বুধবার, ১৫ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পের কারণে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পের কারণে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ বৈদেশিক আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত নয়, বরং ত্বরান্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন মোতাবেক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন থাকায় প্রকল্প সংক্রান্ত আমদানি ব্যয়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্যে কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।’
বুধবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
সরকার প্রধান জানান, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকালে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প কেন্দ্রিক অনেক ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ শিল্প/ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। ফলে পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা মূলত ব্যাহত হওয়ার পরিবর্তে ত্বরান্বিত হচ্ছে।
মেগা প্রকল্প অনুমোদনের আগে যথাযথভাবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, ‘এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের বিরূপ প্রভাবের সম্ভাবনা নেই, যে কারণে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।’
অধিকাংশ বৈদেশিক ঋণের প্রকৃতি নমনীয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঋণের সুদের হার তুলনামূলক অনেক কম এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ও গ্রেস পিরিয়ডও অনেক। ঋণের অর্থ অবমুক্তির ক্ষেত্রে বড় কোনও জটিলতা পরিলক্ষিত হয়নি।’ জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত পদ্মা সেতুসহ চলমান ১৬টি মেগা প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এরমধ্যে তিনি ১৪টি প্রকল্পের ব্যয়ের তথ্যও উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যমতে, এসব প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন প্রায় এক লাখ ৫৪ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।
নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুত ও মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অবনতি ঘটে, ফলে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হলো, দেশের অভ্যন্তরে কিছু অসাধু ব্যক্তি এই সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুত ও মূল্য বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, সেই অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অবৈধ মজুত, বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রীকে উপদেষ্টা করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সভাপতি করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থা/গোয়েন্দা প্রতিনিধি এবং এফবিসিসিআই-সহ ১৭ সদস্যের এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ মজুত ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পদক্ষেপের পর কেউ অবৈধভাবে কোনও পণ্য মজুত করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি এসেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।
কোভিড পূর্ববর্তী তিনটি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের গড় রেমিট্যান্স প্রবাহের তুলনা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স হ্রাস পেয়েছে না বলে বলা যেতে পারে—রেমিট্যান্স প্রবাহ কোভিড পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে।’
জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘২০০৮ সাল হতে এ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে মোট ৭৬৯ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চুক্তি সই হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তনের কারণে অস্বাভাবিক হারে বজ্রপাতের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’