শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক: বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের মধ্যে লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি করেছে। আর এটাই তাদের স্বভাব।’
শনিবার বিকালে ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউসে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা একথা বলেন।
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর ময়মনসিংহ জনসভায় যোগদান করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বক্তব্য দেওয়ার আগে তিনি জনসভাস্থল থেকে বিভাগীয় নগরীর ১০৩টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকা মানে দুর্নীতি, লুটপাট। তখন বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। সেই কথা দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগ নাকি দেশের জন্য কিছুই করতে পারেনি। আজকে যে বাংলাদেশটা ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, এ ডিজিটাল বাংলাদেশের হওয়ার সুফলে এখন দূরে বসেও দেশের মানুষ কথা বলে, রাজনীতিও করে, সবই করে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সুফলের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি, বিদ্যুৎ দিয়েছি বলেই তো আজকে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। আর যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না করতাম, বিদ্যুৎ না বাড়াতাম, তাহলে এত কথা মাইকে আসতো কীভাবে। আমরা যে কিছুই করিনি, আমাদেরই করা জিনিস ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মিথ্যাচার লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি এটাই তাদের স্বভাব।’
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থ উন্নত করে আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তা পিছিয়ে দেয় এমন সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি জানি খালেদা জিয়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আমার জানামতে অংক এবং উর্দু পরীক্ষায় পাস করেছিলেন। কারণ, উর্দু পাকিস্তানি ভাষা আর অংক হচ্ছে হিসাব করা, যা বিএনপি ভালো করেই বোঝে। জিয়া এসএসসি পাস করে চাকরি নিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমরা লাখো শহীদের রক্তে পেয়েছি। এ স্বাধীনতা কোনো মতে ব্যর্থ হতে দেওয়া যায় না। দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের যারা তথাকথিত বিরোধী দল আছে, মিথ্যা বলে এ স্বাধীনতার সুফল ব্যর্থ করতে চায়। কিন্তু পারবে না। বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’
বাবা-মাকে হারিয়ে এদেশের মানুষের সেবা করতে এসেছি উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধূর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম ৮১ সালে নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে। আমি জানতাম না কোথায় আমি থাকবো, কীভাবে চলবো কোনো চিন্তা করিনি। শুধু একটা চিন্তা করেছি এদেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে হবে। এদেশের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি দিতে হবে। গৃহহীন মানুষকে ঘর দিতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষকে উন্নত জীবন দিতে হবে। স্বাধীনতার সুফল প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। সেই লক্ষ ও উদ্দেশ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের জনগোষ্ঠী ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণ করবে, স্মার্ট জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে ওঠবে। আমাদের অর্থনীতি হবে স্মার্ট, আমাদের কৃষি হবে স্মার্ট, আমাদের স্বাস্থ্য হবে স্মার্ট, তৃণমূল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের উন্নত জীবন হবে। প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ শহরের নাগরিক সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এ মর্যাদা আমাদের ধরে রাখতে হবে। এ মর্যাদা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের সভাপতিত্বে বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ব পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ স্থানীয় নেতারা।