শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১
BBC24 News
সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » ঈদে নৌ-রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » ঈদে নৌ-রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে
২৫৪ বার পঠিত
সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ঈদে নৌ-রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো যাত্রী সংকটে

---বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: ঈদের মৌসুমে ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণবঙ্গগামী এবং ঈদ পরবর্তী দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকাগামী লঞ্চের কেবিন ছিল ‘সোনার হরিণ’। একসময় প্রভাবশালী ছাড়া এই রুটে লঞ্চের কেবিন সংগ্রহ করা ছিল একরকম অসম্ভব। আবার কোনও কোনও লঞ্চ কোম্পানি আগেভাগে স্লিপ জমা নিলেও তাতেও প্রভাবশালীদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। এ কারণে সাধারণ যাত্রীদের ভাগ্যে কেবিন জুটতো না। এ অবস্থা চলে আসছিল বছরের পর বছর। তবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই প্রতিযোগিতায় ভাটা পড়েছে। এবছর ঈদের আর কয়েকদিন বাকি থাকলেও লঞ্চে কেবিনের তেমন কোনও চাহিদা দেখা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত কেউ কোনও লঞ্চে কেবিনে আগাম বুকিং দেননি বলেও জানিয়েছেন লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা। তবে ২২ থেকে ২৩ রোজার পর ঢাকা থেকে বরিশালগামী লঞ্চে কেবিন বুকিং হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতেও দেখা দিয়েছে যাত্রী সংকট। যেখানে প্রতিদিন ছয় থেকে সাতটি লঞ্চ বরিশাল নৌবন্দর ত্যাগ করতো, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সেখানে মাত্র দুটি লঞ্চ প্রতিদিন যাত্রী বহন করছে। এরপরও যাত্রী সংকট লেগেই আছে। এখন যাত্রীর চেয়ে মালামাল পরিবহনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা চাকরিজীবী মিজানুর রহমান বলেন, ‘পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত একচেটিয়া ব্যবসা করেছে একাধিক লঞ্চ কোম্পানিগুলো। ওই সময় বিশেষ করে দুই ঈদে ঢাকা এবং বরিশাল থেকে যাত্রার প্রধান বাহন ছিল লঞ্চ। আর লঞ্চের কেবিন ছিল সোনার হরিণ। এ জন্য চার-পাঁচ রোজার পর থেকেই শুরু হয়তো কেবিন বুকিংয়ের প্রতিযোগিতা। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের মারাত্মক দুর্ভোগে পড়তে হতো।

পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর সেই অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে বরিশাল নৌ বন্দর পল্টুনে সাতটি লঞ্চ একসাথে ভিড়তে পারতো না, আরো পল্টুনের প্রয়োজন ছিল। সেখানে বর্তমানে মাত্র দুই থেকে তিনটি লঞ্চ থাকছে। সেখান থেকে প্রতিদিন দুটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। একইভাবে ঢাকার সদর ঘাট থেকেও প্রতিদিন দুটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ওই দুটি লঞ্চের কমপক্ষে ৫ শতাধিক কেবিনের অর্ধেক বুকিং হয়, বাকী কেবিন খালি থাকে। যেখানে সাধারণ দিনগুলোতে কেবিন খালি থাকার কোনও কারণই ছিল না, এখন সেখানে কেবিন খালি নিয়ে লঞ্চগুলো চলাচল করছে। প্রথম তলা থেকে শুরু করে তৃতীয় তলা পর্যন্ত ডেকও থাকছে খালি।
লঞ্চ যাত্রী নগরীর করিম কুটির এলাকার বাসিন্দা মিতু বলেন, লঞ্চ জার্নি আরামদায়ক এবং দুর্ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রা করা যায়। এ কারণে বহু পরিবার রয়েছে এখনও লঞ্চে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে বরিশাল আসেন। তবে লঞ্চের সেই রমরমা ব্যবসা এখন আর নেই। পদ্মা সেতু লঞ্চ মালিকদের জন্য সমস্যা হলেও সাধারণ যাত্রীদের অনেক উপকারে এসেছে। এখন সকালে ঢাকায় গিয়ে কাজ সেরে আবার বিকালের মধ্যে বরিশালে আসা সম্ভব। যা আগে স্বপ্নের মতো ছিল। তবে বরিশালের ঐতিহ্য হিসেবে লঞ্চ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এখনো উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ‘ভাসমান পাঁচতারকা হোটেল’ হিসেবে খ্যাত বিশাল আকারের এই অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চগুলো দেখতে এবং এতে ভ্রমণ করতে আসেন।

