শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | আলোচিত সংবাদ | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | লাইফস্টাইল | শিরোনাম | সাবলিড » এলিজাবেথকে যুক্তরাষ্ট্রে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল: এফবিআই
এলিজাবেথকে যুক্তরাষ্ট্রে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল: এফবিআই
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৮৩ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন তখন তার ওপর হত্যার হুমকি ছিল, এফবিআই প্রকাশিত সাম্প্রতিক কিছু নথিতে এমনটাই উঠে এসেছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই প্রয়াত রানির যুক্তরাষ্ট্র সফর ঘিরে বেশ কিছু গোপন নথিপত্র প্রকাশ করেছে।এসব নথিতে দেখা যায়, আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি-আইআরএ থেকে পাওয়া হুমকিতে অনেক উদ্বিগ্ন ছিল রাজপরিবারের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা এফবিআই।
এই গুপ্তহত্যার হুমকিটা আসে সানফ্রান্সিসকোর এক পুলিশ অফিসারের কাছে।নথি অনুযায়ী এই অফিসার যিনি নিয়মিত সান ফ্রান্সিসকোর একটি আইরিশ পাবে যেতেন, সেখানে পরিচিত হওয়া একজনের কাছ থেকে পাওয়া একটি ফোন কল সম্পর্কে তিনি গোয়েন্দাদের সতর্ক করে দেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঐ লোকটি তাকে বলেছে যে সে তার মেয়ে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চায়, যে ‘নর্দান আয়ারল্যান্ডে রাবার বুলেটে মারা গিয়েছে।’
এই হুমকিটা এসেছিল ১৯৮৩ সালে ৪ই ফেব্রুয়ারি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের ক্যালিফোর্নিয়া আসার প্রায় মাস খানেক আগে।
‘সে রানি এলিজাবেথের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে এবং সেটা হতে পারে যখন গোল্ডেন গেট ব্রিজের নিচ দিয়ে রানির রাজকীয় ইয়ট ব্রিটানিয়া যাবে সে সময় ওপর থেকে কিছু ফেলে, অথবা রানি যখন ইয়োসেমেতি ন্যাশনাল পার্ক পরিদর্শনে যাবে সে সময় তাকে হত্যার চেষ্টা করবে,’ নথিতে বলা হয়েছে।
এই হুমকির প্রেক্ষিতে সিক্রেট সার্ভিস ‘ইয়ট কাছাকাছি আসতেই গোল্ডেন গেট ব্রিজে হাঁটার রাস্তা বন্ধ করে দেয়।’ আর ইয়োসেমেতি পার্কে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল সেটা অবশ্য পরিষ্কার নয়, তবে রানি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কি না সে ব্যাপারে অবশ্য এফবিআই কিছু প্রকাশ করেনি।তথ্য অধিকার আইনে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু গণমাধ্যম আবেদন করলে ১০২ পৃষ্ঠার এই গোপন নথি এফবিআইয়ের তথ্য ওয়েবসাইট টু দ্য ভল্টে আপলোড করা হয়।
১৯৮৩ সালের এই সফরসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রয়াত রানির অনেকগুলো সফরের সময়েই নর্দান আয়ারল্যান্ড সংকট ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। ১৯৭৬ সালে রানি নিউইয়র্কে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বছর পূর্তি উৎসবে যোগ দিতে।
নথিতে উঠে এসেছে সে সময় কীভাবে এক পাইলটকে ব্যাটারি পার্কের ওপর দিয়ে এক ছোট বিমান উড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যে বিমানে ঝোলানো থাকবে ‘ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ত্যাগ কর’ এমন লেখা।
ফাইলে বলা হয়েছে সে সময় এটি রানির ওপর একটি সত্যিকারের হুমকি বিবেচনা করে সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায় ছিল এফবিআই।
রানি এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন ১৯৭৯ সালে রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি স্লিগোতে আইআরএ-র বোমা হামলায় মারা যান।
১৯৮৯ সালে কেন্টাকিতে রানির এক ব্যক্তিগত সফর সামনে রেখে এফবিআই সে সময় এক মেমো দিয়েছিল, যাতে বলা হয় “ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (আইআরএ) থেকে হুমকি এখনো আছে।”
বলা হয় ‘বোস্টন এবং নিউইয়র্ককে অনুরোধ করা যাচ্ছে আইআরএ অধ্যুষিত এলাকা এবং লুইসভিলের দিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বিরুদ্ধে যে কোনো হুমকি ঘিরে সতর্ক থাকতে।’
রানির নিজের রেসের ঘোড়া ছিল, তিনি তার জীবদ্দশায় কেন্টাকিতে কয়েকবার এসেছেন কেন্টাকি ডার্বিসহ এখানকার অশ্বারোহী প্রদর্শনী দেখতে।
কেন্টাকিতে ঘোড়দৌড় দেখতে আসতেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ
১৯৯১ সালের এক রাষ্ট্রীয় সফরে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ বুশের সঙ্গে বাল্টিমোর ওরিয়লসের বেজবল খেলা দেখার কথা ছিল রানির।
সে সময় এফবিআই গোয়েন্দাদের সতর্ক করে দেয় যে স্টেডিয়ামে ‘আইরিশ গ্রুপ’ প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেছে এবং ‘একটা আইরিশ গ্রুপ গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের একটা বড় অংশের টিকিট কিনে নিয়েছে।’
এফবিআই এনবিসি নিউজকে জানিয়েছে এ সপ্তাহে প্রকাশিত এই নথিগুলোর বাইরেও আরও কিছু তথ্য থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো কবে প্রকাশ হবে সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি তারা।