বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » আমেরিকা | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে যা বললেন -ফেডারেল প্রসিকিউটররা
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে যা বললেন -ফেডারেল প্রসিকিউটররা
বিবিসি২৪নিউজ, মো.সুমন মিয়া :যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী চার মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনেকটা নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবেন এবং বিদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি আপস্টেট রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগের বিনিময়ে গ্রিনকার্ড ও রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার আশা দেন। ওই তহবিল সংগ্রহ করে। ফেডারেল প্রসিকিউটররা এমনই অভিযোগ করেছেন।
শেরি লি এবং লিয়ানবো মাইক ওয়াং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারে ৬ লাখ ডলারের বেশি দান করেন। এ ব্যাপারে গত ১৮ জুলাই ব্রুকলিন ফেডারেল আদালতে তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
২০১৭ সালের একটি তহবিল সংগ্রহে শেরি লি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সাথে ছবি তোলেন। লি এবং ওয়াংয়ের বিরুদ্ধে ২৭ মিলিয়ন ডলার রিয়েল এস্টেট জালিয়াতি এবং বিদেশিদের মার্কিন রাজনীতিতে অবদানের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অমান্য ও রাজনীতিবিদদের কাছে অ্যাক্সেস পেতে সাহায্য করার জন্য অন্যের টাকা নিজেদের নামে ডোনার হিসেবে চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
ফৌজদারি অভিযোগ অনুযায়ী, লি (৫০) এবং ওয়াং (৪৫) ২০১৭ সালের ২৮ জুন ট্রাম্পের ডিসি হোটেলে তহবিল সংগ্রহের জন্য চীন ও সিঙ্গাপুরের এক ডজন লোকের অনুদান পেতে ট্রাম্প ভিক্টরি ফান্ডে ৬ লাখ ডলার দান করেন।
এই অর্থ বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে এসেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যা মার্কিন রাজনীতিবিদদের বিদেশি অনুদান রোধকারী ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন।
লি এবং ওয়াং তাদের অনুদানের বিনিময়ে ট্রাম্পের সাথে তহবিল সংগ্রহের মুখোমুখি সময় ছাড়া আর কিছু পেয়েছেন কিনা- ফৌজদারি অভিযোগে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
প্রসিকিউটরদের অভিযোগ, লি এবং ওয়াং সেই উপস্থিতি ব্যবহার করে আপস্টেট নিউইয়র্কে একটি শিক্ষা কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় লোকাল পারমিট না থাকায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
ব্রুকলিন ইউএস অ্যাটর্নি ব্রেয়ন পিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিনিয়োগকারী এবং স্ট্র ডোনারদের (নিজের অর্থ অন্যের নামে দেওয়া) কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার এসেছে। তারা আশা করেছিল তাদের অর্থ ফল দেবে। যাই হোক, শুধুমাত্র একটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে, রাজনৈতিক ক্ষমতার অ্যাক্সেসে। বিদেশি অর্থ আমাদের অভিবাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দূষিত করে এবং এগুলো রোধের জন্য আমাদের যথাসাধ্য কাজ করতে হবে।’অভিযোগ অনুসারে ওয়াং ব্যাখ্যা করেন, ‘চীনের ব্যবসায়ীদের অনুদান দেওয়া বেআইনি। কিন্তু এই ব্যবসায়ীরা আমাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং আমাদের শেয়ারহোল্ডার হতে পারেন। তারপরে আমরা তাদের প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস ও পার্টির অন্যান্য নেতার সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করতে পারি। দান অবশ্যই প্রয়োজনীয়। আমাদের কোম্পানি এটা করতে পারে এবং এটা আইনী।’প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, অয়েস্টার বে-তে বসবাসকারী এই জুটি তাদের কোম্পানি থম্পসন এডুকেশন সেন্টারে প্রায় ১৫০ জন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ২৭ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছেন।
এর মধ্যে ১৬.৫ মিলিয়ন ডলার এসেছে যারা ইবি-৫ ভিসা প্রোগ্রামের সুবিধা নেওয়ার প্রত্যাশী। এই ভিসা উচ্চ-বেকারত্ব বা গ্রামীণ এলাকায় নতুন ব্যবসায় কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগকারী বিদেশিদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদার সম্ভাবনা প্রদান করে।
ফেডের অভিযোগ, লি এবং ওয়াংয়ের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েও তাদের কেউ গ্রিনকার্ড পায়নি।
অন্য ১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এসেছে। তাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, শিক্ষা কেন্দ্র একটি প্রাথমিক পাবলিক অফার ঘোষণা করলে তারা বড় সুযোগ পাবেন। কিন্তু এটা কখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
আদালতের নথি অনুযায়ী, লি এবং ওয়াং প্রাথমিকভাবে ২০১১ সালে আপস্টেট নিউইয়র্কের সুলিভান কাউন্টিতে একটি বিস্তৃত চীনা সাংস্কৃতিক থিম পার্কের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এটিকে লি একটি ‘চাইনিজ ডিজনিল্যান্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এখানে একটি বিনোদন পার্ক, একটি কলেজ ও কিছু বাড়ি থাকবে এবং বছরে আনুমানিক ১.৫ মিলিয়ন দর্শকের সমাগম হবে।
পরিকল্পনাটি আপস্টেট বাসিন্দা এবং কর্মকর্তাদের প্রতিরোধের মুখে ভেস্তে যায়। এর পরিবর্তে তারা নিউইয়র্কের থম্পসন-এ থম্পসন এডুকেশন সেন্টার নির্মাণ করবে বলে ঘোষণা দেন। তারা একটি ‘মাল্টি-ফেজ’ প্রকল্পের প্রস্তাব করেন, যা ১৫০ মিলিয়ন ডলারের কমপ্লেক্স দিয়ে শুরু করে। এর মধ্যে কলেজ শ্রেণিকক্ষ ভবন, একটি ক্রীড়া সুবিধা, ছাত্র কার্যকলাপ কেন্দ্র এবং আধা ডজন ডর্ম বিল্ডিং অন্তর্ভুক্ত ছিল।