শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১
BBC24 News
রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | বিবিধ | বিশেষ প্রতিবেদন | মিডিয়া ওয়াশ | শিরোনাম | সাবলিড » সাংবদিক দমনে মোবাইল কোর্ট? তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক জেলে
প্রথম পাতা » জেলার খবর | প্রিয়দেশ | বিবিধ | বিশেষ প্রতিবেদন | মিডিয়া ওয়াশ | শিরোনাম | সাবলিড » সাংবদিক দমনে মোবাইল কোর্ট? তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক জেলে
৪০৩ বার পঠিত
রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সাংবদিক দমনে মোবাইল কোর্ট? তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক জেলে

---বিবিসি২৪নিউজ, নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে এক সাংবাদিককে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিনের বিরুদ্ধে। কারাগারে আটক ওই সাংবাদিকের নাম শফিউজ্জামান রানা। তিনি দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি।

বিষয়টিকে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এমন ঘটনায় ব্যক্তিস্বার্থে আইন-আদালত ব্যবহার হয়েছে। যদিও ইউএনও এমন দাবি অস্বীকার করছেন।

এদিকে সাংবাদিক নেতারা অবিলম্বে এই সাংবাদিক দেওয়ার না হলে আন্দোলন নামার কথা জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করার কথা জানিয়েছে তথ্য কমিশন।

সাংবাদিকের স্ত্রী বন্যা আক্তার বলেন, ‘‘গত মঙ্গলবার তিনি (শফিউজ্জামান রানা) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে তথ্য সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলেন। আগেই তিনি এজন্য তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেছিলেন। আমার কাছে ওই আবেদনের একটি কপি আছে। তাতে তিনি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ কেনাসহ আরো কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। ওই দিন দুপুরে ওই তথ্য পাওয় না পাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ইউএনও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেন।’’

বন্যা আক্তার বলেন, ‘‘আমি তার এখনো জামিনের ব্যবস্থা করাতে পারিনি। কারাগারে গিয়ে দেখা করেছি। তিনি কারাগারে থাকলে আমার দুই সন্তান নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। তিনি ছাড়া আমাদের পরিবারে উপার্জন করার আর কেউ নেই। তাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে। আমি তার মুক্তি চাই।’’

তবে ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন দাবি করেন, ‘‘তথ্য চাওয়ার কারণে নয়, তিনি আমার সহকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিলা আক্তারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। তিনি নিজেই তার রুমে ঢুকে ফাইলপত্র ধরেন। আমি তখন পাশের রুমে একটি মিটিংয়ে ছিলাম। বাইরে প্রচণ্ড হট্টগোল হচ্ছিল। কয়েকজন রানা সাহেবকে থামানোর চেষ্টা করেন। আমি বের হয়ে দেখি তাকে কোনোভাবে থামানো যাচ্ছিল না। সে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলছিলো। তখন আমি আমার এসি ল্যান্ডকে ডাকি। সে এসেও থামাতে পারেনি। তারপর আমার গোপন সহকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়। অফিস চালানোর জন্য এছাড়া আমার উপায় ছিলো না। তিনি চলে গেলে তাকে শাস্তি দেয়া হতো না।’’

তবে তিনি স্বীকার করেন, ওই সাংবাদিক তথ্যের জন্য আবেদন করেছিলেন। ইউএনও বলেন, ‘‘তিনি (শফিউজ্জামান রানা) এডিপি ও জাইকা প্রকল্পের তথ্যের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আমি এখানে এসেছি ছয় মাস হলো। ওই ধরনের প্রকল্পের সঙ্গে আমি এখনো কাজ করিনি। আর আগের তথ্য আমার কাছে নাই। ওটা জাইকার কাছে থাকে।’’

ইউএনও যেই এসি ল্যান্ডকে ডেকে আনেন তার নাম মো. শিহাবুল আরিফ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে তিনিই তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সাংবাদিককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

তিনি বলেন, ‘‘তাকে সাংবাদিক হিসাবে নয়, ব্যক্তি হিসাবে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ইউএনও স্যারের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট কাজ করেছে। তথ্য চাওয়ার বিষয় তখন আমি জানতাম না। তথ্য চাওয়ার বিষয়টি পরে আমি পত্রিকায় দেখেছি। এ ব্যাপারে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে।’’

