্পদ ক্রয় করে থাকলে এলাকাভেদে তার ওপর বিভিন্ন হারে কর দিয়ে বৈধতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবারের অর্থবিলে। যেমন- ঢাকার গুলশান, বনানী, মতিঝিল, তেজগাঁও, ধানমন্ডি, ওয়ারী, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন, কাফরুল, নিউমার্কেট এবং কলাবাগান থানা এলাকায় কোনো জমি কিনে থাকলে ওই জমির প্রতি বর্গমিটারের জন্য ১৫ হাজার টাকা হারে এবং এলাকায় ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনে থাকলে প্রতি বর্গ মিটারের জন্য ৬ হাজার টাকা করে কর দিতে হবে।

এর বাইরে ঢাকার বংশাল, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ি, উত্তরা মডেল, ক্যান্টনমেন্ট, চকবাজার, কোতোয়ালি, লালবাগ, খিলগাঁও, শ্যামপুর, শাহাজাহানপুর, মিরপুর মডেল, দারুস সালাম, দক্ষিণখান, উত্তরখান, তুরাগ, শাহ আলী, সবুজবাগ, কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, ডেমরা, আদাবর, গেন্ডারিয়া, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, উত্তরা পশ্চিম, মুগদা, রূপনগর, ভাষাণটেক, বাড্ডা, পল্লবী, ও ভাটারা থানা এলাকা এবং চট্টগ্রামের খুলশী, পাঁচলাইশ, পাহাড়তলী, হালিশহর, কোতোয়ালি এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর, সোনারগাঁও, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানা এবং গাজীপুর জেলার সদর থানার অন্তর্গত সব মৌজায় জমির ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ৩ হাজার টাকা এবং ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে দেড় হাজার টাকা হারে কর দিতে হবে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর ছাড়া অন্য কোনো সিটি করপোরেশন এলাকায় জমির ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ২ হাজার টাকা এবং এবং ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা হারে কর দিতে হবে। ওপরে উল্লেখিত এলাকা ছাড়া দেশের অন্য যে কোনো পৌরসভায় কেনা জমির ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার টাকা এবং ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে ৮৫০ টাকা হারে কর দিতে হবে। এর বাইরে অন্য যেকোনো এলাকার জমির জন্য প্রতি বর্গমিটারে ৩০০ টাকা এবং ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা হারে কর দিতে হবে।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর