সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপে জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ
নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপে জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ
বিবিসি২৪নিউজ,স্পোর্টস ডেস্কঃ টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক ইতিহাস ছিল প্রতিপক্ষ। তারওপর, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে ছিল জয়খরা। সঙ্গে বৃষ্টির চোখ রাঙানি তো ছিলই। এতগুলো প্রতিকুল পরিস্থিতিকে পাশ কাটিয়ে অবশেষে জয়ের দেখা মিললো বাংলাদেশের। নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে শুভ সূচনাই করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৩৫ রানে অলআউট হয়েছে নেদারল্যান্ডস। মূলত তাসকিন আহমেদের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের ওপর ভর করেই জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। ৪ উইকেট নেন তাসকিন।
১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর নেদারল্যান্ডসকে শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম দুই বলেই তুলে নেন জোড়া উইকেট। এরকিছুক্ষণ পর টানা দুটি রানআউটে আরও ব্যাকফুটে চলে যায় ডাচরা। ব্যাটিংয়ের সেই যে কোমর ভেঙেছিল, সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
তবুও চেষ্টা করেছিলেন কলিন অ্যাকারম্যান। তিনি একাই লড়াই করলেন বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে। ৪৮ বলে ৬২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন। তার সঙ্গে আর একজন ব্যাটার যদি ৪০-৪৫ রান করতে পারতো, তাহলে বাংলাদেশের জয় পাওয়া সম্ভব হতো না।
অ্যাকারম্যানের দৃঢ়তায় ১৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরও ১৩৫ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে নেদারল্যান্ডস। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ২ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। ১টি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান এবং সৌম্য সরকার। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে এসে অলআউট হয়ে যায় ডাচরা।
মোস্তাফিজুর রহমান কৃপণ বোলিং করেছেন। মাত্র ২০ রান দিলেও তিনি কোনো উইকেট নিতে পারেননি। তবে সবচেয়ে কৃপণ ছিলেন হাসান মাহমুদ। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন কেবল ১৫ রান। সাকিব ছিলেন সবচেয়ে খরুচে। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩২ রান।
জয়ের জন্য ১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ২ উইকেট হারালো নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশের হয়ে বোলিং ওপেন করেন তাসকিন আহমেদ এবং বল করতে এসে প্রথম বলেই উইকেট নিলেন তিনি। ফিরিয়ে দেন ডাচ ওপেনার ভিক্রমজিত সিংকে।
পরের বলেই তিনি ফিরিয়ে দিলেন বাস ডি লিডিকে। টানা দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে ডাচরা যেমন বিপদে পড়েছে, তেমনি হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছেন তাসকিন আহমেদ। যদিও শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিকটি আর হলো না তার।
তাসকিনের প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ দেন ভিক্রমজিত সিং। একেবারে নিচ দিয়ে যাওয়া বলটির নিচে হাত রেখে ক্যাচ তালুবন্দী করেন ইয়াসির আলী রাব্বি। টিভি রিপ্লে দেখে এরপর ক্যাচে আউটের সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে আম্পায়ারকে। পরের বলটি ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গিয়ে জমা পড়ে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।
তাসকিনের দুর্দান্ত প্রথম ওভারের পর এবার বাংলাদেশ দলের ফিল্ডারদের দুরন্ত ফিল্ডিংয়ের মুখোমুখি হয় নেদারল্যান্ডস। পরপর দুই ব্যাটারকে রানআউট করে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দিলো ফিল্ডাররা।
চতুর্থ ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান। ওভারের দ্বিতীয় বলে ১ রান নেন ম্যাক্স ও’দাউদ। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ক্রিজের অর্ধেক গিয়ে ফিরে আসতে গেলে আফিফের থ্রো আর সাকিবের ক্ষিপ্র গতির ফিল্ডিংয়ে রানআউট হয়ে যান তিনি।
এক বল বিরতি দিয়ে আবারও রানআউট। এবার রানআউট হলেন টম কুপার। বলটি বাউন্ডারি হয়ে যেতো। এক ফিল্ডারের গায়ে বল লাগার কারণে গতি পরিবর্তন হয়ে যান। নাজমুল হোসেন শান্ত দৌড়ে গিয়ে বাউন্ডারি বাঁচান এবং এরপর থ্রো করেন উইকেটরক্ষন সোহানের কাছে। তৃতীয় রান নিতে যাওয়া টম কুপার ততক্ষণে ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি। টিভি রিপ্লে দেখে রানআউট দিলেন আম্পায়ার।
এরপরই একটা ভালো জুটি গড়ার চেষ্টা করে নেদারল্যান্ডস। ৪৪ রান তুলে ফেলেন স্কট এডওয়ার্ডস এবং কলিন অ্যকারম্যান। এই জুটিকে ভেঙে দেন সাকিব আল হাসান। ১২তম ওভারের তৃতীয় বলে পঞ্চম উইকেট পড়ে নেদারল্যান্ডসের। সাকিবের বলে স্কট এডওয়ার্ডস থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন হাসান মাহমুদের হাতে। এডওয়ার্ডস ২৪ বলে ১৬ রান করে যান।
এরপর ১৩তম ওভারের ৪র্থ বলে টিম প্রিঙ্গলকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। ৬ বলে ১ রান করে আউট হন তিন। ওই ওভারেরই দ্বিতীয় বলে প্রিঙ্গলের ক্যাচ মিস করেন নাজমুল।
এর মধ্যে আরও একবার বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হযে যায়। ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয়। খেলা শুরু হতে না হতেই হাসান মাহমুদের বলে আউট হয়ে যান লোগান ফন বিক। ১৯ বছর বয়সী শারিজ আহমেদ ৮ বলে ৯ রান করে আউট হন। এর মধ্যে অ্যাকারম্যান হাফ সেঞ্চুরি করে মারমুখি হয়ে ওঠেন। তাকে ফেরানোর মূল কাজটি করলেন তাসকিন আহমেদ।
শেষ মুহূর্তে ১৪ বলে ২৪ রান করে পল ফন মিকেরেন পরাজয়ের ব্যবধান কমান শুধু।
এর আগে হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় নেদারল্যান্ডস। ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। সর্বোচ্চ ৩৮ রান করে আফিফ হোসেন ধ্রুব। শেষ দিকে ১২ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।