জানা গেছে, ওই দিন ঘটনার সময় সেখানে সাংবাদিক রানার দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে শাহরিয়ার জামান মাহিনও ছিলো।

মাহিন জানায়, ‘‘আমার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আব্বুর সঙ্গে বের হয়েছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে বাবা ইউএনও ম্যামের কাছে তথ্যের আবেদন নিয়ে যান। তখন তিনি মিটিংয়ে ছিলেন তাই শীলা ম্যামের কাছে পাঠান। আব্বু রিসিভড কপি চাচ্ছিলেন। তখন তিনি ফি চান। এটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইউএনও ম্যাম বের হয়ে গালাগাল করেন। আমাকেও বলেন, তুমি কি তোমার বাবার মত চোর সাংবাদিক হবে? এরপর মোবাইল কোর্ট বসিয়ে শাস্তি দেন। প্রথমে একটি এবং পরে আরেকটি মামলা দেয়া হয়। মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আব্বু দেননি।’’

সাংবাদিক রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে মোবাইল কোর্টে শাস্তি দেয়া হয়েছে। কারণ তিনি যেসব তথ্য চেয়েছিলেন তা প্রকাশ হলে অনেকের দুর্নীতির খবর ফাঁস হতো। অনেক সাংবাদিক তা চেপে গেলেও আমরা স্বামী সব সময় তা প্রকাশ করেন।”

আর নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা বিব্রত। তাকে মোবাইল কোর্টে শাস্তি দেয়াও যেমন ঠিক হয়নি। আবার সাংবাদিক যে আচরণ করেছে তাও ঠিক হয়নি।’’

সাংবদিক দমনে মোবাইল কোর্ট?

সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ড. শাহজাহান সাজু বলেন, ‘‘এখানে মেবাইল কোর্টকে ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা বেআইনি এবং অন্যায়। আদালতকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার এটা একটা নজির। যারা এটা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। ওই সাংবাদিক কোনো অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা করা যেত।’ তার কথা, ‘‘এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি।’’

আর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল বলেন, ‘‘এটাই প্রথম নয়, এর আগেও ইউএনও এবং ডিসিরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট ব্যবহার করে শাস্তি দিয়েছেন। দেশে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। সাংবাদিকদের তথ্য দিলে দুর্নীতি প্রকাশ হয়ে যাবে তাই তারা তথ্য দিতে চান না। উল্টো মামলা দিয়ে, শাস্তি দিয়ে হয়রানি করেন।’’

মোবাইল কোর্ট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘এভাবে ব্যক্তিস্বার্থে আইন আদালত ব্যবহার হলে দেশে তো আর আইনের শাসন বলে কিছু থাকবে না।’’

তবে ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দাবি করেছেন, তারা ব্যক্তি আক্রোশের কারণে মেবাইল কোর্ট ব্যবহার করেননি। আইনে তারা পারেন বলেই ব্যবহার করেছেন।

আন্দোলনের হুমকি সাংবাদিক নেতার

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘‘সাংবাদিক রানাকে মেবাইল কোর্টে শাস্তি দিয়ে কারাগারে পাঠানো অন্যায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং মুক্তি দাবি করছি। তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া না হলে যারা এই অন্যায় করেছেন তাদের বিচারের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামব।’’

তার কথা, ‘‘আমলাতন্ত্রের অপরাধ, অপকর্ম সাংবাদিকরা প্রকাশ করে দেয়। তাই তাদের ওপর আমলাতন্ত্রের আক্রোশ। তারা নানাভাবে সাংবাদিকদের হয়রানি করে। মিথ্যা মামলা দেয়। এটা করে তারা সরকারের ভাবমুর্তি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছে।’’

প্রসঙ্গত এর আগে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তখনকার ডিসি সুলতানা পারভীন তাকে দণ্ড দিয়ে জেলে পাঠিয়েছিলেন। সুলতানা পারভীন জেলা প্রশাসনের একটি পুকুর সংস্কার করে তার নাম নিজের নামে ‘সুলতানা সরোবর’ রেখেছিলেন। ওই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক আরিফুল ইসলামকে মাদক রাখার অভিযোগে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর