বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জে পারাপারের জন্য সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ১৫টি গ্রামের পাচঁ হাজার মানুষ। নদী পার হওয়ার জন্য চরাঞ্চলের পাচঁ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা একটি রশিটানা নৌকা।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যেই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে ভোগান্তি কমবে চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে গেছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী। এই নদীটি মেরুরচর ইউনিয়নকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। এই নদীর উপর ভাটি কলকিহারা থেকে ফকিরপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিটার লম্বা রশি টেনে নৌকায় পারাপার হতে হয় পথচারীদেরকে।
এই নৌকা দিয়েই ভাটি কলকিহারা, দুর্গাপুর ,মাইছানির চর, ফকিরপাড়া, গোয়ালেরচর-সহ ইসলামপুর উপজেলা ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন।
এই নদীর কারণে ভাটি কলকিহারা, মাইছানির চর, ফকিরপাড়া গ্রাম-সহ পনেরটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ সুবিধা না থাকায় নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হয়। এ কারণে ওই চরাঞ্চলের কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করেও লাভের মুখ দেখতে পারেন না।
একজন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে যেতে হলেও অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। ভাটি কলকিহারা বা মাইছানির চর গ্রামের কোনো মানুষ কাজের জন্য উপজেলা শহরে যেতে হলে তাকে কমপক্ষে দুই ঘন্টা সময় বেশি নিয়ে যেতে হয়।
সেতু নির্মাণ না হওয়ায় নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী-সহ সবাই রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারণা এই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলে জনজীবনে যেমন দুর্ভোগ কমবে তেমনি অর্থনীতির গতিপথও দ্রুত বদলে যাবে।
অবহেলিত ভাটি কলকিহারা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ জানান, এই নদীর কারণে আমরা এই এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে পড়েছি। অবহেলিত চরাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া না থাকায় এই এলাকার মানুষ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এই এলাকার মানুষ নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে থাকায় এই এলাকার জীবনমান এখনো নিম্নমুখী রয়ে গেছে।
মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক জনান, একটি সেতুর অভাবে স্থানীয় মানুষ নানামুখী সমস্যায় রয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি।
বকশীগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো.শামছুল হক জানান, এই নদীর ওপর ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা আন্তরিকতাকতার সহিত কাজ করছি