বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » সরকারি বিনিয়োগে বাড়তি ব্যয় করতে পারবে- ইইউ
সরকারি বিনিয়োগে বাড়তি ব্যয় করতে পারবে- ইইউ
বিবিসি২৪নিউজ,ইইউ প্রতিনিধি: বাজেট ঘাটতি ও ঋণের ভার সামলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি সরকারি বিনিয়োগ ও সংস্কারের পথে এগোতে পারবে৷ মতপার্থক্য কাটিয়ে ২৭টি দেশ অবশেষে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে৷
চলতি বছর শেষ হবার আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেশ কয়েকটি বিতর্কিত বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করতে সফল হয়েছে৷ শরণার্থী ও অভিবাসন সংক্রান্ত সাধারণ নীতির পর এবার বাজেট ও সরকারি ব্যয়ের প্রশ্নেও মতপার্থক্য দূর হলো৷ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২৭টি সদস্য দেশ প্রায় দুই দশক পুরানো আর্থিক কাঠামোর সংস্কার করতে রাজি হয়েছে৷ ফলে একাধিক সংকটের এই সময়ে সরকারি ঋণের ভার কমানোর জন্য সদস্য দেশগুলি আরো সময় পাবে৷ অন্যদিকে বাজেটের ভারসাম্য বজায় রেখেও আরো সরকারি বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে৷
করোনা মহামারির ধাক্কা সামলাতে বিশ্বের অনেক প্রান্তের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও বিশাল অংকের ব্যয়ভার বহন করতে হয়েছে৷ ইউক্রেন যুদ্ধও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দিচ্ছে না৷ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বেড়ে চলেছে৷ তার উপর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে জ্বালানি ও শিল্পক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তনের পথে অগ্রসর হচ্ছে এই রাষ্ট্রজোট৷ ফলে সরকারি ব্যয় কাঠামোর সংস্কার অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল৷ বুধবার ইইউ অর্থমন্ত্রীরা সেই বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন৷ এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলেই নতুন এই কাঠামো কার্যকর হবে৷ সে ক্ষেত্রে ২০২৫ সাল থেকে ইইউ সদস্য দেশগুলি নতুন শর্ত মেনে সরকারি ব্যয় করতে পারবে৷
নতুন নিয়মের আওতায় সদস্য দেশগুলিকে বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণের গড় মাত্রার সীমা স্থির করে দেওয়া হয়েছে৷ জার্মানির নেতৃত্বে মূলত ইউরোপের উত্তরের দেশগুলি এ ক্ষেত্রে কোনো রকম আপোশ মানতে রাজি নয়৷ অন্যদিকে ফ্রান্সের নেতৃত্বে দক্ষিণের দেশগুলি বেশ কিছু ছাড় আদায় করতে সমর্থ হয়েছে৷ ফলে আগের মতো কড়া নিয়ম মেনে প্রতি বছর আর বাজেট ঘাটতির সীমা মেনে চলতে হবে না৷ চার থেকে সাত বছরের মধ্যে স্থিতিশীলভাবে ঘাটতি মেটালেই চলবে৷ কোনো দেশ সাহসী সংস্কার চালালে ও সরকারি বিনিয়োগের মাত্রা বাড়ালে সেই সময়সীমা আরো বাড়ানোর সুযোগও থাকছে৷ মূলত ইটালি এমন ছাড়ের দাবি করেছিল৷ ফ্রান্সের অনুরোধ মেনে সরকারি বিনিয়োগের কারণে ঋণ বাবদ সুদের অংক ২০২৭ পর্যন্ত ব্যয়ের হিসেবের বাইরে রাখা হচ্ছে৷ তাছাড়া ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা খাতে বাড়তি ব্যয়কে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হবে৷
প্রায় দুই বছরের আলাপ আলোচনা, তর্কবিতর্ক ও দরকষাকষির পর এই সংস্কারের ফলে সব পক্ষই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷ ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো ল্য মেয়ার এই বোঝাপড়াকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ নেদারল্যান্ডসের অর্থমন্ত্রী সিগরিড কাগের মতে, এর ফলে সদস্য দেশগুলি সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি সংস্কার চালাতে উৎসাহ পাবে৷ তাছাড়া প্রতিটি দেশ নিজস্ব পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবার বাড়তি সুযোগও পাবে৷