রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » জীবন বাঁচাতে কোন আশ্রয়ের জায়গা নেই, রাফাহ ছেড়েছেন ৮ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ
জীবন বাঁচাতে কোন আশ্রয়ের জায়গা নেই, রাফাহ ছেড়েছেন ৮ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে ইসরায়েল হামলা শুরু করার পর থেকে প্রায় ৮ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
শনিবার এক বিবৃতিতে লাজারিনি ফিলিস্তিনিদের বারবার বাস্তুচ্যুতির নিন্দাও করেছেন।লাজারিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিরা নিরাপত্তার সন্ধানে বহুবার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে তারা কখনো নিরাপত্তা খুঁজে পায়নি। এমনকি ইউএনআরডব্লিউএ-এর আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যন্ত সেটা মেলেনি।’
তিনি বলেন, ‘যখন মানুষ এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়, তখন তারা নিরাপদ পথ বা সুরক্ষা ছাড়া অরক্ষিত হয়ে পড়ে। প্রতিবার তারা তাদের কিছু মৌলিক জিনিসপত্র ফেলে যেতে বাধ্য হয়। যেমন মাদুর, তাঁবু, রান্নার জিনিসপত্র। এসব তারা নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে না কিংবা নিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করতে পারে না। ফলে প্রতিবার, তাদের আবার শুরু থেকে শুরু করতে হয়।’
রাফাহ গাজার সর্বদক্ষিণের শহর। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে ১৫ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয়গ্রহণ করেছিলেন। তবে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহতে হামলা শুরু করলে জীবন বাঁচাতে এসব মানুষ এখন অন্যত্র সরে যাচ্ছেন। যদিও গাজায় নিরাপদ আর কোনো জায়গা আর নেই।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, পুরো গাজাজুড়ে তীব্র আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল শনিবার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাফাহ শহরের উত্তরে খান ইউনিসে ইসরায়েলের বোমা হামলায় চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
রাফাহ শহরে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে ইসরায়েলকে বড় ধরনের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।রাফাহতে বিপুল সংখ্যক সেনা ও ট্যাংক জড়ো করেছে ইসরায়েল। মিসরের সঙ্গে গাজার প্রধান সীমান্ত পথটিও দখল করে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতদিন এই সীমান্তপথ দিয়ে গাজাবাসীর জন্য জরুরি জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতো। তবে তা এখন বন্ধ রয়েছে।দীর্ঘ দখলদারত্ব আর পশ্চিম তীরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা ও পরবর্তীতে স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত ৭৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এ গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।