মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | শিরোনাম | সাবলিড » চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অপসারিত
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অপসারিত
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে চিন গ্যাং-কে। সাত মাসেরও কম সময় আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাকে এ পদে নিয়োগ করা হয়েছিল।
তার জায়গায় আসছেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ওয়াং ই - যিনি আগেও একবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
গত ২৫শে জুনের পর থেকে মোট ২৯ দিন মি. চিনকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে তার মন্ত্রণালয়ও নীরব ছিল - যার ফলে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়।
সাতান্ন বছর বয়স্ক চিন গ্যাং ছিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের মধ্যে অন্যতম - যিনি এত দীর্ঘ সময় ধরে প্রকাশ্য কোন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন।
মি. চিনকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর একজন বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে দেখা হতো। তিনি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
সরকারি বার্তা সংস্থা শিনহুয়া বলেছে যে চীনের সর্বোচ্চ আইনসভা ওয়াং ইকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেবার পক্ষে ভোট দিয়েছে, এবং চিন গ্যাংকে “পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।”
মি. চিনকে অপসারণের কোন কারণ জানানো হয়নি তবে রিপোর্টে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শি এ পদক্ষেপকে অনুমোদন দিয়ে একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন।চীনা সিস্টেমের গোপনীয়তা
প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে মি. চিন গ্যাংএর দীর্ঘ অনুপস্থিতি অনলাইনে ব্যাপক জল্পনার জন্ম দিয়েছিল - যাতে চীন কর্তৃপক্ষের কার্যপদ্ধতির গোপনীয়তার দিকে আবার লোকের দৃষ্টি ফেরায়।
চীনে এরকম উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের তেমন কোন ব্যাখ্যা ছাড়া অদৃশ্য হওয়া নতুন কিছু নয়। এদের অনেকেই পরে যখন আবার দৃশ্যমান হন - তখন দেখা যায় তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজেই ২০১২ সালে চীনের নেতা হবার ঠিক আগে আগে দু’সপ্তাহের জন্য অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। তখন তার স্বাস্থ্য এবং কমিউনিস্ট পার্টির ভেতরকার ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।
চিন গ্যাংএর এ অনুপস্থিতি নিয়ে শুধু কূটনৈতিক মহলই নয়, চীনা জনগণ এবং দেশটির ওপর নজর রাখা বিশ্লেষকরাও কথা বলছিলেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিংকে সোমবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন - এ ব্যাপারে দেবার মত কোন তথ্য তার কাছে নেই।
চীনের অনেকটা অস্বচ্ছ কার্যপদ্ধতির কারণে হঠাৎ করে কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অদৃশ্য হয়ে গেলে সেটাকে কোন একটা সমস্যার চিহ্ন হিসেবেই দেখা হয়।
চীনের পদ্ধতি অনুযায়ী পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করে কমিউনিস্ট পার্টির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তা বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন।
চীনা মুখপাত্র মাও নিংএর জবাবের পরে এ নিয়ে জল্পনা আরেক দফা বেড়ে যায়, এবং সন্দেহ গভীরতর হয়। টুইটারের অনুরূপ চীনা প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবো-তেও অনেকে এ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন।
গত সপ্তাহে, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, চিন গ্যাং ‘স্বাস্থ্যগত কারণে’ ইন্দোনেশিয়ায় একটি কূটনৈতিক বৈঠকে যাবেন না। তার পরিবর্তে মি. ওয়াং ই ওই বৈঠকে যান। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের সাথে মি. কিনের একটি বৈঠকও দু সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয় - যার কোন কারণ দেখানো হয়নি। সোমবার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংএর সাথে সাবেক ফিলিপিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তের এক বৈঠকের সংবাদচিত্রেও মি. চিনকে দেখা যায়নি।
গত সাত দিনে চীনের সার্চ ইঞ্জিন বাইদু-তে মি. চিনের নামে অনলাইন সার্চের সংখ্যা ৫,০০০% বেড়ে যায়।
যে তত্ত্বটি এসময় সবচেয়ে বেশি ছড়ায় তা ছিল - মি. চিনের বিরুদ্ধে একটি বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।
সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিজ মাও-কে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
এ ছাড়া মি. চিনকে রাজনৈতিক কোন কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছে - এমন গুজবও ছড়িয়েছিল