লঞ্চ ব্যবসার ধসের কারণে ইতিমধ্যে সুরভি কোম্পানির একটি লঞ্চ বিক্রি করা হয়েছে। সুন্দরবন কোম্পানির লঞ্চ বিভিন্ন রুটে দেওয়া হয়েছে। পারাবত কোম্পানির ব্যয় কমাতে বরিশাল নগরী থেকে অফিস তুলে নেওয়া হয়েছে। কীর্তনখোলা কোম্পানির একটি লঞ্চ বিক্রি করা হয়েছে। অপরটিও বিক্রি করতে ক্রেতা খুঁজছেন কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় গ্রিন লাইন কোম্পানির ওয়াটার বাস।

মানামী লঞ্চের ব্যবস্থাপক মো. রিপন বলেন, ‘আশা করছি ২০ রোজার পর থেকে কেবিন বুকিং শুরু হবে। তবে পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার আগে যে অবস্থা ছিল, তা আর আসবে না। ঈদের ছুটির শুরুর পূর্ব থেকে ঢাকা থেকে ১০ থেকে ১৫টি লঞ্চ ৩ থেকে ৪ দিন চলাচল করবে। এরপর আবার ঈদের পরে ছুটি শেষে একইভাবে বরিশাল নৌ বন্দর থেকে ঢাকাগামী ওই সংখ্যক লঞ্চ চলাচল করার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুন্দরবন লঞ্চের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পআগে রোজার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা থেকে এবং বরিশাল থেকে কেবিন নেওয়ার জন্য ভিড় লেগেই থাকতো। সুপারিশের চার ভাগের এক ভাগের কেবিন দেওয়া সম্ভব হতো। বাকিদের ফেরত দিতে বাধ্য হতাম। তবে তা এখন স্বপ্নের মতো মনে হয়। শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকা থেকে কোনও কেবিন বুকিং হয়নি। আর আগে এ সময় শ্বাসপ্রশ্বাস নিতেও সময় পেতাম না। তারপর আশা করছি ২০ রোজার পর থেকে কেবিন বুকিং হবে।

জাকির আরও বলেন, এখন ব্যবসার বড় একটি অংশ আসে মালামাল পরিবহনে। কিন্তু যে পরিমাণ খরচ তা বহন করে এরপর লাভ আনা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবুও মালিকপক্ষ স্টাফ এবং যাত্রীদের কথা চিন্তা করে এখনও এই ব্যবসা গুটিয়ে নেননি।

লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘এখন লঞ্চের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। লঞ্চের স্টাফ এবং যারা লঞ্চে চলাচলে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তাদের দিকে খেয়াল রেখেই এ ব্যবসা চালিয়ে রাখা হয়েছে। তারপরও সড়ক পথের চেয়ে লঞ্চে চলাচল আরামদায়ক, ভাড়া কম এবং তেমন দুর্ঘটনাকবলিত হয় না। প্রতি বছর ঢাকা থেকে বরিশালগামী বাস দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে যাত্রীরা নিহত আহত হচ্ছেন। কিন্তু লঞ্চ দুর্ঘটনায় পড়েছে সে হিসেব তেমন একটা দিতে পারবে না কেউ।’

রিন্টু বলেন, ‘বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে বিশালাকায় অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতে লিফট থেকে শুরু করে ভিআইপি কেবিন, ডাবল ও সিঙ্গেল কেবিন, সোফা এবং ডেক রয়েছে। প্রতিটি কেবিনে রয়েছে স্মার্ট টিভি, ওয়াইফাই জোন, রেস্টুরেন্ট, চিকিৎসা সেবা, অত্যাধুনিক টয়লেট, নামাজের স্থান ও মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা এবং লাইটিংয়ের সমারোহ। এ কারণে বরিশাল-ঢাকাগামী জাহাজগুলো ভাসমান পাঁচতারকা হোটেল বলে থাকেন অনেকে।’ আর লঞ্চ হচ্ছে বরিশালের ঐতিহ্য, এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সবাইকে লঞ্চে চলাচলের আহ্বান জানান তিনি।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর