বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » আনন্দ-বিনোদন | পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | লাইফস্টাইল | শিরোনাম | সাবলিড » নাকে তেল দিয়ে ঘুমান,মুসলিম ভাই-বোনদের কেউ তাড়াতে পারবে নাঃ মিঠুন
নাকে তেল দিয়ে ঘুমান,মুসলিম ভাই-বোনদের কেউ তাড়াতে পারবে নাঃ মিঠুন
বিবিসি২৪নিউজ,বিধান চন্দ্র মন্ডল, কলকাতা থেকেঃ নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। আপনাদের কাছে যদি আসল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকে তবে দেশ থেকে আপনাকে কেউ বের করতে পারবে না। ‘ মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি এই বার্তা দিয়েছেন অভিনেতা ও ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী।
‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ (সিএএ) বা ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জী’ (এনআরসি) নিয়ে ভারতের এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে দেশ ছাড়ার যে ভয়, আশঙ্কা রয়েছে সেই প্রেক্ষিতেই মিঠুনের এই বার্তা।
বুধবার দুপুরে রাজ্যটির দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বাসন্তীতে জনসভা থেকে মিঠুন বলেন, ‘আমার যে মুসলমান ভাই-বোনেরা আছে, তাদের কাছে যদি আসল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকে তবে নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। কেউ আপনাকে দেশ থেকে বের করতে পারবে না। আর তাই যদি হত, তবে আমার কাছেও তো আসল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে, তাহলে তো আমাকেও বের করে দেবে। বলবে এই লোকটাকে ছুঁচোর মত দেখতে, বের করে দে।
এতো সস্তা নয়। সব মিথ্যে কথা বলছে। মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে। মুসলমান ভাই-বোনদের ভয় পাইয়ে বিগত ৭৫ বছর ধরে এই জিনিস চলে আসছে।
আর এই জন্য মুসলিম ভাইবোনেদের কোনো প্রগতি নেই। এরা জানে যদি আপনি এদের দিয়ে দেন তবে তারা আর ভোট দেবে না। তাই আপনাকে সুযোগ-সুবিধা দেবে না। ‘
তৃণমূল ও কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে মিঠুন বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের ৭৫ বছরের মধ্যে ৬০ বছরই ওরা (কংগ্রেস) ক্ষমতায় ছিল কিন্তু কিছু করেনি। ‘
ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিমদের অবদানের কথা উল্লেখ করে এই বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন হয়ে গেল, সেখানে মুসলিমরা যদি ভোট না দিত, তবে কি বিজেপি এত বেশি আসন নিয়ে জিতে আসতে পারতো? পারত না।
কারণ মুসলিম ভাই-বোনেরা ভোট দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে কি এত ভোটে জিতে আসতে পারতো? পারতো না। ‘
মিঠুনের অভিমত, ‘…আসলে তারা (মুসলিমরা) বুঝতে পেরেছে এত বছর ধরে মিথ্যা কথা বলে আমাদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে। তাই বলছি মিথ্যেকে প্রশ্রয় দেবেন না, ভয় পাবেন না, চিন্তা করবেন না। কেবল একবার বিজেপিকে সুযোগ দিন। ‘
এদিনের সভা থেকে ‘বেঁচে থাকলে লোকসভা ভোটের আগে প্রত্যেককে পাকা বাড়ি করে দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতিও দেন মিঠুন চক্রবর্তী।
প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনা (পিএমএওয়াই) এর অধীন গরিব মানুষদের ঘর পাওয়া নিয়ে একের পর এক দুর্নীতির খবর সামনে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। ঘর পাওয়ার তালিকাতে নাম উঠছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রী, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, তাদের আত্মীয়-পরিজনের নাম- অন্তত এমনটাই অভিযোগ। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বিরোধিতার দিক থেকে কংগ্রেস, সিপিআইএম এর মতো অন্য দলগুলিও পিছিয়ে নেই। স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল।
এমন এক পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে নিশানা করে বাসন্তীর জনসভা থেকে আবাস যোজনা প্রকল্পে তৃণমূলের দুর্নীতির প্রতিবাদে সরব হয়ে মিঠুনের ঘোষণা, ‘যদি মরে না যাই… লোকসভা নির্বাচন অনেক দূরের কথা… পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতলে যাদের যাদের কাঁচা বাড়ি রয়েছে তাদের সকলকেই আমি বাড়ি করে দেব। প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার পয়সা দিয়েই এই বাড়ি করে দেখাবো। তার জন্য আপনাকে বিজেপি হতে হবে না। বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম বা কংগ্রেস যাই হোক না কেন ঘর আপনারা পাবেন। তৃণমূলের ক্ষেত্রে আপনাকে কাকার কাকা, শ্বশুরের শ্বশুর হতে হবে কিন্তু বিজেপিতে তা হবে না। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি। ‘
এদিনের সভা থেকে মিঠুনের গলায় সিনেমার ডায়লগও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘নাম আমার তুফান, বছরে এক আধ বার আসি। যখন আসি তখন প্রলয় ঘটে। আর যখন যাই তখন সবাই তার অস্তিত্ব খুঁজে বেড়ায়। ‘ মিঠুনের এই ডায়লগ শুনেই হাততালিতে ফেটে পড়ে জনসভা। তার অভিমত, ‘আসলে ডায়লগ বলেই তো আমি খাই। ‘
এর আগে দুপুরে কলকাতা থেকে মিঠুন চক্রবর্তী এসে পৌঁছান বাসন্তীর সোনাখালীতে। সেখানে ভারত সেবাশ্রম সঙ্গে পূজা দিয়ে হুড খোলা গাড়িতে রোড শো শুরু করেন। প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা রোড শো করার পর বাসন্তীর হোগল সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় জনসভা করেন মিঠুন। এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি বিধায়ক অগ্নীমিত্রা পল প্রমুখ।