আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি রাজকুমার সিদ্ধার্থ বা গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব বা বোধি লাভ এবং মহাপরিনির্বাণের (মৃত্যু) ত্রিস্মৃতিবিজড়িত ও ঘটনাবহুল দিবস এটি। বৈশাখী পূর্ণিমার সঙ্গে বুদ্ধ জীবনের মহান তিনটি প্রধান ঘটনা জড়িত বলে এর বহুল পরিচিত নাম বুদ্ধপূর্ণিমা। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বুদ্ধপূর্ণিমা বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও পবিত্র দিন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করবেন। জাতিসংঘ আজকের দিবসটিকে ‘বেশাখ ডে’ হিসাবে পালন করে। আজ শুরু হবে ২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ।
বুদ্ধপূর্ণিমা বৌদ্ধদের ধর্মীয় জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। দিবসটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে একই সঙ্গে শোক ও গৌরবের। দিনব্যাপী প্রার্থনা, বুদ্ধ জীবনের নানা দিক আলোচনা প্রভৃতির মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দিনটি কাটাবেন। আজ সরকারি ছুটির দিন।
দিবসটি সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণী দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসব বাণীতে বৌদ্ধ জীবনদর্শনের নানা দিক তুলে ধরে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তা অনুকরণ ও অনুসরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক আজ ক্রোড়পত্র, বিশেষ নিবন্ধ-প্রবন্ধ প্রকাশ করছে। টেলিভিশন ও বেতারে বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হচ্ছে।
আজ থেকে প্রায় সাড়ে ২৬শ বছর আগে মহামানব যিশু খ্রিষ্টের জন্মেরও সোয়া ৬শ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন গৌতম বুদ্ধ। ৬২৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে এক পরম পবিত্রতম তিথিতে কপিলাবস্তুর নিকটবর্তী লুম্বিনী উদ্যানে তার জন্ম।
দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উপাসনালয় ‘প্যাগোডা’য় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিশেষ করে তিন পার্বত্য এলাকায় নানা কর্মসূচি পালিত হবে। ওইসব এলাকা আজ উৎসবমুখর থাকবে। এর বাইরে বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন ঢাকার মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে।
নানা আয়োজনে বান্দরবানে বুদ্ধপূর্ণিমা পালিত : বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবানে নানা আয়োজনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা উদ্যাপিত হয়েছে। বুধবার সকালে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও প্রয়াণ-ত্রিস্মৃতিবিজরিত দিনটি উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা বের করা হয়। বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ রাজা উচপ্রু চৌধুরীর নেতৃত্বে কষ্টিপাথরের বুদ্ধমূর্তিসহ একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বিহার প্রাঙ্গণের বোধিবৃক্ষতলে এসে সমবেত হয়। সেখানে পঞ্চশীল গ্রহণের পর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারী, দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসীকাবৃন্দ চন্দনের জল ও ফুল নিয়ে বোধি বৃক্ষমূলে চন্দন জল সিঞ্চনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হয়। পরে বিহারের সমবেত হয়ে পঞ্চমশীল গ্রহণ এবং হাজার প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। প্রার্থনায় রাজগুরু বৌদ্ধবিহার, কেন্দ্রীয় বৌদ্ধবিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নরী দায়ক-দায়ীকা অংশ নেয়